সন্তানকে দেখতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে অাত্মহত্যা করেছে তৈরী পোষাক কারখানার কর্মী জুয়েল ইসলাম(২৮)।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে নীলফামারী সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামে। জুয়েল ওই গ্রামের কৃষক অলিয়ার রহমানের ছেলে। দুপুরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
কচুকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ জানান, জুয়েলের সঙ্গে পাশ্ববর্তী জলঢাকা উপজেলার বামনাবামনি গ্রামের মকবুল হোসেনের মেয়ে মমতা বেগমের বিয়ে হয় তিন বছর আগে। জুয়েল ঢাকার একটি তৈরী পোষাক কারখানার কর্মী। তাদের ৫ মাস বয়সের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন ছুটি না পেয়ে বাড়ি আসতে না পারায় তার স্ত্রী কন্যা সন্তান নিয়ে অভিমানে বাবার বাড়ি চলে যায় দুই মাস আগে।
এ অবস্থায় গত দুই দিন আগে জুয়েল ঢাকা হতে নিজবাড়ি ফিরে। স্ত্রীকে সন্তান নিয়ে তার বাড়িতে আসার জন্য জানালেও স্ত্রী আসেনি। ফলে গতকাল বুধবার (৩১ জানুয়ারী) বিকালে জুয়েল শ্বশুড় বাড়ি যায় স্ত্রী ও সন্তানকে নিজবাড়িতে নিয়ে আসার জন্য।
জুয়েলের বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, রাত ১০টার দিকে ছেলে একাই বাড়ি ফিরে এসে তাকে জানায় তার স্ত্রী রাগ করেছে সে আসবেনা। এমনকি তার মেয়ে সন্তানকে দেখতে চেয়েও দেখতে পায়নি। এ নিয়ে সে কান্নাকাটি করছিল। তাকে শান্তনা দিয়ে রাতে বাপ বেটা এক বিছানায় ঘুমাই।
সকালে উঠে আমি জমিতে বোরো আবাদে চলে যাই। এমন সময় খবর পাই জুয়েল ঘরের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়েছে। ছুটে এসে দেখি তার নিথর দেহ ঝুলছে। আমার বউমা যদি এমন কান্ড না করতো তাহলে আমার ছেলে মৃত্যুর পথ বেছে নিতনা।
অপর দিকে স্বামীর আত্মহত্যার খবর পেয়ে সন্তান নিয়ে ছুটে আসা স্ত্রী মমতা বেগম আহাজারীতে বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিল। জ্ঞান ফিরতেই বলে উঠছিল “এমন ভুল মুই ক্যানে স্বামীর উপর রাগ করনু। এমন ভুল আর কাহো করেন না। মোর ভুলত মুই আইজ স্বামী হারানু।
এদিকে জুয়েলের পরিবার মরদেহের ময়না তদন্তের আপক্তি জানালেও জুয়েলের শ্বশুড়বাড়ির লোকজন এটি মানতে নারাজ। তারা জুয়েলকে হত্যার অভিযোগ তুলেছে। সেই সঙ্গে বিয়ের সময় জামাইকে দান দক্ষিনা ফেরতের দাবি তোলে। ফলে দেখা দেয় ঝামেলা। তাই সকল ঝামেলা এড়াতে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে বিকালে।
নীলফামারী থানার এস আই হারেস উদ্দিন জানান, দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি। সুরতহালে আত্মহত্যার আলামত পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ছেলে পক্ষ ময়না তদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাবি করলেও ছেলেটির শ্বশুড়বাড়ি পক্ষ দাবি দাওয়া সহ বিভিন্ন ঝামেলা সৃস্টি করে। এখন মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে তাদের হস্তান্তর করা হবে।