আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

 width=
 
শিরোনাম: রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর       কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি      

 width=
 

কাদের খানের সোর্স আ’লীগ নেতা চন্দন এখন কলকাতায়!

মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বিকাল ০৫:৩০

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা স্বীকার করেছেন কাদের খান। এব্যাপারে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) রবিউল ইসলাম জানান, এই হত্যাকান্ডের সংবাদদাতা এবং কাদের খানের অন্যতম সোর্স হিসেবে চন্দন কুমার সরকারের সম্পৃক্ততার কথা শুধু কাদের খানই নন ৪ জন কিলারই এ সম্পর্কে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। পুলিশ তাকে খুঁজছে।

এদিকে চন্দন সরকার এখন ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গাইবান্ধার কয়েকজন সাংবাদিককে কলকাতার একটি নম্বর থেকে মোবাইল ফোনে সে যোগাযোগ করে বলে সে এখন কলকাতায় অবস্থান করছে। সে এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়। তাকে অহেতুক ফাঁসানো হচ্ছে। তবে কাদের খান এবং কিলারদের সাথে তার মোবাইলের কথোপকথন রেকর্ড করা আছে বলে জানানো হলে সে নিশ্চুপ থাকে। সে এই খুনের সাথে সম্পৃক্ত না হলে কেন পালিয়ে গা ঢাকা দিলো এ প্রসঙ্গে সে জানায় যে, পুলিশ তার খোঁজ করছিল বলেই সে ঝামেলা এড়াতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

চন্দন সরকার জিরো থেকে হিরো: সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনমথ গ্রামের সুশীল চন্দ্র সরকারের ছেলে চন্দন সরকার হঠাৎ করে উপজেলা আ’লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদকের পদ পেয়েই জিরো থেকে হিরো হয়ে ওঠে। অথচ তার দরিদ্র পিতা কাঠুরে হিসেবে এখনও জীবিকা নির্বাহ করছে। চন্দন ওই এলাকার কয়েকজন নামধারী সাংবাদিক এবং সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি চাঁদাবাজ গ্রুপ তৈরী করে। তার নেতৃত্বে এই গ্র“পটির কাজই হলো মূলতঃ নানা অভিযোগ করে টাকা নিয়ে তা মিমাংসা করা। কাদের খান যখন এমপি ছিল তখন এমপির বিশেষ বরাদ্দের কয়েকটি প্রকল্পের বিরুদ্ধে সে এবং তার অনুসারিদের স্বাক্ষরে বিভিন্ন দপ্তরে কয়েকটি অভিযোগ দাখিল করে। এব্যাপারে তদন্ত শুরু হলে কাদের খানের লোকজন তার নির্দেশে চন্দনকে ম্যানেজ করে নেয়। এভাবেই কাদের খানের সাথে তার বিশেষ সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে এমপি লিটন তার এই সমস্ত চাঁদাবাজি এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে এবং তাকে দল থেকে বহিস্কার করে। এই ক্ষোভে চন্দন সরকার সে সময়কার লিটন বিরোধী আ’লীগের অন্য গ্র“পটির সাথে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং এমপি লিটনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে নানা অভিযোগ করতে শুরু করে। পরবর্তীতে লিটনকে একেবারেই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে কাদের খানের সাথে সোর্স হিসেবে সম্পৃক্ত হয়। চন্দন সরকার এসএসসি পাশ করলেও ৩ বার পরীক্ষা দিয়েও এইচএসসি পাশ করতে পারে নাই। ফলে তার লেখাপড়ার ইতি ঘটে এবং উচ্চাকাংখার বশবর্তি হয়ে নানাভাবে চাঁদাবাজি শুরু করে।

কাদের খানের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল সুন্দরগঞ্জ: খুনি কাদের খান ও তার অন্যান্য সহযোগিসহ এই খুনের ঘটনায় সম্পৃক্ত যারা এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে সুন্দরগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ। এজন্য বিভিন্ন ইউনিয়নে এবং উপজেলা হেডকোয়ার্টারে নিয়মিত প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিকে পুলিশ কর্তৃক ১৫ দিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর এই খুনের চার্জশীট দাখিল করার ঘোষণায় জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে। তাদের দাবি এই সময়ের মধ্যেই সকল খুনিদের অন্তর্ভূক্ত করেই যেন চার্জশীট দাখিল করেন। মঙ্গলবার সরেজমিনে সুন্দরগঞ্জ পরিদর্শনকালে বিভিন্ন স্তরের মানুষ এ দাবি জানায়। এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) রবিউল ইসলাম জানান, ঘোষিত ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই চার্জশীট প্রদান করার লক্ষ্য নিয়ে পুলিশ কাজ করে চলেছে।

কাদের খানের জামায়াত কানেকশন: কাদের খান আবারও এমপি হওয়ার স্বপ্নে এতটাই বিভোর ছিলেন যে, তিনি বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের হারিয়ে দিতে জামায়াত এবং বিএনপির সাথে হাত মিলিয়ে গোপনে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। যে কারণে আ’লীগ প্রার্থীরা সুন্দরগঞ্জ থেকে তাদের কাংখিত ভোট পেতে ব্যর্থ হয়। পক্ষান্তরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিপুল সংখ্যক ভোট লাভ করে। এদিকে জাতীয় পার্টিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বি হওয়ায় কাদের খান এমপি লিটনকে হত্যার পর পরবর্তীতে পথের কাঁটা ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকেও হত্যার পরিকল্পনা করে। এজন্য সুন্দরগঞ্জে জামায়াতের পাশাপাশি নব্য জেএমবিরাও যে জঙ্গি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এটা প্রমাণ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করে। তার পরিকল্পনার মধ্যে অন্যতম ছিল বিগত দুর্গা ও কালি পুজায় বিভিন্ন মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাংচুর করা এবং সেখানে নব্য জেএমবির নামে হাতে লেখা একটি করে চিঠিও ফেলে রাখা হয়। এদিকে কাদের খানের সুন্দরগঞ্জের বাড়িটিও ছিল জনবিচ্ছিন্ন। এখানে সুন্দরগঞ্জের সাধারণ মানুষের যাতায়াত খুব কমই ছিল। এলাকাবাসিরা জানিয়েছেন মটর সাইকেলে নানা লোকজনকে সবসময় সেখানে যাতায়াত করতে তারা দেখেছেন। এদিকে রগচটা কাদের খান তা কথা শুনতে অস্বীকৃতি জানালে বা তার নির্দেশ মত কাজ না করতে চাইলে মুহুর্তেই তিনি তার পিস্তল বের করে ভয় দেখাতে অভ্যস্ত ছিলেন। এমপি থাকা অবস্থায় শিক্ষকরা নানা কাজে তার কাছে স্বাক্ষর নিতে গেলে নিয়োগসহ বিভিন্ন কাজে তিনি প্রভাব বিস্তার করতেন এবং তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিতে হতো। এতে দ্বিমত পোষন করলেই অনেক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে পিস্তল দেখিয়ে গুলি করার ভয় দেখান বলেও জানা গেছে।

কাদের খানের ঘনিষ্ঠদের গা ঢাকা: কাদের খান নজরবন্দি হওয়ার পর থেকেই তার অতি নিকটস্থ আস্থাভাজনরা গা ঢাকা দিয়েছে। এমপি লিটনকে হত্যার শলা-পরামর্শে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত কাদের খানের ঘনিষ্ঠজনদের আর দেখা যাচ্ছে না। পুলিশ তাদের ধরতে গোপনে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই কাদের খানের একান্ত ঘনিষ্ঠ ভাগিনী জামাই ও তার পিএস হাবিবুরের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তার ঘনিষ্ট কয়েকজন হাইস্কুল ও কলেজের শিক্ষককে এই ঘটনার পর থেকে ছুটি ছাড়াই এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied