আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

 width=
 
শিরোনাম: রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর       কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি      

 width=
 

“আমি আমার বাবাকে চাই, ওষুধ চাই না”

বুধবার, ১২ জুলাই ২০১৭, বিকাল ০৫:৫৪

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ‘মাওয়া আক্তার বয়স (১০)। কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছে। বাবা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিল ‘মা’ তোমার জন্য কি নিয়ে আসবো। মাওয়া আক্তার বাবাকে বলেছিল আমার জন্য কোন কিছু আনতে হবে না, শুধু জ্বরের ওষুধ নিয়ে আসবা। কিন্তু বাবা আর ফিরে আসলো না। বাবাকে ওরা মেরে ফেলেছে। ‘আমি ওষুধ চাই না, আমি আমার বাবাকে ফেরত চাই। বাবার খুনিদের ফাঁসি চাই’। এভাবেই কান্না জড়িত কণ্ঠে কথা গুলো বলছিল খুন হওয়া সেচ্ছাসেবকলীগের নেতা আব্দুল মান্নানের কন্যা মাওয়া আক্তার (১০)।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান খুনের ঘটনায় পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নিহত আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।

পরিবারের স্বজন ও এলাকাবাসী খুনের ঘটনার সাথে জড়িত যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত ও তার সহযোগিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

নিহত আব্দুল মান্নানের মা রেজিয়া বেওয়া বলেন, আমার ছেলেকে যারা মেরেছে তাদের ফাঁসি চাই। মান্নানের মৃত্যু পরে এখন তার স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে আমি কোথায় যাব ?

নিহতের স্ত্রী জেমসিন আক্তার জানান, আমার স্বামী ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। দুই কন্যা শিশুকে নিয়ে এখন আমাকে পথে বসতে হবে। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

নিহত সেচ্ছাসেবকলীগের নেতা আব্দুল মান্নান দুই কন্যা সন্তানের জনক। তার অনাকাঙ্খিত খুনের ঘটনায় পরিবারের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেল বলে নিহত মান্নানের স্ত্রী জেসমিন আক্তার দুই সন্তান ও শ্বাশুড়িকে নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন।

পুলিশ বুধবার ভোর পর্যন্ত খুনের সাথে জড়িত সন্দেহে দুই জনকে আটক করছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

আটককৃতরা হলেন: যুবলীগ নেতা সজিব দত্তের বড় ভাই পিন্টু দত্ত (৩৫) ও শান্তর বড় ভাই রতন (৪০)।

পুলিশ লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্থর করেছেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত খুনের সাথে জড়িত মূলহোতাদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।

এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার জানান, খুনের সঙ্গে জড়িতদের পুলিশ চিহ্নিত করেছেন। দোষীদের গ্রেফতারের জন্য বিশেষ অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সজিব দত্তের সঙ্গে উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নানের টেন্ডার ও টোল আদায় নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। কয়েকদিন আগে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মাঝে হাতাহাতি হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত মান্নানকে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

পরবর্তীতে সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আব্দুল মান্নান সজিব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্তকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তার ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলে ও মান্নানকে সাশিয়ে সাবধান করে দেন বলে ওই সময় উপস্থিত অনেকে বলেছেন।

ওই ঘটনার জের ধরে যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় আব্দুল মান্নানকে শহরের মুন্সিরহাট এলাকায় দেখতে পেলে পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র গিয়ে আঘাত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মান্নান মাটিতে লুটিয়ে যান। এ সময় আব্দুল মান্নানকে বাচাঁনোর জন্য এগিয়ে এলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুম্মনকে সজিব দত্ত ছুরিকাঘাত করে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন আব্দুল মান্নান ও জুম্মনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আনার পথে মান্নান অতিরিক্ত রক্তক্ষনের কারণে পথিমধ্যে মারা যান। আর জুম্মনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এই খুনের সঙ্গে জড়িতের অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সজিব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীর পলাতক রয়েছেন। সমীর দত্তের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তাৎক্ষণিক ভাবে হাসপাতালে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ হতাহতদের খোঁজ নিতে গিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস প্রদান করেন।

এ ঘটনায় সেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। খুনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে হাসপাতালে ও শহরের গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied