কী নাম তোমাকে দেবো, কোমলগান্ধার নাকি
বসন্তের অন্ধকারে পথহারা পাখি?
‘কামনা তোমার নাম’ বলতেই লজ্জামাখা আঁখি
তুমি ঢেকেছো আঙুলে; তারপর প্রেম এসে
চুপিচুপি চুলে যেই বসেছে তোমার,
‘বিদিশা-বিদিশা’ আমিও আবার কাছে আসিয়াছি।
তোমার দুরন্ত দেহে ছুঁয়েছি বকুল।
সমুদ্রের ঝড়োরাতে অনায়াসে ভেসে-যাওয়া খড়কুটো,
পাপের আঙুল, তুমি ফিরালে না কেন?
তুমি কি কখনো চাও নাটোরের বনলতা হতে,
অথবা আমার রক্তে পদ্ম হয়ে ভাসতে মৃণাল?
কাছে এসো প্রিয়তমা, কাছে এসো প্রিয়া,
-বলে যাই নগ্ন হাতে ডেকেছি তোমাকে;
তুমি কেন পরিপূর্ণ হৃদয় সঁপিয়া প্রেমের দুর্বল লোভে
ঝাঁপ দিতে গেলে যৌবনের অনির্বাণ অসীম চিতায়?
কী নাম পছন্দ করো, পদ্মাবতী নাকি ক্লান্তি,
কী নাম তোমাকে দেবো? বলো কোন্ নাম।
যদি বলি তুমি লজ্জা, লাজুক পাতার মতো প্রিয়া,
ম্রিয়মাণ, তবে কেন লাজ ভেঙে শিশিরের সুস্পষ্ট ছোঁয়ায়
মধ্যরাতে জেগে ওঠো লজ্জাহীনা হয়ে?
মাঝে মাঝে মনে হয় তুমিও ঘৃণার যোগ্য,
লজ্জাহীন, অসুন্দর, ভীষণ কুৎসিত এক নারী।
লজ্জা নয়, আঁখি নয়, কোমলগান্ধার নয়,
বাসন্তী-বিদিশা নয়, ক্ষুধা কিংবা ঘৃণা বলে ডাকি।
মাটির মূর্তির মতো ভেঙে ফেলি আঘাতে আঘাতে,
ঠোঁট থেকে ফেরাই চুম্বন, বাহুর বন্ধন থেকে ঠেলে দিই দূরে।
কে যেন ফেরায় তখন, প্রতিবাদ ওঠে অন্তঃপুরে।
আমি বুঝি, বড়ো লজ্জাহীন, কঠিন, নির্মম এই খেলা-
ভালোবাসা, কী নাম তোমাকে দেবো?
তুমি তো আমারই নাম, আমারই আঙুলে ছোঁয়া
আলিঙ্গনে বদ্ধ সারাবেলা।