আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: রংপুরে ট্রাক্টর চাপায় পিষ্ট হয়ে ৪ বছরের শিশু নিহত       রংপুর বিভাগ থেকে ২০ বছরে ২ লাখ ২৭ হাজার কর্মী বিদেশ গেছেন       দিনাজপুরে ছিনতাইকৃত মালামাল উদ্ধারসহ ছিনতাইকারী চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার        জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে ছেলের বাঁধা ॥ পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন       নীলফামারীতে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবরে নববধূ দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা ॥ স্বামী গ্রেপ্তার      

 width=
 

নাসির কী তবে বাংলাদেশের সবচে বাজে ক্রিকেটার?

রবিবার, ১২ মার্চ ২০১৭, সকাল ০৭:৪১

উৎপল দাস।।  সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে কথা রাখেননি বোষ্টুমি আর বরুণা। গল টেস্টের পঞ্চম দিনে কথা রাখেননি বৃষ্টি। কথা রাখেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালের মতো নামজাদা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরাও। সেই পুরনো রোগ। ভালো খেলতে খেলতে আচমকা আউট হয়ে যাওয়া। বিরতির আগে ও পরে উইকেট খোয়ানো। ফলে বিপর্যয় এড়ানো যায়নি। শনিবার গল টেস্টের পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশনে ‘ভাঙাচোরা’ শ্রীলঙ্কার কাছেই ২৫৯ রানে হেরেছে মুশফিক বাহিনী। সিরিজ শুরুর আগে সফরকারী বাংলাদেশকেই ফেবারিট বলে রায় দিয়েছিল শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ। ক্রিকেটবোদ্ধারাও হজম করেছিল তা। মুশফিক-সাকিব-তামিমরা গদগদ হয়ে বলেছিলেন, এবার আমাদের লঙ্কা জয়ের সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু মাঠে নেমেই হয়েছে স্বপ্নভঙ্গ। টেস্টের প্রথম দিনেই অতিথিদের বাস্তবতার জমিন চিনিয়েছেন সদ্য কৈশোর ছাড়ানো কুশল মেন্ডিস। গলে প্রথম দুই দিন অবলীলায় ব্যাট করেন মোরাতুয়ার এই ক্রিকেট প্রতিভা। তার উইলো থেকে আসে ১৯৪ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস। এরপর সময় যতো গড়িয়েছে জয়ের পাল্লা ভারী হয়েছে স্বাগতিকদের পক্ষে। তবে টেস্টের শেষ দুই দিনে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় একটু হলেও দিলে পানি পেয়েছিল খাঁদের কিনারায় দাঁড়ানো বাংলাদেশ। তাছাড়া শেষ দিনের খেলায় মাঠে নামার আগে ১০টি উইকেটও তো ছিল। কিন্তু হায়! বৃষ্টিও আসেনি, আর বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরাও তাদের শিক্ষা সফর শেষ করতে পারেননি। ছয় উইকেট নেওয়ার পথে অনন্য একটা রেকর্ড গড়েছেন রঙ্গনা হেরাথ। নিট যোগফল টাইগারদের আরেকটি হার। সিরিজের প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কা দুই ইনিংসে সংগ্রহ করে যথাক্রমে ৪৯৪ ও ২৭৪ রান। জবাবে দুই ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩১২ ও ১৯৭ রান। ম্যাচ বাঁচানোর পুরো রসদ ছিল বাংলাদেশের হাতে। চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৬৭ রান। অর্থাৎ, শেষ দিন ব্যাটিংয়ে নামার আগে পুরো ১০ উইকেট ছিল অতিথিদের। ব্যাটিংয়ে ছিলেন তামিম ইকবাল (১৩) ও সৌম্য সরকার (৫৩)। ভালোই খেলছিলেন তারা। কিন্তু নতুন দিনের খেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় বলেই আউট হন আগের দিন হাফ সেঞ্চুরি করা সৌম্য। বাংলাদেশের ইনিংসের ১৫ দশমিক ২ ওভারে ৪৯ বলে ৫৩ রান করে আসেলা গুণারত্মের বলে বোল্ড হন বাঁহাতি ওপেনার। তখন দলের রান ৬৭। এরপর ১৩ রান বাদে ফের এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে মুমিনুল হক (৫)। ব্যর্থতার মিছিল বড় করতে দ্রুত আউট হন তামিম ইকবালও (১৯)। ফ্লাইট মিস করে স্লিপে ধরা পড়েন দেশসেরা ওপেনার। শুধু তাই নয়- রঙ্গনা হেরাথের একই ওভারে বিদায় নেন সাকিব আল হাসান (৮) ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও (০)। ২৮ ওভার শেষে দলীয় ১০৪ রানেই নেই পাঁচ উইকেট। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে গিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ। দিনের খেলার প্রথম এক ঘণ্টায় পাঁচটি উইকেট হারানোর পর লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিম স্কোরবোর্ডে ৫৪ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন। দ্বিতীয় সেশনের দ্বিতীয় বলে লেগের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে আউট হন দলীয় অধিনায়ক। ৯৮ বলে ৩৪ রান করেন মুশি। ৪৮তম ওভারে দলীয় ১৫৮ রানে বিদায় হয় তার। সহযোগীর বিদায়ে যেন ধৈয্যের বাধ ভাঙে লিটনেরও! ৬ রান বাদে হেরাথকে অন সাইডে ফ্লিক করতে গিয়ে গড়বড় করে ফেলেন টাইগারদের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ৬২ বলে ৩৫ রান করেন তিনি। সাত উইকেট হারানোর পরেও হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ২৮ রান করা টাইগার ব্যাটসম্যানকে কুমারার ক্যাচ বানান হেরাথ। তাছাড়া অথিথি দলের লেজকেও ছেটে ফেলেন লঙ্কান অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ৬০ দশমিক ২ ওভারে ১৯৭ রানেই থামে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। লোয়ার অর্ডারে তাসকিন আহমেদ ৫ আর মুস্তাফিজ ০ রান করে আউট হন। আরেকবার শূন্য রানে অপরাজিত থাকেন শুভাশীষ রায়। ২০ দশমিক ২ ওভারে ৫৯ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন রঙ্গনা হেরাথ। এই পথে বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৬৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন হেরাথ, ছাপিয়ে যান নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টোরিকে। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন শ্রীলঙ্কার কুশল মেন্ডিস। স্বাগতিক দলের প্রথম ইনিংসে ১৯৪ রান করেছিলেন তিনি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নাসির হোসেন কী বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে ক্রিকেটার নাকি? ঘরোয়া ক্রিকেটে সম্প্রতি ২টি সেঞ্চুরি করেছেন। তারমধ্যে একটি দ্বিশতকও রয়েছে। বাংলাদেশে লোয়ার মিডল অর্ডারে হাতেগোনা যে কয়েকজন ক্রিকেটার নিয়মিত পারফর্ম করতে পারেন তাদের মধ্যে নাসির হোসেন অন্যতম। টেস্টে একটি শতক থাকা, অসাধারণ ফিল্ডিং নৌপুণ্য আর বোলিং দক্ষতা থাকার পরও নাসির হোসেনকে দলে নেয়া হয় না অজানা কোনো এক কারণে। আর কত দিন এভাবে উপেক্ষিত থাকবেন নাসির হোসেন? এভাবে আর কত পরাজয় বরণ করতে হবে টাইগার বাহিনীকে? এসব প্রশ্নের উত্তর নির্বাচক ও বোর্ড কর্মকর্তারা কবে জানাবেন ক্রিকেট পাগল এই জাতিকে? সর্বশেষ একটা প্রশ্নই করতে চাই- নাসির কী তবে বাংলাদেশের সবচে বাজে ক্রিকেটার নাকি? লেখক: নিজস্ব প্রতিবেদক, পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ

মন্তব্য করুন


 

Link copied