আর্কাইভ  শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ● ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: নীলফামারীতে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতের ৩ নেতা গ্রেপ্তার       পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ       

 width=
 

আজ লালমনিরহাট মুক্ত দিবস

মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬, দুপুর ১২:০৬

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপন লড়াই আর মুক্তিগামী জনগনের দূর্বার প্রতিরোধে লালমনিরহাটে পতন হয় পাক হানাদার বাহিনী। এক পর্যায়ে চুরান্ত বিজয়ের পূর্ব মুহুর্তে মুক্তিযোদ্ধারা লালমনিরহাট ঘিরে ফেললে অবস্থা বেগতিক দেখে এই দিনে ভোর ৬ টায় লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাক সেনা, রাজাকার-আলবদর ও তাদের দোসর অবাঙ্গালীরা দুটি স্পেশাল ট্রেনে করে রংপুর ক্যান্টমেন্টে পালিয়ে যায়। তিস্তা নদী পার হওয়ার পরে পাক সেনারা তিস্তা রেল সেতুতে বোমা বর্ষন করে সেতুর মারাত্বক ক্ষতি সাধন করে।

লালমনিরহাটে ৭১এর এই দিনে এখানে সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে মূক্তির উল্লাস। লালমনিরহাট শত্রু মুক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চারিদিক থেকে লোকজন ছুটে আসতে থাকে শহরের দিকে। সন্ধ্যার মধ্যে শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড় এলাকায় লোকে লোকারন্য হয়ে যায়। শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শহর ও আশ-পাশের গ্রাম। আনন্দে উদ্বেলিত কন্ঠে স্বদেশের পতাকা নিয়ে ছুটোছুটি করতে থাকে তরুন, যুবক, আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলই। এদিন সকাল থেকে দারুন উত্তেজনা নিয়ে লালমনিরহাট শহর, জনপদ ও লোকালয়ের মানুষ জড়ো হতে থাকে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ে আনন্দ মিছিল। পরদিন ৭ ডিসেম্বর বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মতো মানুষ জয় বাংলা ধ্বনি দিয়ে ও বিজয়ের পতাকা নিয়ে ঢুকে পড়ে শহরে।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের কালো রাত্রীতে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লালমনিরহাটের মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে গড়ে তুলেছিল প্রতিরোধ। ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাক বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় এ জেলা। মুক্তিযুদ্ধের সময় গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৬নং সেক্টরটি শুধূ বাংলাদেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর সেটি অবস্থিত লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন, বিমান বাহিনীর এম খাদেমুল বাশার। বাকী ১০টি সেক্টর ছিল ভারতের বিভিন্ন এলাকায়। ৬ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর সাথে সর্বস্তরের মানুষ শহরে প্রবেশ করে ও স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ায়। মুক্ত দিবসের এসব বিষয় নিয়ে বিবার্তার এ প্রতিবেদকের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা হয় লামনিরহাটের একমাত্র বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন (অবঃ) আজিজুল হকের সাথে। ৭১’র রণাঙ্গনের অন্যতম যোদ্ধা এ বীর প্রতীক উপরোল্লেখিত ঘটনার বিবরণ দিতে অশ্রুসীক্ত নয়নে জানালেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বর্তমান দৃশ্যপট। তিনি বললেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর অতিবাহিত হলেও অনেক মুক্তিযোদ্ধা অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। এ জন্য তিনি মহান মুক্ত দিবসের এই দিনে সহায়-সম্বলহীন মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণঃবাসন করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

অবিস্বরণীয় এই দিনটি যথাযথ ভাবে উদযাপনের জন্য লালমনিরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, মুক্তি যোদ্ধা সংগঠন, সাংবাদিকবৃন্দ ও জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের তথ্য অনুযায়ী শহরে র‌্যালী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ডিসপ্লে প্রচার করা হবে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মোঃ আলাউদ্দিন খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মসুচি গুলো পালন করবেন।

এছাড়াও ওইদিন জেলা স্টেডিয়ামে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখার জন্য জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আরশী নগর’র আয়োজনে ও প্রান-আরএফএল’র আর্থিক সহযোগীতায় জেলার ১০জন মুক্তিযোদ্ধাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হবে। পরে সেখানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied