চাহিদার থেকে অনেক কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃপক্ষকে দিন-রাতে লোডশেডিং করতে হচ্ছে বলে রংপুরে অবস্থিত বিদ্যুৎ বিভাগীয় আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে গত সোমবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিদ্যুতের রংপুর বিভাগীয় আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্র জানায়, এই বিভাগের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও গাইবান্ধা—এই আট জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিদিন গড়ে ৫২০-৫৩০ মেগাওয়াট। আর সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ মেগাওয়াট। এর মধ্য থেকে পল্লী বিদ্যুৎকে দেওয়া হয়ে থাকে ৬২ শতাংশ। বাকি ৩৮ শতাংশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) থাকে।
এদিকে এই বিভাগের আট জেলায় বিদ্যুতের গ্রহাক রয়েছেন আনুমানিক সাড়ে ২৫ লাখ। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক প্রায় ২০ লাখ এবং পিডিবির সাড়ে ৫ লাখ গ্রাহক রয়েছেন।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ-২-এর মহাব্যবস্থাপক সোহরাব হোসেন গত সোমবার বলেন, দিনের বেলায় চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও রাতের বেলায় ৩০ শতাংশে নেমে যায়। এ কারণে ব্যাপক এলাকা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গ্রাম থাকছে অন্ধকারে। রংপুর বিভাগের আট জেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ২০ লাখ।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দিনে-রাতে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বিপণিবিতানসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অসহ্য ভ্যাপসা গরমে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তি বেড়ে যায়। নিজস্ব জেনারেটর চালাতে হয়।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় ডিজেল ব্যবহার করে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর দিয়ে হিমাগারসহ বড় বড় কারখানা সচল রাখতে হচ্ছে। এ ছাড়া ছোট ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
রংপুরের জায়গীরহাট এলাকায় অবস্থিত নর্থ বেঙ্গল জুট মিলসের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর দিয়ে কারখানা চালু রাখা হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয় অনেক গুণ বেড়ে যায়।
রংপুর শহরের জাহাজ কোম্পানি মোড়ের পাশে অবস্থিত ‘পাঞ্জাবিওয়ালা’ দোকানের স্বত্বাধিকারী রিপন শেখ বলেন, দিনের অর্ধেক সময় এবং রাতে এরও বেশি সময় বিদ্যুৎ থাকে না। বিদ্যুৎ না থাকলে ক্রেতারা দোকানে ঢুকতেই চায় না।
রংপুরে অবস্থিত আঞ্চলিক বিদ্যুৎ কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন গত সোমবার বলেন, রংপুর বিভাগে বর্তমানে প্রতিদিন ৫২০-৫৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০-৩৬০ মেগাওয়াট। তাই দিন-রাতে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে পিডিবির প্রায় সাড়ে ৫ লাখ বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছেন।