ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলের কামারজানি ইউনিয়নের কুন্দেরপাড়া গণউন্নয়ন একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার রাতে এ অগ্নিকাণ্ড হয় বলে প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান আসাদ জানান।
কেউ এ বিদ্যালয়ে আগুন দিয়ে থাকতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ ধারণা করলেও কারো নাম বলতে পারেনি।
আসাদুজ্জামান বলেন, রাত ১২টার পরে কোনো এক সময়ে বিদ্যালয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মুহূর্তের মধ্যে তা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানো হলেও রক্ষা করা যায়নি স্কুলটিকে। শুক্রবার দুপুরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আগুনে অফিসকক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন ও পাঠাগারসহ ১০টি ক্লাস রুম, আসবাবপত্র, শিক্ষা সরঞ্জাম, আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার ৭৭ জনের প্রবেশপত্র এবং ২০ হাজার এসএসসি ও জেএসসি পাস শিক্ষার্থীদের সনদপত্র পুড়ে গেছে। আগুনে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আসাদুজ্জামান আরও জানান, স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণউন্নয়ন কেন্দ্রের অর্থায়নে ২০০৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৫৭৩ জন শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে।
খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এসে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।
আসাদুজ্জামান জানান, সম্প্রতি স্থানীয় কিছু লোক নতুন একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করে তার স্কুলের কার্যক্রমে বাধা দিয়ে আসছিল।
এছাড়া একাডেমির পাশের এলাকায় মাদক, জুয়া, মদ ও যাত্রার নামে নাচ গানের আসর প্রতিরোধে বৃহস্পতিবার স্কুল কমিটির সঙ্গে স্থানীয়দের সমাবেশ হয়। এসব কারণে দুর্বৃত্তরা স্কুলে আগুন দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে কে বা কারা আগুন দিয়েছে বা কাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি আসাদুজ্জামান।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামসুল আজম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌস জাহান, সদর থানার ওসি মেহেদী হাসানসহ অন্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নতুন প্রবেশপত্রের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মেহেদি হাসান জানান, প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করবে পুলিশ।