বিশেষ প্রতিনিধি ৩০ আগস্ট ॥ঢাকার উইলস লিটল ফাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার (১৫) হত্যাকারী বৈশাখী টেইলার্স কাটিং মাস্টার ওবায়দুল খানকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে নীলফামারীর ডোমারে। খুনি ওবায়দুর ডোমারে অবস্থান করছে গোপন সংবাদে ডোমার থানার ওসি আহমেদ রাজিউর রহমানের নেতৃত্বে ঢাকার রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন সহ একদল পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে জানা যায় খুনি ডোমারে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তার বাসায় এসে আশ্রয় নিয়েছিল। মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে পুলিশের অভিযানের আগেই খুনি সেখান হতে সঠকে পড়ে। তবে পুলিশ ওই এলাকা ঘিরে রেখে চিরুনী অভিযান চালাচ্ছে। সেই সাথে আশ্রয়দাতা কে ডোমার থানায় নিয়ে রাখা হয়েছে। পুলিশের সুত্রমতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানাবে পুলিশ।
জানা গেছে গত ২৪ আগস্ট (বুধবার) উইলস ফাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজে রিশাকে ছুরিকাঘাত করে বৈশাখী টেইলার্স কাটিং মাস্টার ওবায়দুল খান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রবিবার (২৮আগস্ট) রিশা মারা যায়। রিশাকে ছুরিকাঘাত করার পরদিন তার মা তানিয়া হোসেন বাদি হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। রিশার মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
ঢাকায় আসামি ওবায়দুলের বাড়িতে তলাশিও চালানো হয়েছে।
মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করছে।তদন্তে পুলিশ পেয়েছে বখাটে ওবায়দুল প্রায়ই রিশার স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো। ঘটনার দিনও সে সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। রিশা আসলে তার সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ওবায়দুল।
খুনি ওবায়দুল ঢাকা হতে পালিয়ে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে তার বোন ও দুলাভাইয়ের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল। সেখানেও পুলিশ অভিযান চালায়। খুনিকে পাওয়া না গেলেও ওবায়দুলের বোন মোছাম্মৎ খাদিজা বেগম (৩৬) ও দুলাভাই মো. খাদেমুল ইসলামকে (৪৬) আটক করে পুলিশ।
সোমবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন বীরগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় ঘাতক ওবায়দুলের নিজ বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মিরাটঙ্গী গ্রামে অভিযান চালায়। সুত্রমতে সেখান হতে পালিয়ে খুনি ওবায়দুল নীলফামারীর ডোমারে এসে অবস্থান নেয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, প্রায় সাত মাস আগে জামা বানাতে গেলে টেইলার্সে পরিবারের মোবাইল ফোন নাম্বার দেওয়া হয়। আর সেই মোবাইল ফোন নাম্বারের সূত্র ধরেই রিশাকে উত্যক্ত করে আসছিল ওবায়দুল। একপর্যায়ে নাম্বারটি বন্ধ করে দিলে ওবায়দুল আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ আগস্ট উইলস ফাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজে রিশাকে ছুরিকাঘাত করে ওবায়দুল পালিয়ে যায়।