রাফি সৈয়দপুর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে পড়তেন। পরিবারের একমাত্র সন্তান হওয়ায় রাফির মৃত্যুতে তাঁর বাবা-মাসহ পরিবারে শোক চলছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের করতোয়া নদীরপাড় ময়নামতির চরে দুই বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে রাফির মৃত্যু হয়। দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাঁর দুই বন্ধু উপজেলা সদরের পাটোয়ারীপাড়ার ইব্রাহীম হোসেন রনি (১৯) ও মুন্সিপাড়ার শরিফ খান পুলক ওরফে আরাফাতকে (১৯) গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। রাফির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ইব্রাহীম হোসেন রনি ও শরিফ খান পুলক নামের দুই বন্ধুর সঙ্গে রাফি নৌকায় করে করতোয়া নদীর ময়নামতির চরে বেড়াতে যান। সন্ধ্যায় নৌকা না পেয়ে হেঁটেই ফিরছিলেন তিন বন্ধু। হঠাৎ গভীর পানিতে তলিয়ে যান রাফি। এ সময় বন্ধুরা তাঁকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু সায়েম রাফিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে রাফির পরিবার দাবি করেছে, মঙ্গলবার বিকেলে রাফিকে তাঁর বন্ধু রনি ও পুলক উপজেলা সদরের করতোয়া নদীর ময়নামতির চরে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করার পর সন্ধ্যায় দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে।
নিহতের চাচা মনিরুল ইসলাম জানান, টাকা-পয়সা হোক বা যে কোনো কারণে রাফির সঙ্গে তাঁর দুই বন্ধুর ঝগড়াবিবাদ বা দ্বন্দ্ব হয়েছিল। সেখানে তাঁরা রাফিকে বালুতে চেপে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, কলেজছাত্র রাফির লাশের প্রাথমিক সুরতহালে আঘাত বা কাটা ছেড়ার কোনো চিহ্ন ছিল না। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। সন্দেহজনক হিসেবে তাঁর দুই বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।