আর্কাইভ  শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ● ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: নীলফামারীতে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতের ৩ নেতা গ্রেপ্তার       পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ       

 width=
 

ডোমারে গৃহকর্তাকে বেধে বাড়ি থেকে টাকা ছিনতাই॥শ্বাসরোধে গৃহকর্তার মৃত্যু

শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, বিকাল ০৭:৪৪

নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় গৃহকর্তাকে বেধে মুখে টেপ মেরে বাড়ি থেকে ৬৪ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শ্বাসরোধে ওই গৃহকর্তা অতুল চন্দ্র রায়ের (৬৫) মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসী ঘটনাটিকে বাড়িতে ডাকাতি বলে দাবি করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বোড়াগাড়ি ইউনিয়নের নয়ানী বাগডোকরা মাস্টারপাড়া গ্রামে ওই ঘটনাটি। নিহত অতুল চন্দ্র রায় গ্রামের মৃত. বিষ্টরাম রায়ের ছেলে। এঘটনায় নিহত গৃহকর্তার স্ত্রী দেবমায়া রাণী রায় (৫৫) রাতেই বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে শুক্রবার জেলার মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করায়। এলাকাবাসী জানায়, নিহত অতুল চন্দ্র রায়ের ছেলে বিপুল চন্দ্র রায় (৩৫) দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকেন। ওই বাড়িতে বিপুলের বাবা, মা ও স্ত্রী বসবাস করেন। ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে বিপুলের বাবা অতুল চন্দ্র রায় একাই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সুযোগে দূর্বৃত্তরা বাড়িতে প্রবেশ করে গৃহকর্তাকে বেধে ও নাকে-মুখে টেপ মেরে রেখে বাড়িতে গচ্ছিত ৬৪ হাজার টাকা নিয়ে সটকে পড়ে। ঘটনাটি সন্যার পর জানাজানি হলে এলাকার লোকজন পুলিশকে খবর দিলে রাত ৮টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। অতুল চন্দ্র রায়ে নাতি (মেয়ে দিপালী রাণী রায়ের ছেলে) একই গ্রামের সুমন রায় (১৫) বলেন, আমার মামি (বিপুলের স্ত্রী) তার বাবার বাড়ি ডিমলা উপজেলার ডালিয়ায় অবস্থান করছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমার দিদিমা (অতুলের স্ত্রী) দাদুকে বাড়িতে একা রেখে মামিকে তার বাবার বাড়ি থেকে আনতে যান। দিদিমা রাতে বাড়িতে ফিরবেন না এজন্য দাদুর খোঁজখবর আমাকে নিতে বলেন। এরপর বিকেল পাঁচটার পর আমার এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে দাদুর বাড়িতে এসে বাড়ির মূল দড়জা ভেতর থেকে তালা লাগানো দেখি। অনেক ডাকাডাকির পর কোন সাড়া না পেয়ে ওয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে শাড়ি দিয়ে হাত বাধা ও নাক-মুখে টেপ লাগানো অবস্থায় দাদুকে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখি। এসময় আমি ও আমার বন্ধু চিৎকার করতে থাকলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে হাতের বাধন ও নাক-মুখের টেপ খুলে শহরের কিনিকে নেয়। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত অতুল চন্দ্র রায়ের প্রতিবেশী (সম্পর্কে ভাতিজা) মনি ভুষন রায় (৩০) বলেন, একা বাড়িতে থাকার সুয়োগে দূর্বৃত্তরা ওই বাড়িতে ডাকাতি করেছে। ডাকাতির সময় তারা আমার কাকাকে শাড়ি দিয়ে হাত বেধে নাকে-মুখে টেপ লাগিয়ে দেয়। শ্বাস নিতে না পারায় কাকা অতুল চন্দ্র রায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। অতুল চন্দ্র রায়ের স্ত্রী দেবমায়া রাণী রায় বলেন, খবর পায়া আইতোত বাড়ি আসি দেখেছ মোর সবকিছু শ্যাষ হয়া গেইছে। মুই বাড়িত নাই এইলা কাথা (কথা) যায় জানে, সেইলা মাইনষি বাড়িত ডাকাতি করি মোর স্বামীক মারি ফেলাইছে। মুই এইলা ঘটনার বিচার চাও। দেবমায়া জানান, বাড়িতে ৫০ হাজার এবং ১৪ হাজার টাকা দুইটি স্থানে গচ্ছিত ছিল। দূর্বৃত্তরা বাড়ির আসবাবপত্র তননছ করে ওই ৬৪ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ডোমার থানার উপ-পরিদর্শক আরমান হোসেন বলেন, রাত আটটার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। সরেজমিনে দেখে ধারণা করা হচ্ছে ঘটনাটি বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মাধ্যে ঘটে পারে। বিকেল পাঁচটার পর গৃহকর্তার নাতি ও এলাকাবাসী ঘটনাটি জানতে পেরেছেন। তারা ওই গৃহকর্তাকে উদ্ধার করে শহরের কিনিকে নিলে মৃত্যুর বিষয়টি চিকিৎসক নিশ্চিত করেন। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। লাশ উদ্ধার করে আজ শুক্রবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় ৬৪ হাজার টাকা মিসিং এর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, এলাকাবাসী ঘটনাটিকে ডাকাতি বলে দাবি করলেও সেটি ডাকাতি নয়। ওই বাড়ির ৬৪ হাজার টাকা ছাড়া স্বর্ণালঙ্কার সহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিষপত্র সবই ঠিক আছে। কেবলমাত্র ওই টাকা ছিনতাইয়ের জন্য দূর্বৃত্তরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে গৃহকর্তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied