আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে তামাশা

মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০১৬, সকাল ০৯:০৬

তুষার আবদুল্লাহ

তারা মনে করছেন, সংবাদ সম্মেলন ডেকে আপনি এবার যারা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেবেন, সেই শিক্ষার্থীদের কাছে, তাদের অভিভাবকদের কাছে ক্ষমা চাইবেন। কারণ আপনি তাদের সঙ্গে প্রতারণা করলেন। মাত্র ছয়দিন আগে গণমাধ্যমের কাছে আপনি বলেছেন- এবার অর্থাৎ ২০১৬ সাল থেকেই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হচ্ছে না। প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার আর যৌক্তিকতা থাকছে না বলেই তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনেই আপনি প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলেছিলেন- যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই তো কথা বলি। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা তুলে দিয়ে অষ্টম শ্রেণিতে কোন নামে সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপনি নিশ্চিয়তা দিয়ে বলেছিলেন পদ্ধতিগতভাবে শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। বিষয়টি যখন মন্ত্রিসভায় উঠলো আজ, তখন কি আপনি মৌনব্রত পালন করলেন? মন্ত্রিসভা তো আপনার সামনে দিয়েই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের প্রস্তাবটি ফেরত পাঠালো। তখন আপনি কেন মন্ত্রিসভাকে জানালেন না- ঘটা করে আপনার ব্যক্তিগত অভিমত দেশবাসীকে জানানোর কথা।

জাতীয় পর্যায়ের একটি পরীক্ষা, যেখানে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া লাখ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেবে, সেই পরীক্ষা হবে কী হবে না তা নিয়ে একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে কি ব্যক্তিগত অভিমত জানাতে পারেন?

পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা শুরু থেকেই যৌক্তিকতার মাপকাঠিতে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। শিক্ষা নিয়ে প্রকৃত অর্থেই যারা ভাবেন তাদের দিক থেকে এবং অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এই দুই সমাপনী পরীক্ষাকে শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ বলে মনে করছেন। এই দুটি পরীক্ষা কোচিং বাণিজ্যকে আরও জমজমাট করেছে এবং দেশের শিক্ষার্থীদের পরিণত করেছে পরীক্ষার্থীতে।

প্রাথমিক ও জুনিয়র সমাপনী পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে স্কুলে ও কোচিং সেন্টারে নানা প্রকারের মডেল টেস্টে বুঁদ হয়ে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ফলে যখন আপনি পরীক্ষা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন শিক্ষার্থী, অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষামনস্ক সবাই স্বস্তি পেয়েছিলেন। ভাবনা শুরু হয়ে গিয়েছিল- আমাদের পরীক্ষার্থীরা বুঝি শিক্ষার্থী পরিচয় ফিরে পেতে যাচ্ছে। কিন্তু না। মন্ত্রিসভা শেষে জানা গেলো শিক্ষার স্তর পরিবর্তনের এই বিশাল কর্মযজ্ঞ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তীতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে অবকাঠামো, শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণসহ অনেক ধরনের কর্মকাণ্ড জড়িত। তাই পুরো বিষয়টি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আগের মতোই পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা অব্যাহত থাকবে। আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে এ যাবৎ কমিশন–কমিটি কম হয়নি।

তার ফলাফল হিসেবে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা পেয়েছেন শুধু পরীক্ষা নেওয়ার নানা রকম পদ্ধতিগত পরিবর্তন। এই পরিবর্তনগুলো নির্মম পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে, হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। রাজা আসে রাজা যায় পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে নিরীক্ষার শেষ হয় না। যার নেতিবাচক ফলাফল হিসেবে শিক্ষার মান যে এখন নিম্নমুখী মাননীয় গণশিক্ষামন্ত্রী একথা কিন্তু পরোক্ষভাবে আপনার সহকর্মী মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন- সংখ্যার পর মানের দিকে নজর দিতে হবে। অপার সহকর্মী মাননীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী তো বলেছেনই – এখন কেউ শিক্ষার্থী নেই। সবাই পরীক্ষার্থী।

অতএব আপনার কাছে বিনীত আবেদন, এবার সংবাদ সম্মেলন করে অন্তত অভিভাবক হিসেবে হলেও স্বীকার করুন আপনার, আপনাদের, আমাদের ভুলগুলো। আসুন শিক্ষার্থীদের বলি- তাদের নিয়ে আর পরীক্ষা নয়। এবার সত্যিই মানসম্মত ও প্রকৃত সৃজনশীল শিক্ষার জন্য কাজ করার সত্য প্রতিশ্রুতি দিন। শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে তামাশা ও চমকের রাজনীতি থেকে সরে আসার শপথ নিই।

লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি

মন্তব্য করুন


 

Link copied