সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি: শারীরিক প্রতিবন্দী পলি রানী স্বপ্ন জয়ে পা-দিয়ে লিখে পিইসিই পরীক্ষা দিচ্ছে। সে শারিরীক অক্ষমতা কে হার মানিয়ে গদাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া লেখা করে এবছর পিইসিই পরীক্ষা দিচ্ছে ।
সরেজমিনে কাউনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে কথা হয় পলী রানীর সাথে। সে জানায় তার দুই হাত ও দুই পা-ই অচল। জন্ম গত ভাবেই তার এ অবস্থা। বাড়িতে সে প্রথমে মায়ের সাহায্যে পা দিয়ে কলম ধরা শেখে এবং আসতে আসতে লিখতে শিখে। একদিন মাকে বলে স্কুলে যাওয়ার কথা। এর পর বাবা তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেয়। পা দিয়ে লিখে সে প্রথম শ্রেণী থেকে ৪র্থ শ্রেনী পর্যন্ত সফল ভাবে পাশ করে এবছর পিইসিই পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। অনেকে বলেছে এটা অসম্ভব, পলি সেই অসম্ভব কে সম্ভব করে দেখিয়েছে। তার বাড়ি নিজপাড়া গ্রামে। তার পিতা মনরঞ্জন চন্দ্র ক্ষুদে কাপড় ব্যবসায়ী ছিলেন ও মা রুপালী রানী গৃহিনী। তাদের ৬ ভাই বোনের মধ্যে সে সব ছোট সন্তান। ২০১৪ সালে তার বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। বাবাকে হারিয়ে সে খুব কষ্ট পেয়েছে। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই তার সাথে ভাল আচরন করতো। বিশেষ করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান তাকে খুবই আদর করেন। পলী জানায় বাবা মারা যাওয়ার পর তাদের সংসারে এখন খুবই অভাব। বড় ৩ ভাই পড়া লেখা করে। তাদের খরচ মায়ের পক্ষে চালানই কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে নিজে খেতেও পারে না, মা না খাইয়ে দিলে তাকে না খেয়ে থাকতে হয়। পলী জানায় পরিবার ও সমাজের বোঝা না হয়ে সে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে মাথা উচু করে দাঁড়াতে চায়। মাঝে মাঝে নিজের শারিরীক অক্ষমতা মনে কষ্ট লাগে কিন্তু স্কুলে গেলে সব ভুলে যেত। সে জানায় আমি পড়া শুনা করে দেশের জন্য কিছু করতে ও বাবার ইচ্ছা ও মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে চাই। ইচ্ছা থাকলে অনেক কিছু করা সম্ভব এমনই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে পলী রানী। তার স্বপ্ন পুরনে বাধাঁ এখন অর্থের অভাব। সমাজের বৃত্তবানরাই পারে তার স্বপ্ন পুরনে সহায়তা করতে। কাউনিয়ায় হাত ও পা এর অক্ষমতা সত্বেও পিইসিই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে পলী রানী। ৯৯