মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে রাজশাহীর অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক জুলফিকার উল্লাহ এ আদেশ দেন।
মামলার প্রধান আসামি তাসফিয়ার স্বামী শামিউল হক সোয়াদ ওরফে সোহাগ (২৬) মামলা দায়েরের পর থেকেই কারাগারে আছেন। তবে তাসফিয়ার শ^শুর ফজলুল হক (৫৬), শাশুড়ি জাহানারা বেগম সুজি (৫০) এবং ভাসুর ফয়সাল (৩০) ও সজীব (২৮) মামলা দায়েরের পর আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে আসামিরা আদালতে হাজিরা দিতে গেলে বাদীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মুন্না সাহা তাদের জামিন বাতিলের আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবি মোজাম্মেল হক এর বিরোধীতা করলেও আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান জানান, নগরীর ভাটাপাড়া এলাকার আবদুস সালামের মেয়ে রিফাহ তাসফিয়া (২২) দুই বছর আগে সোহাগকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের একটি মেয়ে সন্তানও হয়। গত ১১ জুলাই ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে লাঠি, লোহার রড ও পাইপ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে তাসফিয়াকে গুরুতর আহত করে তার স্বামীসহ শ^শুরবাড়ির লোকজন।
এতে তাসফিয়ার দুই হাত ও এক পা ভেঙ্গে যায়। ফেটে যায় বুকের ও পাঁজরের দুটি হাড়। আর হাসপাতালে নেওয়া হলে মাথায় সেলায় লাগে ১৬টি। এ ঘটনায় তাসফিয়ার মা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে রাজপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। তবে অন্য আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন।
গত ১১ জুলাই নির্যাতনের শিকার হয়ে ওই দিন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত তাসফিয়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আদালতের তলবে ২৪ জুলাই তাকে হাসপাতাল থেকে এ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত-১ এ স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনের জবানবন্দী দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারামতে আদালতের বিচারক মোকসেদা আসগার প্রায় দুই ঘন্টা ধরে তার খাস কামরায় গৃহবধূ তাসফিয়ার জবানবন্দী গ্রহণ করেন।