আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর      

 width=
 

রংপুরে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থী

শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, রাত ০৮:৩৪

চলতি বছরেও রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ, কমিউনিটি মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজেগুলোতে কয়েকশ’ বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, অন্যান্য দেশের তুলনায় কম খরচ, মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় কম হওয়ার কারণেই তারা রংপুরে আসছেন। বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের দাবি শিক্ষার পরিবেশ ও মানসম্মত শিক্ষাদানের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুনাম বেড়ে চলেছে। ইতোপূর্বে জর্ডানসহ অন্য দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষা জীবন শেষ করে ফিরে গেছেন।

চিকিৎসা শাস্ত্রে পড়াশোনা করতে রংপুরকে বেছে নিয়েছেন নেপালের সেইঞ্জা প্রদেশের শিক্ষার্থী কেষব রোকা। প্রায় পাঁচ বছর ধরে তিনি রংপুরের প্রাইম মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছেন। এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই নগরীর সঙ্গে তার গড়ে উঠেছে হৃদ্যতা। আপন করে নিয়েছেন এখানকার মানুষজন, ভাষা ও সংস্কৃতিকে। কেষব রোকা বলেন, বাংলাদেশ আমার পছন্দের জায়গা। এ দেশের পড়াশোনার পরিবেশ সুন্দর। বিশেষ করে মেডিকেল সায়েন্সে পড়াশোনার মান খুব ভালো। সেই সঙ্গে খরচও অনেক কম। তাই এখানে পড়তে এসেছি। তিনি আরো বলেন, এখানকার শিক্ষকরা বন্ধুভাবাপন্ন এবং মানুষ অত্যন্ত অতিথিপরায়ণ। শিক্ষার্থীরা সহজেই একে অন্যের সঙ্গে মিশতে পারেন। তাই কলেজের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় না। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি না হয়ে রংপুরে কেন ভর্তি হয়েছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিশেষ করে দেশের সঙ্গে যাতায়াতের সুবিধার কারণে রংপুরে থাকা। তাছাড়া এখানকার জলবায়ু, জীবনাচরণ, সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাসে অনেক মিল রয়েছে। তিনি বলেন, এখানে থাকতে থাকতে এখানকার ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গিয়েছি। বেশি ভাগ সময়েই বাংলা ভাষায় কথা বলছি। আমাকে দেখে বাংলাদেশিই মনে হয়। অনেকেই আমাকে বিদেশি মনে করে না।

ভারতের কাশ্মীর অঞ্চল থেকে রংপুরে পড়তে এসেছেন আসেম আবু বকর, ওমর সালামসহ বেশ কয়েকজন। কথা হয় তাদের সঙ্গে। তারা রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশে কেন পড়তে এসেছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, ভারতের মেডিকেল কলেজগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজের টিউশন ফি অনেক কম এবং পড়াশোনার মান অনেক ভালো। তাই এখানে পড়তে এসেছি। এখানে পড়তে বেশ ভালোই লাগে।

মালদ্বীপ থেকে পড়তে আসা রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মরিয়ম সাজনা ও আমেনাত নাজদা বলেন, আমাদের দেশে কোনো মেডিকেল কলেজ নেই। তাই মেডিকেল সায়েন্সে পড়তে বাংলাদেশে এসেছি। এশিয়ার অন্যান্য দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে কেন এসেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, এদেশের মেডিকেল সায়েন্সে পড়াশোনার মান অত্যন্ত ভালো। সেই সঙ্গে খরচও অনেক কম। এছাড়া অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আসা সহজ হয়। সার্কভুক্ত রাষ্ট্রের জন্য কোটা আছে। আর কলেজে ভর্তি হতে তেমন একটা জটিলতা নেই। তাই এদেশে পড়তে এসেছি।

তারা আরো বলেন, এর আগেও আমাদের দেশ থেকে বাংলাদেশে মেডিকেল সাইন্সে পড়াশোনা করতে অনেকে এসেছেন। তারা দেশে ফিরে গিয়ে অনেক ভালো ভালো জায়গায় চাকরি করছেন। এদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক ভালো উল্লেখ করে তারা বলেন, এখানে স্বাধীনভাবে সব জায়গায় চলাফেরা করা যায়। কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। এদেশের মানুষের ব্যবহার অত্যন্ত ভালো। দেশে ফিরে গেলে এদেশের মানুষকে অনেক মিস করবো।

এ কলেজে নেপাল থেকে পড়তে আসা আসমিতা, ভারত থেকে আসা শহিদুল হক ও বিদ্যা রানীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি তুলনামূলকভাবে অনগ্রসর। বিশেষ করে মেডিকেল সায়েন্স ক্ষেত্রে এদেশের প্রযুুক্তি অনেকখানি পিছিয়ে রয়েছে। এখানে শিক্ষক ও ফিজিশিয়ানরা যথেষ্ট সময় দিয়ে পড়ান এবং প্র্যাকটিকেলি সবকিছু বুঝিয়ে দেন ঠিকই। তবে আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রে পড়াশোনার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। কিন্তু এখানে সেগুলোর যথেষ্ট অভাব।

ভুটানের দাগানা অঞ্চল থেকে পড়তে আসা শিক্ষর্থী ফুরবা বানচু বলেন, এখানকার পড়াশোনার পরিবেশ ভাল। বাইরের অনেক ছাত্রের সঙ্গে আমি বন্ধুত্ব করেছি। দূরবর্তী দেশগুলো থেকে আসা বন্ধুদের সঙ্গে পড়াশোনা আমাকে বহির্মুখী ও আত্মবিশ্বাসী বানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা অনুসারে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই মোট আসনের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানভেদে ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার ফি আদায় করা হয় পাঁচ বছরের জন্য।

শিক্ষাবিদ ডক্টর তুহিন ওয়াদুদ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষত বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বাড়াতে পারলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য লাভজনক হতে পারে। কারণ দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি বছরই ব্যাপক সংখ্যায় আসন ফাঁকা থাকছে। আসন থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না। এই শূন্য আসনগুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা গেলে তা অর্থনীতির জন্য লাভজনক বলেই বিবেচিত হবে। দেশে বাড়বে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ।

মন্তব্য করুন


 

Link copied