লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসের দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোড় পেশকারের শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুমি মালিক কৃষক-কৃষানীরা।
সোমবার(১৭অক্টোবর) বেলা দেড় টার দিকে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের তুষভান্ডার বাজারে ঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যলায়ের মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানব বন্ধনে অংশকারী ভুমি মালিক ছালেহা জানান, ৪হাজার টাকা ঘুষ দেয়ার পরও ৬ মাস ধরে ঘুরাচ্ছেন সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসের পেশকার। সোমবার ৬টা পর্চার জন্য অফিসে গেলে পেশকার তরিকুল ইসলাম আরো টাকা দাবী করে। বাকি কাগজ পত্রের জন্য দাবি করা হয়েছে আরও তিনহাজার হাজার টাকা। নয়তো মিলবে না কাগজ। এমনকি সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে বলে তিনি ছালেহাকে অনেক গালাগালি করে বলেও ছালেহা জানান। চর বৈরাতী গ্রামের ছালেহা আরো জানান, আমাদের কারনেই গত ১০ অক্টোবর ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না কালীগঞ্জ সেটেলমেন্ট অফিসে এমন শিরোনামে উত্তরবাংলাতে খবর প্রকাশ হয়েছে। আমারা নাকি গ্রামের মানুষ কিছুই করতে পারবো না।
আরেক জমি মালিক আশরাফ আলী বলেন,সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসের পেশকার হলেও চালচলন অফিসারে মত। অফিসের তালা দুপুর ১২টা পরে খোলেন। আবার ৩টার আগেই রংপুরে চলে যান। জমির দলিলের নম্বরটা জানতে বা লিখে নিতে কৃষকদের ভেগান্তি স্বীকার আর কতদিন। কথা বললেই দাম বেড়ে যায় ঘুষের।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া কৃষক-কৃষানীরা জানান, ভুমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যায় কৃষক ও জমি মালিকদের যেতে হয় উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসে। সেখানে কর্মকর্তা না থাকায় পেশকার তরিকুল ইসলাম একাই ওই অফিসের একাই রাজা হয়ে গেছেন।
তারা আরও জানান, একটা দলিল নম্বর লিখে নিতে এক হাজার, খসরা মাঠ পর্চায় প্রতি পাতা ২০০শত, খতিয়ান নম্বর বসাতে ১০০টাকা, ডিপি নম্বর লিখে নিতে ৫০টাকা,দাগ নম্বর জানতেও ১০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়। চাহিদা মত ঘুষ না দিলে কথাও বলতে চান না পেশকার তরিকুল ইসলাম। চাহিদা মত ঘুষ দিলে সব কাজই সম্ভব এ অফিসে। ঘুষ না দিলে কোনো কাজই হয় না।
পেশকারের কাছে হয়রানী ও লাঞ্চিত হয়ে কৃষক ও জমি মালিকরা একাধিক বার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেও কোন সুফল না পাওয়ায় তারা এ ঘুষখোড় কর্মকর্তার শাস্তিসহ অপাসরনের দাবিতে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন মানববন্ধনে।
দুর্নীতিবাজ ঘুষখোড় পেশকার তরিকুল ইসলামের শাস্তিসহ অপসরনের দাবি জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কৃষক আনিচুর রহমান, নজরুল হক, নয়ন মিয়া আশরাফ আলী, সাহিদুল ইসলাম, আব্দুল জলিল, কৃষানী আলেয়া বেগম, ছালেহা বেগম।
মানববন্ধন শেষে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা’র মাধ্যমে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন কৃষক-কৃষানীরা।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনুর আলম জানান, আদিতমারী ইউএনও নেই বলে বর্তমানে দুই উপজেলার দায়ীত্বে রয়েছি। কালীগঞ্জ ফিরে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
http://www.uttorbangla.com/old/114717