জানা যায়, বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকি বিগত নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনদের প্রভাব খাটিয়ে অনেকটা জোর করেই ভোট নিয়ে নির্বাচিত হন। জয়লাভের কিছুদিন পর রুমকি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এর পর থেকেই শুরু হয় তার বেপরোয়া চলাফেরা।
সরকারি আজিজুল হক কলেজে ভর্তির নামে বহিষ্কৃত শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকার গত ১৭ জুলাই এক ছাত্রীকে তার বাড়িতে ধরে এনে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে তুফানের স্ত্রী আশা নির্যাতিত ছাত্রী ও তার মাকে উল্টো শাস্তি দিতে পৌরসভার কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকি ও মা রুমির সঙ্গে পরিকল্পনা করেন। গত ২৮ জুলাই মা ও মেয়েকে কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকি শ্লীলতাহানি, নির্যাতন শেষে নাপিত ডেকে চুল কেটে তাদের ন্যাড়া করে দেয়। এক প্রতিবেশী মা ও মেয়েকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করান। পরদিন ২৯ জুলাই ছাত্রীর মা বগুড়া সদর থানায় তুফানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পৃথক মামলা করে।
তুফানের কাছে ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে ও তার মাকে ডেকে এনে মাথা ন্যাড়া এবং নির্যাতনের দুটি মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি কাউন্সিলর রুমকি বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে চার্জশিটের বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ জানান, মা মেয়েকে নির্যাতন ঘটনায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় ১০ জন ও পেনাল কোডের (দণ্ডবিধির) মামলায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। দুটি চার্জশিটে তুফান সরকার প্রধান ও রুমকি চতুর্থ আসামি। তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, রুমকি চার্জশিটে অপহরণ ও অপরটিতে নির্যাতনের কারণে অভিযুক্ত হয়েছেন।
বগুড়ার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক সুফিয়া নাজিম জানান, পৌর কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।