গ্রামবাসিদের কাছ থেকে জানা গেছে, ঘটনার দিন শাহীন মিয়া সকালেই মোটরসাইকেলের জন্য স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে বাড়ির বাইরে চলে যায়। যাওয়ার সময় স্ত্রীকে হুমকি দিয়ে বলে যায়, ‘আজই বাবার বাড়িতে গিয়ে মোটরসাইকেলের দেড় লাখ টাকা নিয়ে আসতে। আর যদি বাড়ি ফিরে দেখি যে বাবার বাড়িতে যাওনি তাহলে নির্যাতন কাকে বলে টের পাবা। কোনো উপায় না পেয়ে মোখলেছা খাতুন স্বামীর ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।’ এমন তথ্য মেম্বারপাড়া গ্রামের অনেকেই জানিয়েছেন।
একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাবা ময়েজ উদ্দিন ও মা শুকুর জান বেগম মেয়ের জামাই বাড়িতে ছুটে আসে। এসময় ময়েজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ কামলা দিয়া খাই। তারপরও বিয়ের সময় জামাইর হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেই ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করার জন্য। বিয়ের এক মাস পর থেকেই জামাই বায়না ধরে মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য। কিন্তু গাড়ি কেনার এত টাকা আমি কই পাই। এরপরও বেওয়াইকে কইছি (জামাইর বাবা) জামাই তো মোটরসাইকেল কিনে চাচ্ছে। আমি একা তো অত টাকা যোগার করবার পামু না। আপনিও কিছু দেন বাকী টাকা আমি দেই। কিন্তু তারা সেটা মানেন না। জামাইর মতো বেওয়াইও দাবি করতে থাকে। এ নিয়া মেয়েকে মারপিটও করে।’ মা শুকর জান বেগম বলেন, ‘মাইয়া আমার অনেক কষ্ট সহ্য কইরা ছিল। বলত আমার শ্বশুর শ্বাশুরিও নির্যাতন করার জন্য ছেলেকে উৎসাহ দিত। তারা আমার মাইয়াকে মাইরাফেলাইছে।’
উল্লেখ্য যে, চার মাস আগে পারিবারিক ভাবে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। নিহত মোখলেছুা খাতুনের বাবা ময়েজ উদ্দিন। রৌমারী উপজেলার কাঠালবাড়ি গ্রামে তাদের বাড়ি। যোতুকলোপি স্বামী শাহীন মিয়ার বাবার নাম নজরুল ইসলাম। রাজীবপুর উপজেলার মেম্বারপাড়া গ্রামে বসবাস করে।
রাজীবপুর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরুতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে এসআই হাবিবুর রহমান জানান, লাশের শরীরে কোন আঘাতের কোন দাগ নেই। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বোঝা যাবে আসলে আত্মহত্যা না হত্যা। আপাতত ইউডি (অস্বাভাবিকমৃত্যু) মামলা করা হয়েছে।