আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে ছেলের বাঁধা ॥ পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন সম্পন্ন       নীলফামারীতে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবরে নববধূ দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা ॥ স্বামী গ্রেপ্তার       রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা      

 width=
 

রওশন এরশাদের স্থান কেমন হবে ইতিহাসে ?

শনিবার, ২৭ আগস্ট ২০১৬, দুপুর ০৩:৪০

নাদীম কাদির

জেনারেল এরশাদ আমার বাবার সহকর্মী হওয়ায় ছেলেবেলা থেকেই আমি তাকে চিনতাম। যদিও বাবার চাইতে কয়েক বছরের জুনিয়র ছিলেন তিনি। কিন্তু পাকিস্তান আর্মিতে ঐ দম্পতি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল।

আমার মার সঙ্গে যখন তার বাড়ি যেতাম, বেগম রওশন এরশাদকে বরাবরই দেখতাম আন্তরিক এবং সুন্দর ব্যবহার করতে। যেখানে অনেকেই ক্ষমতার স্বাদ পেলে বদলে যান। সে সময় সেনাকুঞ্জে তার বাসভবনটিও খুব চমৎকারভাবে সাজানো দেখেছি।

আজ লেখাটি লিখছি, যখন বেগম রওশন এরশাদ যাকে আমি আড়ালে চাচি বলে সম্বোধন করি, তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। যেখানে তার স্বামী রাজনীতিতে সিদ্ধান্তহীনতা এবং পক্ষ পরিবর্তনের মতো কাজ করেছেন সেখানে তিনি নিজেকে আরো স্থিতিশীল আর পরিপক্ক হিসেবে প্রমাণ করছেন। তার কথা আর কাজ অবশ্যই হাসির পাত্র হচ্ছে না।

যখন তার দলকে সমালোচকেরা যাত্রা বা সার্কাস পার্টি হিসেবে সম্বোধন করতো, তখন রওশন তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির জন্য কিছুটা হলেও সম্মান বয়ে এনেছেন।

বিক্ষোভ আর সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতা থেকে নামাতে ২০১৪ সালের দিকে জাতীয় নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি জামাত জোট। ফলে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। সাংবাদিক হিসেবে আমরা জানি সংবিধানকে অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থেই তখন নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা চলছিল।

এসময় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বেগম রওশন এরশাদ তার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দেন। এই সিদ্ধান্তের কথা তিনি সেসময় দেন, যখন দেশব্যাপী সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল, রাজনৈতিক দিক থেকে দেখা দিয়েছিল অনিশ্চয়তা। অনেকেই বলছিল, আবারো হয়তো সামরিক শাসন কায়েম হতে যাচ্ছে। যার মানে হচ্ছে, গণতন্ত্র আবারো পড়ছিল হুমকির মুখে।

যে মানুষটা ৯ বছর শক্ত হাতে দেশ চালিয়েছেন সেই জেনারেল এরশাদ এমন পরিস্থিতিতে অপরিপক্ক বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করে ফেলেছিলেন। একবার তিনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে থাকার কথা বলছিলেন, পরক্ষণেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষ নিচ্ছিলেন।

তবে শেষ পর্যন্ত বেগম রওশন এরশাদই গণমাধ্যমকে স্পষ্ট করে জানান, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় অবশ্যই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে। অর্থাৎ তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মেনে নিলেন এবং গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা আরো সুদৃঢ় করতে তিনি ইসলাম ভিত্তিক দলগুলো যারা বাংলাদেশের জন্মের বিরোধীতা করেছিল তাদের বিপরীত অবস্থান নিলেন।

আমি দারুণ উৎসাহ পাই, যখন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পক্ষ থেকে আমাকে বেগম রওশন এরশাদের প্রতিবেদক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। আমি তার সঙ্গে বাংলাদেশের নানাপ্রান্তে ভ্রমন করেছি। কখনো কখনো মানবিক কাজে প্রত্যন্ত এলাকাতে হেলিকপ্টারেও গিয়েছি।

একদিন প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি জনাব তোয়াব খান টেলিফোনে আমাকে কোনো লেখায় বেগম রওশন এরশাদকে ফার্স্ট লেডি হিসেবে সম্বোধনের নির্দেশ দেন। কিন্তু তখন তা করতে গেলে আমাকে নিউজ ডেস্কের অনেকের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।

আমার মনে আছে, সেদিন ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি জনাব মাহবুবুর রহমান বলেছিলেন, খবরটি বাণিজ্যিকভাবে চালাতে চাইলে নিয়ম মানার প্রয়োজন নেই। তবে নিবন্ধ হিসেবে তা করা যেতেই পারে। ডেস্কের এমন দ্বৈত সিদ্ধান্ত থেকে আমাকে রক্ষা করেন প্রধান বার্তা সম্পাদক জনাব হাসানুজ্জামান খান। আমার লেখার প্রশংসাও করেন। প্রকাশিত হওয়ার পর জনাব তোয়াব খান পরে আমাকে ফোন করেন এবং আমার পক্ষ থেকে তার কথা মতো সংবাদটি লেখার কারণ জানতে চান।

পরদিন দৈনিক সংবাদে লেখাটি ছাপা হলে সব রকমের সমালোচনা থেমে যায়। বেগম রওশন এরশাদও দারুণ খুশি হন।

শিশুদের প্রতি তার ভালোবাসা অনেক। অনেক আগে একটি বইতে বিষয়টি লিখেছিলাম। আজ আবারো লিখছি, কোনো অনাথ শিশু তার কোলে হিসু দিলেও তিনি বিন্দুমাত্র বিরক্ত হন না। তিনি শুধু বলবেন, শিশুরা তো এমনটাই করবে।

তার সাম্প্রতিক লন্ডন সফরে তিনি আমাকে সেসময় রাজনৈতিক সংকটময় মুহুর্তে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান। বেগম এরশাদ বলেন, তুমি তো জান, সেসময় আমার বড় ধরনের জীবনের ঝুঁকিও ছিল। কিন্তু আমি জানতাম, আমার সিদ্ধান্ত দেশকে সংঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংসদে রয়েছে জাতীয় পার্টি। রওশন এরশাদের নেতৃত্বের জাতীয় পার্টি বঙ্গবন্ধু এবং জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যারা দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার পাশে থাকবে।

নাদীম কাদির : সাংবাদিকতায় জাতিসংঘের ড্যাগ হ্যামারসোল্ড স্কলার এবং লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার। nadeemqaadir1960@gmail.com

মন্তব্য করুন


 

Link copied