[caption id="attachment_101830" align="alignleft" width="399"] মাসুদা আকতার[/caption]
প্রেমে ব্যর্থ হয়ে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের ছোড়া অ্যাসিডে সারা জীবনের জন্য দুই চোখ হারানো রংপুর সমাজকল্যাণ বিদ্যাবীধি স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী মাসুদা আকতার এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৩.৬৯ পেয়ে পাস করেছে। মাসুদা নগরীর বাবু খাঁ এলাকার মৃত মাহবুবার রহমানের কন্যা ।
মাসুদার মা সুলেখা পারভীন জানান, স্কুলে যাওয়া-আসার পথে তার মেয়েকে এলাকার কয়েকজন বখাটে যুবক প্রেম নিবেদন করত। এতে মেয়েটি রাজি না হওয়ায় তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি তাদের পরিবারের লোকজনকে জানানো হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে রাতে মাসুদা আকতারকে অ্যাসিড মারে। এতে মাসুদার মুখমণ্ডল ও শরীর পুড়ে যায়। অনেক চিকিৎসার পরও তার চোখ দুটি বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা। এত কিছুর পরও দমে থাকেনি মাসুদা। লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে সে।
[caption id="attachment_101831" align="alignright" width="430"]
ছাবিলা আক্তার নিশাত[/caption]
ইচ্ছাশক্তি ও মা-বাবা এবং শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় রংপুর শহরের মাহিগঞ্জ খোর্দ্দ রংপুর গ্রামের ছাবিলা আক্তার নিশাত পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। জন্মগতভাবে নিশাতের দুটি হাত ও দুটি পা বাঁকা ছিল । ফলে কোনো শক্তি পেত না। কিন্তু এরপরও লেখাপড়া থেমে নেই। প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায়ও ভালো ফল করেছে। এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-২.৮৩ পেয়েছে। সে খোর্দ্দ রংপুর গ্রামের শাহজাহান মিয়া ও রোকসানা বেগমের একমাত্র মেয়ে।
বাবা শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই নিশাতের হাত ও পা বিকলাঙ্গ। অনেক কষ্ট করে অন্যের সাহায্যে হাঁটাচলা করে। অন্যের সাহায্য নিয়ে খাওয়াদাওয়া করে। অনেক চিকিৎসা করানোর পরও কোনো কাজ হয়নি। মেয়ে প্রতিবন্ধী হওয়ার পরও লেখাপড়ার প্রতি তার বেশ আগ্রহ। তার আগ্রহ দেখেই আমরা বিদ্যালয়ে পাঠাই মেয়েটিকে। নিশাতের মা রোকসানা বেগম মেয়েটিতে স্কুলে আনা-নেওয়া করেন। এভাবে নিশাত প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভালো করেছে। এরপর মেয়েটিকে মাহিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে ভর্তি করাই। সে এ বিদ্যালয় থেকেই এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ওই ফলাফল করেছে।’
ছাবিলা আক্তার নিশাত বলেন, ‘আমি হাত দিয়ে লিখতে পারি না। এ বিষয় নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের কথা বলে। মাঝে মাঝে খারাপ লাগে। তবু মুখ বন্ধ করে তাদের কথা সহ্য করতে হয়। আমি তাদের বলি- পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফল করব। এরপর কলেজে ভর্তি হব। আমি লেখাপড়া শেষ করে আর দশটা মানুষের মতো চাকরি করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই।’
[caption id="attachment_101832" align="alignleft" width="487"]
আয়শা সিদ্দিকা[/caption]
তাজহাট উচ্চবিদ্যালয়ের শারীরিক প্রতিবন্ধী আয়শা সিদ্দিকাও এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মোটামুটি ভালো ফলাফল করেছে। সে পেয়েছে জিপিএ-৩.৬১। তার বাবা নাম আবদুল আউয়াল ও মা পারভীন বেগম। তাজহাট এলাকায় তাদের বাড়ি। বাবা ঢাকায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। আয়শা লেখাপড়া শিখে পরিবারের অভাব দূর করবেন বলে জানায়।