[caption id="attachment_146302" align="aligncenter" width="792"] ছবি: রণজিৎ দাস[/caption]
স্টাফ রিপোর্টার: ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় দুই ইউপি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
এরা হলেন- রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জয়নাল আবেদিন ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফজলুল হক। গ্রেপ্তার দুইজনেই মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য। এ নিয়ে গত সাত দিনে দুই মামলায় ১৬১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাণ্ডবের ঘটনায় গঙ্গাচড়া ও কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। একটি ঠাকুরপাড়া গ্রামে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও মালামাল লুট করার ঘটনায়। অপরটি পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা প্রদান সংক্রান্ত। দুটি মামলারই বাদী পুলিশ।
মহানবীকে (সা.) নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি ও অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ এনে গত ৬ নভেম্বর রংপুর সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ গ্রামের মুদি দোকানি রাজু মিয়া গঙ্গাচড়া থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে টিটু রায়ের (৪০) বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। টিটু খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ গ্রামের মৃত খগেন রায়ের ছেলে। এরপর গত গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর টিটু রায়ের ফাঁসির দাবিতে শলেয়াশাহ বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে স্থানীয়রা। পরে কয়েক হাজার মানুষ ঠাকুরবাড়ি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। এ নিয়ে স্থানীয় মুসল্লি ও গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন পুলিশসহ ১৫জন।
পুলিশ জানায়, ঠাকুরপাড়ায় হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মূল সন্দেহভাজন ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলার সভাপতি এনামুল হক মাজেদী, খলেয়া ইউনিয়নের বিএনপি নেতা মাসুদ রানা, রংপুর জেলা পরিষদের প্রকৌশলী ফজলার রহমানসহ ইন্ধন ও অর্থের যোগানদাতাদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
গত মঙ্গলবার ভোরে টিটুকে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলনা চিড়াভিজা এলাকার তার এক আত্মীয় কৈলাশ চন্দ্র রায়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। টিটুকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার মামলাটি রংপুর ডিবি পুলিশের (উত্তর) কাছে স্থানান্তর করা হয়।জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরের উপ-পরিদর্শক বাবুল ইসলাম গঙ্গাচড়া আমলি আদালতে টিটুকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক দেবাংশু কুমার সরকার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।