দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই কাউন্সিলে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে কারা আসছেন, তা নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের চলছে জল্পনা-কল্পনা। সেই সঙ্গে দলের কাউন্সিল নিয়ে গোটা জেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে উৎসাহ, উদ্দীপনা, প্রাণচাঞ্চল্য। মামলা, গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রভৃতি কারণে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার উৎসাহ কমে গেলেও কাউন্সিলকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার এই সম্মেলনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও তিন জন সাংগঠনিক সম্পাদকসহ মোট পাঁচটি পদে নির্বাচন হবে। এসব পদে প্রতিযোগিতা করছেন ১১ প্রার্থী। এসব প্রার্থী ও সমর্থকরা নির্বাচনে জয় লাভের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন দলীয় কার্যালয়সহ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি।
গাইবান্ধায় দলের এই কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত হয়েছে ৮ সদস্যের নির্বাচন কমিশন। কমিশন জানিয়েছে, শনিবার গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচনটি। এতে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান জেলা বিএনপি সভাপতি আনিসুজ্জামান খাঁন বাবু ও ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক। নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জি এম মোসাদ্দেক, কামরুল হাসান সেলিম, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান ও মাহামুদুন নবী টিটুল। অন্যদিকে জেলার তিনটি সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য লড়ছেন পাঁচজন। তারা হলেন আনিছুর রহমান নাদিম, অ্যাডভোকেট মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু, আতিক হাসান রনি, এম মোশারফ হোসেন বাবু ও হুনান হক্কানী।
জানা গেছে, নির্বাচনে সভাপতি পদের দুই প্রার্থীর নেতৃত্বে অন্য প্রার্থীরা প্যানেল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যদিও প্যানেলের বিষয়টি অস্বীকার করছেন সভাপতি প্রার্থী আনিসুজ্জামান খাঁন বাবু জানান,
‘এখানে সবাই নিজ নিজ পদের জন্য এককভাবে কাজ করছে। প্যানেল বলে কিছু নেই।’ তবে অন্য সভাপতি প্রার্থী ডা. মইনুল হাসান সাদিক প্যানেলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমার প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মাহামুদুন নবী টুটুল।’
বিএনপির এই কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনের সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী বলেন, ‘২০০৯ সালের ২৪ অক্টোবর স্থানীয় স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর আর গাইবান্ধায় আর কোনও কাউন্সিল হয়নি। প্রধান অতিথি হিসেবে কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গাইবান্ধা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি, সাদুল্যাপুর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার মোট ১ হাজার ১৪৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন এই নির্বাচনে।’
দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলা, গ্রেফতারি পরোয়ানা ইত্যাদি কারণে দলীয় কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে ভাটা পড়েছিল। এখন কাউন্সিলকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আবার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। নেতাকর্মীরা সংগঠিত হচ্ছেন। তারা বলছেন, বহুল প্রতীক্ষিত এই কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, গ্রুপিং ও বিরোধের অবসান ঘটবে।