আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

ধুলোর শহর বুড়িমারী,১০ বছরের সিলোকোসিসে ৬৭ জনের মৃত্যু

রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০১৭, বিকাল ০৫:১৯

 নিয়াজ আহমেদ সিপন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি॥ লালমনিরহাটের একমাত্র বুড়িমাড়ী স্থলবন্ধর ধুলোর শহর হিসাবে পরিনিত হয়েছে। বর্তমানে সানগ্লাস আর মাক্স ছাড়া রাস্তায় চলাচল করা দুস্কর হয়ে পড়েছে। এ ধুলোর কারণে ১০ বছরের সিলোকোসিসে রোগে ৬৭জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানাগেছে। ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে বিদেশী নাগরিকরা এ স্থলবন্দর হয়ে প্রবেশ করেই দেশের পরিবেশ আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে নীতিবাচক ধারনা নিয়ে বাংলাদেশের মুলভুখন্ডে প্রবেশ করছে। বন্দর অতিক্রম করেই ধুলোয় নাক মুখ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। সার্বক্ষণিক ধুলোয় অন্ধকার থাকে এ বন্দরের রাস্তা ঘাটসহ পুরো জনপদ। নাম মুখ চেপে পথ চলতে হয় পথচারীদের। লালমনিরহাটের পাটহগ্রাম উপজেলা শহর থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর গামি পুরো মহসড়কের দুই পাশে খোলা আকাশের নিচে উন্মুক্ত পরিবেশে অসংখ্য পাথর ক্রাশ মেশিন। স্কুল কলেজ গামী শিক্ষার্থী, ওই এলাকায় কর্মরত জিও এনজিও কর্মী এবং পথচারীরা পড়েছেন বড় বিপাকে। এরই মধ্যে এলাকা ছেড়েছেন অনেকেই। বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তহমিনা আক্তার জানান, সানগ্লাস আর মাক্স ছাড়া বিদ্যালয় আসা- যাওয়াই শুধু নয় ক্লাশ করাও কষ্টকর। বিদ্যালয় থেকে ফিরেই পোশাক ধৌত করতে হয় তবুও সর্দি কাশি সর্বদায় লেগেই থাকে। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন সরকারী কর্মচারী জানান, শুধু ধুলোর কারনে ওই এলাকার দায়িত্ব পালনে কেউ যেতে চান না। এক দিন গেলে আর যেতে ইচ্ছে নেই। স্থলবন্দরের মত জনগুরুত্বপুর্ন এলাকা থেকে এসব পাথর ক্রাশ মেশিন সড়ানোর দাবি জানান তিনি। পুরুষরা দৈনিক ৩শত টাকা ও নারীরা ১৮০ টাকা মজুরীতে করছেন এমন ঝুকি পুর্ন কাজ। বুড়িমারী এলাকায় যত্রতত্র গড়ে উঠা এসব পাথর ক্রাশ মেশিনে শত শত শ্রমিক কাজ করছেন মাক্স বা বিশেষ পোশাক ছাড়াই। ফলে তারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন সিলোকোসিস রোগে। পাথরের সিলিকন মানব দেহে প্রবেশ করে লিভার ও ফুসফুসে জমাট বেঁধে শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। এ ভাবে মানব দেহে সিলোকোসি রোগের জন্ম দেয়। পরে আস্তে আস্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে পাথর ক্রাশ মেশিনের শ্রমিকরা। গত ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত সিলোকোসিসে এ এলাকার ৬৭জনের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা ঠাকুরপাড়া এলাকার দুলাল হোসেন (৩৫) নামে একজন শ্রমিক সিলিকোসিস রোগে মারা যান। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন অনেকেই। সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত ভিক্টোরিয়া মোজাইক ফ্যাক্টরীর পাথর ভাঙা শ্রমিক আজানুর রহমান(৩০), আইয়ুব আলী(২৮) জানান, প্রথমে শ্বাস কষ্ট পরীক্ষা করে জানতে পারেন সিলিকোসিস রোগ হয়েছে। বহুদিন ধরে চিকিৎসা নিলেও কার্যত কোন উন্নতি হচ্ছে না। দিন দিন এই রোগে আক্রান্ত শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়ছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেইফটি এন্ড রাইটস সোসাইটির সহযোগীতায় ৬ নভেম্বর বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে এসব শ্রমিকদের মধ্যে সিলিকোসিস রোগে আক্রান্তদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পরামর্শ প্রদান ও বিনামূল্যে ওষুধ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ধুলো বালি না উড়তে পর্যাপ্ত পানি ব্যবহারে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করছেন না কোন প্রতিষ্ঠানই। ফলে বুড়িমারী জনপদের প্রতিটি মানুষ সিলোকোসিসের মত মরন ব্যাধীর ঝুঁকিতে রয়েছেন। জনবসতিহীন এলাকায় এসব পাথর ক্রাশ মেশিন সড়িয়ে নেয়ার দাবি সাধারন মানুষের। বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ নিশাত জানান, ধুলো না উড়তে প্রতিটি পাথর ক্রাশ মেশিনে ও আশপাশ এলাকায় পর্যপ্ত পানি ঢালার নির্দেশনা দেয়া হলেও অনেকেই মানছেন না। এসব মেশিন জনবসতিহীন স্থানে নিতে প্রয়োজনীয় জায়গা খুঁজা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) নুর কুতুবুল আলম জানান, যেসব পাথর ক্রাশ মেশিন পানি না ছিটিয়ে পাথর ভাংছেন বা শ্রমিকদের মাক্স ব্যবহার হচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে প্রায় সময় ভ্রাম্যমান আদালত পারিচালনা করে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। তবে পাথর ভিজিয়ে মেশিনে তুলতে ও শ্রমিকদের মাক্স ব্যবহারে বাধ্য করা হচ্ছে। তবে জনবসতিহীন স্থানে এসব সড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন


 

Link copied