আজ শনিবার বিকেলে তিনি রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন।
এরশাদ বলেন, আমার জীবনে আঘাতের পর আঘাত এসেছে। জীবনে কিছুই পেলাম না। তবু রংপুরের মানুষের ভালোবাসায় আমি টিকে আছি। আগামীতে শেষবারের মতো আর একবার ক্ষমতায় যেতে পারলে রংপুরের মানুষের ঋণ শোধ করবো। রংপুরবাসীর কাছে এটাই শেষ আবেদন বলে তিনি সে লক্ষে নেতাকর্মীদের কাজ করার আহবান জানান।
এইচএম এরশাদ বলেন, টেলিভিশনে প্রতিদিন দেখা যায়, মা আছে তার ছেলে নেই, স্ত্রী আছে তার স্বামী নেই। দেশে আইনের শাসন নেই। জাতীয় পার্টি এ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে।
জেলে থাকার স্মৃতিচারণ করে এরশাদ বলেন, ১৯৯০ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর আমাকে নির্বাচন করতে দেয়া হয়নি। ৬ বছর জেলে ছিলাম। বেগম জিয়ার কারাগারে কারও সঙ্গে আমাকে কথা বলতে দেয়া হতো না। তারা চেয়েছিলেন আমি যেন জেলেই মারা যাই। তারা আমাকে ফাঁসি দিতে চেয়েছিল। তবুও মনোবল হারাইনি। জানতাম একদিন মানুষের ভালোবাসায় জেল থেকে বের হবো।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইতিহাস টেনে এরশাদ বলেন, ১৯৯৬ সালে ৩৩টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। যার মধ্যে বৃহত্তর রংপুরে ২১টি আসন। ইতিহাসে এটা বিরল ঘটনা যে, জেল থেকে নির্বাচন করে কেউ একাই পরপর দুবার ৫টি আসনেই জয়ী হয়েছে। আমি সেটা পেরেছি। এজন্য রংপুরবাসীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
এরশাদ বলেন, সেই সময় বিএনপি আমাকে ক্ষমতায় বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমি রাজি হইনি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে গিয়েও কোনো ফল পাইনি। আমি বুঝেছি আসল বন্ধু তারা কেউ না।
আবার ক্ষমতায় যাওয়ার আশা ব্যক্ত করে এরশাদ বলেন, আমার প্রতি কোনো মানুষের অভিযোগ নেই। আমার কারণে কোনো মায়ের চোখে জল নেই। তাই বেঁচে আছি। রংপুরের মানুষই আমার প্রকৃত বন্ধু। আগামীতে রংপুরের সব আসন পেলে জাতীয় পার্টি আবার ক্ষমতায় যাবে।
বক্তব্য শেষে আগামীতে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নাম ঘোষণা করেন এরশাদ।
রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে আয়োজিত সমাবেশে মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, রংপুর জেলা জাপার সভাপতি আলহাজ্ব মোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর প্রমুখ।