নীলফামারীর সৈয়দপুর থানা পুলিশের অভিযানে আন্তঃজেলা চোরাই মোটর সাইকেল চোর, ক্রেতা-বিক্রেতাসহ ওই চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মডেলের ১১টি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) থেকে আজ বুধবার (৫ এপ্রিল) ভোর পর্যন্ত সৈয়দপুর-রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাবেক দুই সেনা সদস্যসহ ওই চক্রের ৯ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
আজ বুধবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানের পূর্বে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্রেফতার ও মোটরসাইকেল উদ্ধারের এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলোঃ- গাইবান্ধা জেলার দুলারভিটা মালিবাড়ি এলাকার মৃত. দুলা মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৪০), বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার মালিপাড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (৩২), গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার খামার দসুলিয়া গ্রামের হাফিজার রহমানের ছেলে নুর আলম (৩৫), রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার বালারহাট মাস্টারপাড়া গ্রামের মৃত. আবুলের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩৬), কুড়িগ্রাম জেলার গফরী এলাকার জগৎ কুমারের ছেলে রূপম কুমার (২৯), দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার ডহুরা এলাকার মৃত. এহসান আলীর ছেলে রুহুল আমিন (৪২) ও বিষ্ণু রায়ের ছেলে শান্ত রায় (৩০), সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের বাগডোকরা এলাকার মৃত আ. রহমানের ছেলে আজাহার আলী (৪৫) ও মৃত. হাসান উদ্দিনের পুত্র রেজাউল করিম (৩৫)।
পুলিশ জানায়, ২৯ মার্চ শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কের পপুলার ক্লিনিকের সামনে থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি যায়। যা ক্লিনিকের ভিডিও ফুটেজের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে দুই চোরের ছবি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই দুই চোর আবারও একই এলাকায় গেলে লোকজনের সহায়তায় আবুল কালাম ও জাহেদুল ইসলামকে আটক করা হয়। পরে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা মোটরসাইকেল চোরাই দলের সদস্য ও চোরাই মোটরসাইকেলের ক্রেতা বিক্রেতার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দেয়। তাদের তথ্য অনুযায়ী সৈয়দপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে থানার অফিসার ইনচার্জ আমিরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ (তদন্ত), উপ-পরিদর্শক আব্দুল আজিজ, অলোকান্ত রায়, সহকারি উপ-পরিদর্শক বদরুদ্দোজাসহ সঙ্গীয় ফোর্স সৈয়দপুর ছাড়াও রংপুর ও দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়।
গতকাল মঙ্গলবার থেকে গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত একটানা এ অভিযানে সৈয়দপুর থেকে ৯টি ও রংপুর শহরের জাহাজ কোম্পানী মোড় থেকে দুটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে মোটরসাইকেল ক্রেতা সেনাবাহিনীর চাকুরীচ্যুত সদস্য নুর আলমকে ওয়াকিটকিসহ ও বিক্রেতা সৈযদপুরের মামা এন্টারপ্রাইজের মালিক সেনা বাহিনীর সাবেক সদস্য আজাহার আলীসহ ৯ জনকে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আজাহার আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মামা এন্টারপ্রাইজ থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৭টি মোটরসাইকেল, শহরের নিয়ামতপুর এলাকার সুমনা পেট্রোল পাম্প এলাকায় ও নতুন বাবুপাড়া এলাকার পৌর পাঠাগারের সামনে থেকে বেচাকেনার সময় অপর দুটি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা মোটরসাইকেল চুরির সত্যতা স্বীকার করে জানায়, তারা এসব মোটরসাইকেল রিকন্ডিশন মোটরসাইকেল বিক্রেতা মামা এন্টারপ্রাইজে বিক্রি করতো। এদিকে মোটরসাইকেল উদ্ধার ও গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের অভিযান সম্পর্কে অবগত করতে গতকাল প্রেস ব্রিফিং করে থানা পুলিশ। এতে ব্রিফিং দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মো. আতিকুর রহমান। এ সময় থানার অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।