আসন্ন রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে রংপুর নগরীতে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। কে হচ্ছেন আগামী নগর পিতা এ নিয়ে চলছে বিভিন্ন হিসাব। কে কোন দলের মনোনয়ন পাচ্ছে এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে মুরাদ মাহমুদ এর বিশেষ প্রতিবেদনের আজ থাকছে দ্বিতীয় পর্ব…..
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন বর্তমান এমপি, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মশিউর রহমান রাঙ্গাকে দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে হিসাবে শাহরিয়ার আসিফ এর এমপি হওয়ার পদ অনেকটাই রুদ্ধ। এরশাদ পরিবারের সদস্য হিসাবে রংপুরে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে শাহরিয়ার আসিফ এর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা চায় এরশাদ পরিবারের সদস্যরা। তাকে এরশাদের উত্তরসূরী হিসাবেই ধরা হয়। রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে মনোনয়ন অনিশ্চিত হওয়ায় রংপুর সিটি কর্পোরেশনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নের দাবী করেন।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রার্থীতা নিয়ে চাচা এরশাদের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে গত ১৬ জুন হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ নিজেই নির্বাচনে অংশ গ্রহণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এসময় তিনি বলেন, ‘আমি আসন্ন রসিক নির্বাচনে দলীয় প্রতীক লাঙল প্রত্যাশী। তবে দলীয় প্রতীক না পেলেও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।’
জানাগেছে, এরশাদের পরিবারের সদস্যরা চায় রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদটি এরশাদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে থাক। আর সেটা না থাকলে আগামীতে রংপুরে এরশাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। কয়েকমাস আগে আসন্ন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নাম ঘোষণার পর থেকেই এরশাদের পরিবারের অনেকের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে বিদ্রোহ করেন শাহরিয়ার আসিফ।
এদিকে দলীয় সব চাপ উপেক্ষা করে গত ৫ জুলাই রংপুরের পীরে কামেল মাওলানা কেরামত আলী রহঃ মাজার জিয়ারতের মধ্যদিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন রসিক মেয়র প্রার্থী আসিফ শাহরিয়ার। এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রংপুর সিটি কর্পোারেশন নির্বাচনে মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে মনোনয়ন দেয়া এরশাদের ভুল সিদ্ধান্ত। মোস্তফা নির্বাচন করলে এবারেও মেয়র পদ হারাবে জাতীয়পার্টি। তাই দলের স্বার্থে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। জন্মসূত্রে রংপুরের নাগরিক হিসেবে দলীয় সার্বিক দিক বিবেচনা করে আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে লাঙল প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করার প্রত্যাশা করেন তিনি। তবে দলীয় প্রতীক না পেলেও তিনি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
এরপর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে আসিফকে কারণ দর্শনো নোটিশ প্রদান করেন এরশাদ। পরবর্তীতে আসিফকে জেলা কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয় এবং জেলা আহবায়ক কমিটি ভেঙ্গে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে আহবায়ক করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে জাপা চেয়ারম্যান। তবে এত সব বাধা উপেক্ষা করে শাহরিয়ার আসিফ এখনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অনঢ় অবস্থানে রয়েছেন। নগরবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে ইতিমধ্যে কয়েক দফায় পোস্টার সেটেছে নগরীজুড়ে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ চান না আসন্ন রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জয় লাভ করুক। কারণ মোস্তফা জয় লাভ করলে অদূর ভবিষ্যতে মেয়র পদে আর আসিফ এর মনোনয়ন পাওয়া সম্ভব হবে না।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ এর সাথে কথা বলতে কয়েক দফা চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
রসিক নির্বাচন সমাচার (পর্ব-১): ‘অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট’ অবস্থা আ.লীগে