আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ● ৫ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল       সার্ভার ডাউন: রসিকে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে ভোগান্তি চরমে       রংপুরে ফটোসাংবাদিক ফিরোজ চৌধুরীর একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী       ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নির্বাচনে ৩৫ জনের প্রার্থীতা বৈধ ॥ চেয়ারম্যান পদে ১২ জনের মধ্যে আওয়ামীলীগের ৭ জন প্রার্থী       নীলফামারীতে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালন      

 width=
 

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির যত খামখেয়ালীপনা

শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, দুপুর ০৪:১৮

জানা গেছে, উদ্বোধনী সমাবর্তন নামে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে একটি অনুষ্ঠান করে গত ৩১ জানুয়ারি। আর এ উপলক্ষে একটি জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয় ২ ফেব্রুয়ারি। নবীনবরণ অনুষ্ঠানকে উদ্বোধনী সমাবর্তন বলা, অনুষ্ঠানের দুদিন পর ক্রোড়পত্র প্রকাশ এবং ক্রোড়পত্রে প্রধানমন্ত্রীর কোনো বাণী না থাকা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এ ছাড়া উদ্বোধনী সমাবর্তনের নামে যে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে সেই ক্রোড়পত্রে অনুষ্ঠানের স্থানের নামও যেমন উল্লেখ ছিল না তেমনি ক্রোড়পত্রে অনুষ্ঠানের তারিখ উল্লেখ ছিল না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম গতকাল বলেন, এটা তো নতুন শুনলাম। সমাবর্তন অনুষ্ঠান করা হয় স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের নিয়ে। নবীনবরণ অনুষ্ঠানকে সমাবর্তন বলা তো অন্যায় এবং নিন্দনীয়। আর এ জন্য ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হলে তা সরকারি অর্থের অপচয়।

সূত্রে আরও জানা গেছে, উদ্বোধনী সমাবর্তনে যাকে বক্তা করা হয়েছে তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবুল কাশেম মজুমদার। বাংলাদেশে অনেক জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তি থাকতেও বেরোবির উপাচার্য তার চেয়েও কম যোগ্যতাসম্পন্ন একজনকে সমাবর্তন বক্তা করেছেন। এটা কীভাবে সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। সাধারণত, যারা সমাজে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-দর্শন-বিজ্ঞান-অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখেন তাদেরই করা হয় সমাবর্তন বক্তা। অধ্যাপক ড. এম আবুল কাশেম মজুমদারের পরিচিতি সমাজের কোন অংশের প্রতিনিধিত্বশীল এখন ঘুরেফিরে সে প্রশ্নই আসছে। নাকি রোকেয়ার উপাচার্য ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ তার সাবেক কর্মস্থলের কাউকে নিয়ে আসাটাকে আগে থেকেই টার্গেট করে রেখেছিলেন, এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া প্রকাশিত ক্রোড়পত্রে রাষ্ট্রপতির ছবি এবং বাণীর পর সমাবর্তন বক্তার ভাষণ। শিক্ষামন্ত্রীর বাণী তার পরে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বাণী নিচে। এই ধারাবাহিকতা কতটুকু যৌক্তিক তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সমাবর্তনের আহ্বায়ক ড. মো. গাজী মাজহারুল ইসলামের প্রকাশিত ছবি শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসি চেয়ারম্যান, উপাচার্য, সমাবর্তন বক্তার ছবির চেয়ে বড়! সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের (প্রথম বর্ষ) শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে অনুষ্ঠান (উদ্বোধনী সমাবর্তন) করা হয় তার জন্য ১৭ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের স্থান হলেও স্থান হয়নি শিক্ষকদের বড় একটি অংশের।  কমিটির আহ্বায়ক করা হয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে। কিন্তু সদস্য সচিব করা হয় শিক্ষক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধানকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র অনেক শিক্ষক থাকতেও কেন জুনিয়র এবং বিতর্কিত কাউকে সদস্য সচিব করা হলো ঘুরেফিরে আবার আসছে সে প্রশ্ন। তাবিউর অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়ার পর এখন একটি বিভাগের শিক্ষক ছাড়াও প্রশাসনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ তিনি দখলে রেখেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপাচার্য লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে মোট পাঁচটি জার্নাল প্রকাশ করেছেন। এ জার্নালের প্রধান উদ্দেশ্য নিজের সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) কর্মীদের লেখা প্রকাশ করার সুযোগ করে দেওয়া। এ পর্যন্ত প্রকাশিত পাঁচটি জার্নালের অধিকাংশ লেখক জানিপপের। এই জার্নাল তিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাধ্যতামূলক বিক্রি করেন। এ জার্নালগুলো প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভাগীয় শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ পর্যন্ত করেননি উপাচার্য। অথচ লোকপ্রশাসন বিভাগের অর্থে এগুলো তিনি প্রকাশ করেছেন।

উপাচার্য পড়ান ১৩ কোর্স সূত্র আরও জানায়, উপাচার্য নিজেই আগ্রহ করে মোট ১৩টি কোর্স পড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। ১৩টি কোর্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, সপ্তাহে ২৬টি নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার কথা। এ ছাড়াও মোট ৭৮টি পরীক্ষা নেওয়ার কথা। আবার এ খাতাগুলো মূল্যায়ন করার কথা। কিন্তু তিনি এগুলোর কোনোটি যথাযথভাবে পালন করছেন না। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি (উপাচার্য) তো ক্যাম্পাসেই থাকেন না। তাহলে এসব শিক্ষার্থীদের তিনি কী শেখাচ্ছেন? লোক প্রশাসন বিভাগে তার মোট কোর্স চারটি। লোক প্রশাসন বিভাগকে অন্য বিভাগ অফার করেছে এরকম আরও তিনটি কোর্স তিনি নিয়েছেন। সমাজবিজ্ঞান বিভাগসহ আর অন্য বিভাগ মিলে ৫টি কোর্স তিনি পড়ানোর জন্য নিয়েছেন। কিন্তু তিনি এসব কোর্সে ক্লাস নেন না। যেমন লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের এমএসএস সেমিস্টার শুরু হয়েছে গত বছর ৯ আগস্ট। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি ক্লাসই শুরু করেননি। উপাচার্যের কারণে শুধু প্রশাসনিক নয়, একাডেমিক সেশনজটও সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের উদ্বোধনী ক্লাসগুলোয় তিনি গিয়ে নিজের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে সবাইকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর নির্দেশ দেন বলেও উপাচার্যেও বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। গত ৩১ জানুয়ারি নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলেও সেই শিক্ষার্থীদের তিনি কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে ডেকে এনে জার্নাল বিক্রি করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া উপাচার্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সিটিং অ্যালাউন্সের নামে অনেক টাকা অনিয়ম করে ব্যয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নিয়োগ গত বছর ৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন চিঠিতে জানিয়েছে, যে কোনো নিয়োগ দিতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু এ নির্দেশনা অনুসরণ করেনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮ জন আনসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদিও এ আনসারের প্রয়োজন ছিল না। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন ব্যক্তিগত গাড়িচালককে। কয়েকজনকে চুক্তিভিত্তিক এবং মাস্টাররোলে নিয়োগে দিয়েছেন। মাস্টাররোল এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়াগে যে নিয়োগ বোর্ড গঠন করেছেন তা নজিরবিহীন। কর্মচারীও সেই নিয়োগ বোর্ডের সদস্য। এর মধ্যে পিএস টু ভিসি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ ভর্তি পরীক্ষায় অবৈধ অর্থ গ্রহণের দায়ে উচ্চ তদন্ত কমিটির সুপারিশে সাজাপ্রাপ্ত। আবুল কালাম আজাদকে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব করা হয়েছে।

উপাচার্যের বিধি ভঙ্গ রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্য এবং রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ চার বছরের জন্য তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন গত বছরের ১ জুন। নিয়োগ পাওয়ার ১৩ দিন পর ১৪ জুন তিনি প্রথম ক্যাম্পাসে আসেন। এরপর তার সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে থাকার কথা থাকলেও তিনি ক্যাম্পাসে প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন। বেরোবিতে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১৭ সালে ৭ মাসে উপাচার্য মোট ১৯৯ কার্যদিবসে ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৫৪ দিন। তিনি যে ৫৪ দিন ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন তাও বেশিরভাগ সকালে ঢাকা থেকে বিমানে গিয়ে রাতে আবার বিমানে ঢাকায় চলে আসেন। মাঝেমধ্যে তিনি ক্যাম্পাসে রাতে অবস্থান করতেন। আর ১৪৫ কার্যদিবস তিনি ক্যাম্পাসেই যাননি। চলতি বছরের প্রথম ১৩ দিনে তিনি ক্যাম্পাসে গেছেন দুদিন। উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২০ ঘণ্টা। গত ১০ জানুয়ারি ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এদিনও তিনি ক্যাম্পাসে ছিলেন না। দিবসটি উপলক্ষে সারা দেশে জেলা-উপজেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। দিবসটিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া ছাড়া আর কোনো কর্মসূচি ছিল না। কারণ, উপাচার্য ক্যাম্পাসে ছিলেন না। কর্মসূচি পালিত না হাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইবরাহীম জানান, উপাচার্য যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা সেভাবেই কাজ করেছি।

শুধু বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস নয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও ক্যাম্পাসে ছিলেন না ভিসি, যদিও ক্যাম্পাসে বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠানের ব্যানারে তার নাম ছিল এবং তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল। আর বিজয় দিবসে র‌্যালি উদ্বোধন করেই তিনি ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। প্রতিবছর বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হলেও এ বছর তা হয়নি। এতে ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, দিবসটি পালনে প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা ছিল না। তিনি বলেন, দু-একটি সংগঠন বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু প্রতিবছর যেভাবে কেন্দ্রীয়ভাবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছিল, এ বছর তা হয়নি। তার দাবি, উপাচার্য ক্যাম্পাসে না থাকায় দিবসটি পালনে আগ্রহ দেখায়নি প্রশাসন।

জানা গেছে, একজন ব্যক্তি উপাচার্য থাকাকালে অন্য কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না, যা অধিক সময় ব্যয় হয়। কিন্তু ডক্টর কলিমউল্লাহ সে নিয়মও ভঙ্গ করেছেন। তিনি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। জানা গেছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর তিনি একটি নির্বাচনী পর্যবেক্ষক গ্রুপের হয়ে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি নিজেকে বেরোবির উপাচার্য হিসেবে পরিচয় দেননি। তিনি নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য হিসেবে। যা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য খুবই অপমানজনক।

সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, একজন উপাচার্যের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, পরে অন্য পরিচয়। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের পরিচালক ড. মো. আব্দুল আলীম, সদস্য মো. আব্দুল আউয়াল ও মো. হারুন-অর রশিদও উপস্থিত ছিলেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের রংপুর মহানগরীর সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ খন্দকার আবুল হাসনাত ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান বাধ্যতামূলক। সে জন্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক-কর্মচারীদের বাসভবন নির্মাণের আগেই ভিসির বাসভবন নির্মাণ করে দেন যাতে উপাচার্য সেখানে অবস্থান করতে পারেন। তিনি বলেন, উপাচার্য সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জালিয়াতি, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের সৃষ্টি হতে পারে এবং রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সেটিই ঘটেছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এখন নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর ভর্তি জালিয়াতিতে পরিণত হয়েছে।

মানবাধিকার ও পরিবেশ আন্দোলনের (মাপা) প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এ এ এম মুনীর চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের উপস্থিতি একান্ত জরুরি। তিনি ক্যাম্পাসে না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। আগের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নূর উন নবীও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান না করায় স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটেছিল। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসিও রংপুরে না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ দিবস তথা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষণীয় অনেক বিষয় জানা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তিনি বর্তমান উপাচার্যের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত হওয়ার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, তিনি নবীনবরণ বলে বাণী দিয়েছেন। উদ্বোধন সমাবর্তন হবে এ ধরনের কোনো বিষয়ে তিনি কোনো বাণী দেননি।

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে গতকাল রাতে ফোন দিলে রিসিভ করেননি। এসএমএস দিলে তারও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

তথ্য সূত্র: দৈনিক খোলা কাগজ

মন্তব্য করুন


 

Link copied