বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, ছয় ঋতুর মধ্যে শীতের অবস্থান মূলত পৌষ ও মাঘ মাসজুড়ে। আর সেই পৌষ মাস আসতে এখনও ঢের বাকী। চলছে ভাদ্র মাস। এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির রেশ কাটতে না কাটতে প্রকৃতি রূপ বদলিয়ে ফেলতে শুরু করেছে। হঠাৎ করে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা অববাহিকা সহ নীলফামারী জুড়ে ভোরে ভারী কুয়াশার চাদরে ডেকে যেতে শুরু করেছে।
আজ বুধবার ভোর হতে কুয়াশার চাঁদরে আবৃত হয়ে পড়ে এ অঞ্চল। আর দিগন্ত বিস্তৃত কুয়াশার সঙ্গে শিশির বিন্দু ঝড়েছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই কুয়াশার রেশ মিলিয়ে গেলেও মেঘলা আকাশের কারনে দুপুর পর্যন্ত সুর্য্যরে মুখ দেখা মেলেনি।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকায় অবস্থিত আবহাওয়া অফিস সুত্র মতে, সর্বচ্চো তাপমাত্রা থাকছে ৩২ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ২৭ ডিগ্রি সেলসসিয়াস। অপর দিকে এ জেলার সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস জানায় সেখানে সর্বচ্চো তাপমাত্রা থাকছে ৩১ ডিগ্রি ও সর্ব নিম্ন ২৬ ডিগ্রি সেলসসিয়াস। মাঝে মধ্যে ছিটেফোটা বৃস্টিও নামছে।
তিস্তা অববাহিকার দোলাপাড়া নারী প্রতিক সংঘের সদস্য নাসরিক আক্তার জানান, হঠাৎ করে গতকাল মঙ্গলবার (২২ আগষ্ট) রাত হতে কুয়াশা ঝরতে শুরু করে। আজ বুধবার ভোর হতে সকাল আটটা পর্যন্ত ভারী কুয়াশায় ঢেকে থাকে এলাকা। এ ছাড়া ঠান্ডা গরমের কারনে এলাকায় জ্বর সর্দি রোগ দেখা দিয়েছে।
এই সংস্থার সদস্য জেসমিন, কাজলী, ও রোকেয়া জানান কয়দিন আগে তিস্তা নদীর ভয়াবহ বন্যা হয়ে গেল। এলাকাটি হতে এখনও বন্যার লন্ডভন্ড চিত্র ভেসে বেড়াচ্ছে। বন্যায় বসতঘর হারিয়ে তিস্তা বাঁধে অনেক পরিবার কোন রকমে ঘর বানিয়ে বসবাস করছে। তার উপর এখন কুয়াশা ঝরতে শুরু করেছে। এতে মানুষজনের দুর্ভোগ হচ্ছে। তাদের মতে সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়া গরম থাকলেও রাত বাড়ার সাথে সাথেই পড়ছে কুয়াশা। আবহাওয়ার হঠাৎ এ পরিবর্তনে খাপ খাইয়ে নিতে পারছে না মানুষ। ফলে সর্দি, জ্বর, গলাব্যথা, পেটের পীড়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও চর্মরোগসহ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে ডিমলা হাসপাতাল ও নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে রোগীর ভিড় বেড়েছে। আউটডোরে উপচে পড়া রোগী দেখা যায়।
সিভিল সার্জন রঞ্জিন কুমার বর্মন জানান, গরম ঠান্ডায় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষজন। ফলে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগ বুঝে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া তিস্তা অববাহিকা সহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম কাজ করছে।