উপজেলার কর্তিমারী বাজার পাড়া গ্রামের তারা মিয়ার কন্যা তাহমিনা আক্তার। তাদের জমাজমি তো নেই-ই বসত ভিটাও নেই। তাদের আত্মীয়র জমিতে ঘর তুলে বসবাস করছে। তারা মিয়া পেশায় একজন শ্যালো মেশিনের মিস্ত্রি। কিন্তু এখন আর আগের মতো কাজ পাওয়া যায় না।
তাহমিনার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার বাবামা’র সঙ্গে। তার মা নারগিস বেগম বলেন, ‘খুব কষ্ট কইরা মেয়ে লেখাপড়া করাইতেছি। প্রায় সময়ই ঘরে খাবার থাকেনি। মেয়ে না খেয়েই কলেজে গেছে। ভালো একটা পড়ার টেবিল নাই। ভাঙ্গা টেবিলে বইসা পড়ে কিন্তু লেখার সময় সমস্যা হয়। ওর বাপের এখন কামাই রোজগার নাই বললেই চলে। কিন্তুক মেয়ে কয় আমি আরো লেখাপড়া করব।’
বাবা তারা মিয়া বলেন, ‘মেলা বিয়ার সমন্ধ আইসে। মেয়ে তো বিয়েতে রাজি হয় না। আমি তো খরচ দিবারই পারি না। মেয়েক নিয়া এখন বিপদে পড়েছি। এযাবত তাও কোনোরকমে চলছে কিন্তু এখন শহরের ভালো কলেজে ভর্তি হতে অনেক টাকার প্রয়োজন হবে। অত টাকা দিবার সামর্থ নেই আমার। তারপরও আত্মীয় স্বজনদের কাছে চাইছি। মেয়ের চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না।’
তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘আমার বাবা মা খুবই গরীব। এ ভাগ্যকে মেনে নিয়েই আমি অনেক কষ্ট করে রাত জেগে লেখাপড়া করেছি। কলেজে যাওয়ার সময় খাবার না থাকায় উপোস থাকতে হয়েছে। রাতে কোরোসিন তেল না থাকায় যখন লেখাপড়া করতে পারিনি তখন শুধু কাঁদছি। আমার লেখাপড়া করার খুব ইচ্ছা। জানি না আমার ভাগ্যে লেখাপড়া আছে কিনা। আপনারা তো জানেন আমার বাবা মা’র কিছুই নেই। মামার জায়গায় বাড়ি করে আছি আমরা।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার খুব ইচ্ছা আমার। কিন্তুক ভর্তি হওয়ার খরচই তো নাই। তারপর চেষ্টা থাকবে আমার। সমস্যা হলো আমার বাবা মাকে নিয়ে তারা কখন যে আমার বিয়া ঠিক করে ফেলে। একদিকে টাকার অভাব অন্যদিকে বিয়া নিয়ে আমি এখন বিপদের মধ্যে পড়েছি।’
যাদুরচর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলম জানান, শারমিন আক্তার মেধাবি। তার পারিবারিক দুরাবস্থার জন্য আমরাও কলেজ থেকে সুযোগ সুবিধা দিয়েছি। তাকে একটু নার্সিং করলে ভবিষ্যতে খুবই ভালো করবে।