আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

আত্মঘাতী রাজনীতি

শনিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৭, রাত ০৮:৩১

প্রভাষ আমিন

০২.

৫ জানুয়ারি ছিল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি। এ উপলক্ষ্যে ঢাকায় দুটি সমাবেশ করেছে দুই মহানগর আওয়ামী লীগ। দুটিই রাস্তা আটকে। মহানগর উত্তর করেছে রাসেল স্কয়ারে, দক্ষিণ করেছে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে। ফলাফল, টানা দ্বিতীয় দিনের মত অচল ঢাকা।

০৩. ১০ জানুয়ারি ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এ উপলক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এবার তো ঢাকায় রীতিমত কারফিউ অবস্থা। অনেকগুলো রাস্তা বন্ধ। রাস্তায় মানুষ আছে, কিন্তু গাড়ি নেই।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা নিশ্চয়ই অনেক ভেবেচিন্তে এ কর্মসূচি তিনটি নিয়েছেন। তিনটি কর্মসূচিই দারুণ সফল। বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম হয়েছে। জনগণের দল আওয়ামী লীগ জনসমাগমের কর্মসূচি পালন করতেই পারে। তাতে জনগণের সঙ্গে নেতাদের সরাসরি যোগাযোগ হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বোধহয় একটা বিষয় ভাবেননি, এই তিনটি সমাবেশে অংশ নেয়া কয়েক লাখ লোকই কিন্তু জনগণ নয়। সারাদেশের কোটি কোটি জনগণের কথা বাদই দিলাম। ঢাকায়ও আরো প্রায় দেড় কোটি মানুষ থাকে, যারা আওয়ামী লীগের এই তিন জনসভার কোনোটিতেই যোগ দেয়নি। তবে সমাবেশে যোগ না দেয়া লোকজনের মধ্যেও অনেকেই আছেন আওয়ামী লীগের সমর্থক, নৌকার ভোটার। কিন্তু আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বোধহয় সমাবেশে না আসা এই সমর্থকদের কথা ভাবেননি। তারা নিশ্চয়ই কর্মসূচির সাফল্য নিয়ে মূল্যায়ন করেছেন, আত্মপ্রসাদে ভূগছেন। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা অচল করা এমন তিনটি ‘সফল’কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের কি ধরনের ভোগান্তি হয়েছে, সে ব্যাপারে কি আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের কোনো ধারণা আছে? ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকতে থাকতে, গাড়ি না পেয়ে মাইলের পর মাইল হাঁটতে হাঁটতে তারা, যাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের সমর্থকও, সরকারকে কী ভাষায় গালি দিয়েছে; তা কি আওয়ামী লীগ নেতাদের কানে পৌঁছাবে কখনো। ঢাকায় বড় সমাবেশ করলে জনগণের ভোগান্তি হয়, এটা আওয়ামী লীগের নেতারা জানেন না, এমন নয়। জনগণের কথা বিবেচনা করেই সরকার বিএনপিকে অনেকদিন ঢাকায় সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে না। বিএনপির সমাবেশের ক্ষেত্রে জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রাখলেও নিজেদের ক্ষেত্রে সেটা ভুলে যায় কেন আওয়ামী লীগ?

বড় সমাবেশ করা হয় দলের সাফল্য ও কর্মসূচি জনগণকে জানানোর জন্য। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’এ বদলে দিয়েছে। জনগণকে জানানোর জন্য এখন আর আগের মত সমাবেশ করার দরকার নেই। ঘরে বসেই ডিজিটালি সমাবেশ করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী মাঝে মধ্যেই দেশের বিভিন্নস্থানে আমলা, জনপ্রতিনিধি ও জনগণের সঙ্গে কথা বলেন ভিডিও কনফারেন্সে। তবে ভার্চুয়াল সমাবেশ আর অ্যাকচুয়াল সমাবেশের মধ্যে পার্থক্য আছে। তবে অবশ্যই যে কোনো কর্মসূচির আগে বা পরে এর লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশ করতে হবে। এক সপ্তাহে তিনটি ভোগান্তিমূলক সমাবেশে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে না কমেছে? আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই কর্মসূচির সাফল্যে ঢেকুর তুলছে। কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় মানুষের তিক্ত দুর্ভোগের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, এ ধরনের সাফল্য কিছু প্লাস করে না। যতই উন্নয়ন করেন, জনগণের স্বস্তির বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। নইলে সফল কর্মসূচিও বুমেরাং হতে পারে। এ ধরনের কর্মসূচি সবসময় আত্মঘাতী।

বিএনপি এখন খুব সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। সরকার তাদেরকে সমাবেশ করার অনুমতিই দেয় না। তাই তাদের পক্ষে জনগণকে ভোগান্তি উপহার দেয়া সম্ভব নয়। তবে সুযোগ পেলে তারাও কম করতেন না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এবং নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে বিএনপি আন্দোলনের নামে যা করেছে, তা শুধু ভোগান্তি নয়, মানুষের জানের ওপর দিয়ে গেছে। পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার উৎসব হয়েছে তখন। সরকার সমাবেশ করার অনুমতি না দিয়ে বিএনপিকে সুবিধাজনক অবস্থায় রাখলেও, বিএনপি নেতারা ঘরে বসেই নিজেদের জনপ্রিয়তা কমানোর নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। বিএনপির আবাসিক ব্রিফিং সম্পাদক রুহুল কবির রিজভি বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে বিএনপি কারও অনুমতির অপেক্ষা করবে না। সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেড়ে নেওয়া হবে।’এই হুঙ্কার শুনে হাসি ছাড়া আর কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো যায় না আসলে। খালি প্রশ্ন জেগেছে মনে, ভবিষ্যতে কেড়ে নেবেন, এবার কেড়ে নিলেন না কেন? গ্রামে দেখেছি, লোকজন মারামারি লাগলে যে দুর্বল সে খালি চোটপাট করে আর বলে, আরেকটা মাইরা দেখ। এই হম্বিতম্বি করতে করতেই মার খেয়ে যায়। রিজভির হুঙ্কার শুনে আমার অক্ষমের আর্তনাদ মনে হয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ঢাকার নাম বদলে জিয়া সিটি রাখা হবে। তিনি অবশ্য অনেক উদার, গোপালগঞ্জের নাম বদলে মুজিবনগর রাখা হবে। আপনি কি শামসুজ্জামান দুদুর এই অঙ্গীকারের পর তাদেরকে ভোট দেবেন?

প্রভাষ আমিন : সাংবাদিক, কলাম লেখক। probhash2000@gmail .com

মন্তব্য করুন


 

Link copied