শোন মেয়ে, তোমাকেই বলছি-
যতদিন তুমি নারী শব্দের দাসত্ব করবে
নরাধমরা তোমাকে ধর্ষণ করতেই থাকবে,
তোমাকে দেখে পথে-ঘাটে টিপ্পনী কাটবে
তোমাকে ঝোপে-ঝাড়ে তুলে নিয়ে-
দলবেঁধে চালাবে পাশবিক নির্যাতন,
তোমার লজ্জাস্থানে রক্ত ঝরিয়ে
নিজের পুরুষত্ব জাহির করবার চেষ্টা করবে,
তোমার কোমল শরীরের মাতৃস্তনে
হায়েনার মতো আঙুলের আচর বসিয়ে
ওরা উল্লাস করবে সমস্বরে,
তোমার কষ্টের আর্তনাদ দেখে
ওরা রাক্ষুসে দাঁত কেলাতে কেলাতে হাসবে
কারণ ওরা নষ্টমতি হিং¯্র জানোয়ার-
হায়েনা, শকুন, ইতর, ইবলিশের বংশধর;
তোমাকে ধর্ষণ করেও যদি ওদের তৃপ্তি না হয়
শেষ পরিণতি হবে তনুর মতো।
অতপর রাষ্ট্র মুখে বুড়ো আঙুল গুঁজে দেখবে-
তোমার ক্ষত বিক্ষত প্রাণহীন দেহটা,
দৈনিক খবরের কাগজে ছাপানো হবে সেই ছবি
বড় বড় অক্ষরে লেখা থাকবে তোমার নাম ধাম;
আর একদল শেয়ানা মানুষ-
মাঠে ময়দানে ভাষণ দেবে, প্রতিবাদ করবে
তোমার হত্যার বিচারের দাবীতে।
আর যদি বেঁচে ওঠো-
অজ্ঞ-অন্ধরা তোমাকে অবজ্ঞা করার চেষ্টা করবে।
শোন মেয়ে, তোমাকেই বলছি- জেগে ওঠো
আর নারী শব্দের দাসত্ব নয়,
কে বলেছে- তোমার নদীর শরীর, বাঁকা থাকবেই
ঈশ্বর তোমাকে নারী করেছে, তুমি দাসী,
কে বলেছে ওসব কথা ?
তুমি মানুষ, তুমি মা, তুমি বোন, তুমি প্রিয়তমা।
শোন মেয়ে, তোমাকেই বলছি- জেগে ওঠো
তুমি নারী শব্দের দাস হলেই কেবল
নরপশুরা তোমাকে এসিড ছোড়ার সাহস করবে,
চার দেয়ালের ভেতর শেকল পড়িয়ে
কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করে রাখবে।
শোন মেয়ে, তোমাকেই বলছি- জেগে ওঠো
নিজত্ব হারিয়ে ভয় পেয়ো না, তুমি নারী নও, তুমি মানুষ
জেগে ওঠো, জেগে ওঠো, জেগে ওঠো...
(নাঙাপায়ে নীলনূপুর গ্রন্থ থেকে)