আর্কাইভ  শনিবার ● ১১ মে ২০২৪ ● ২৮ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ১১ মে ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এএসআই নিহত, এসআই হাসপাতালে       রংপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ       ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ শুরু       তিস্তা নিয়ে ভারত-চীন প্রতিযোগিতা       ঠাকুরগাঁওয়ে উপজেলা নির্বাচনে আনারস ও মোটরসাইকেল মার্কার জয়      

 width=
 

রংপুরে জেলখানায় বন্দি মায়েদের সঙ্গে বেড়ে উঠছে ৮ শিশু

শনিবার, ১৮ মার্চ ২০১৭, দুপুর ১০:৩২

গতকাল শুক্রবার কারাগারেই বন্দি মায়েদের সঙ্গে এসব শিশু পালন করেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস। কারা কর্তৃপক্ষ এই আট শিশুর জন্য নিয়েছিল বিশেষ ব্যবস্থা। তাদের দেওয়া হয়েছে নতুন পোশাক, উন্নতমানের খাবার ও খেলাধুলার সামগ্রী। দিনটি তারা বেশ আনন্দের সঙ্গে কাটিয়েছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে বর্তমানে আট শিশু সাত বন্দি মায়ের সঙ্গে বড় হচ্ছে। এসব শিশুর বয়স আড়াই মাস থেকে ৬ বছর পর্যন্ত। আর বন্দি মায়েদের মধ্যে একজন মৃত্যুদ-প্রাপ্ত। তার নাম মাজেদা বেগম। প্রায় ১৫ বছর আগে এক শিশুকে হত্যার অভিযোগে আসামি হয়েছিলেন তিনি। দেড় বছর আগে রংপুরের জজ আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। রায় ঘোষণার দিন থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন। মাজেদা কারাগারে যাওয়ার সময় আড়াই বছরের পুত্র মারুফকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তখন থেকে মারুফ কারাগারে মায়ের সঙ্গে বড় হচ্ছেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্য দিয়ে। মায়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে এই শিশুটির ভবিষ্যৎ কী হবে কেউ বলতে পারছে না।

নারী ও শিশু পাচার মামলায় ইয়াসমিন আক্তার নামে এক মা এক বছর থেকে কারাগারে হাজতি হিসেবে রয়েছেন। তিনি সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন দুটি সন্তান। একজনের বয়স ছয় বছরের বেশি হওয়ায় তাকে সরকারি শিশু সদনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পাঁচ বছরের পুত্র শ্রাবণ তার সঙ্গে রয়েছে। মায়ের সাজা হলে এই শিশুটির কী হবে তাও অনিশ্চিত।

মা আজিফা বেগম প্রায় এক বছর থেকে তিন বছরের পুত্রসন্তান নিয়ে কারাগারে আছেন। মুক্তা বেগম তিন মাস আগে কারাগারে এসেছেন দুটি মেয়ে সন্তান নিয়ে। এর মধ্যে মায়ার বয়স প্রায় পাঁচ মাস এবং টুকটুকির বয়স প্রায় পাঁচ বছর।

রোকেয়া বেগমও বেশ কিছুদিন থেকে রয়েছেন তার চার বছরের ছেলে রাকিবকে নিয়ে। মোর্শেদা বেগম চার বছরের সন্তান মাসুম ও ছাদিয়া বেগম তার তিন বছরের মেয়ে কর্ণিয়াকে নিয়ে কারাগারে বেশকিছু দিন থেকে আটক রয়েছেন। মাজেদা ছাড়া অন্য সাত বন্দির মামলাগুলো বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।

রংপুর কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, কারাগারে শিশুদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে এসব শিশু সুন্দরভাবে বেড়ে উঠছে। শুক্রবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে এসব শিশুর জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অন্যদিকে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, কারা অভ্যন্তরে যতই সুযোগ-সুবিধা থাক না কেন, তারপরও তারা চার দেয়ালের ভেতরে বড় হচ্ছে। এতে তাদের মন-মানসিকতায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্মা রায় জানান, কারাগারে এসব শিশু মায়েদের সঙ্গে থেকে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। মায়েদের কাছ থেকে শিশুকে আলাদা করলে মানসিকতায় বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। মায়েদের সঙ্গে থাকলে শিশুরা সবসময় ভালো ও খুশি থাকে। এসব শিশুর বয়স ছয় বছর পার হলে তাদের সরকারি শিশু সদনে পাঠানোর বিধান রয়েছে। তাই তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত নয়।

তিনি আরও জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শিশুদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তাদের নতুন পোশাক ও খেলনাসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।

প্রবীণ আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট আব্দুল জলিল বলেন, কারাগারে বন্দি মায়ের সঙ্গে সন্তান থাকলে তাদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ বিষয়গুলো আইন প্রণেতাদের ভেবে দেখা উচিত।

মন্তব্য করুন


 

Link copied