আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

কর্মস্থলে থাকেন না ৬০% চিকিৎসক

সোমবার, ১২ মার্চ ২০১৮, সকাল ০৯:৫০

নাফিজ ইমতাজ সমকালকে জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ইনডোরসহ সবকিছুই তাকে সামাল দিয়ে হয়। এতে রোগীর সেবা নিশ্চিত করা কঠিন। হাসপাতালের শূন্য পদগুলো পূরণ হলে এবং নিয়োগপ্রাপ্তরা কাজে যোগ দিলেই সম্ভব রোগীর সেবা নিশ্চিত করা।

অনুপস্থিতির কারণ সম্পর্কে জানতে ডা. মাজেদুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, 'ডিপার্টমেন্টাল একটু সমস্যা আছে, তাই কাজে যাচ্ছি না'। কী ধরনের সমস্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সব সমস্যা কী বলা যায়?' এর পর তিনি ফোন কেটে দেন।

শুধু নেত্রকোনার মদন উপজেলা নয়, সারাদেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসক অনুপস্থিতি ব্যাপক আকার ধারণ করছে। সরকারি হিসাবেই ৬০ শতাংশ চিকিৎসক কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। তবে ১ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এক হিসাবে দেখা গেছে, ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ চিকিৎসক কর্মস্থলে অনুপস্থিত। কোনো কোনো উপজেলা একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে। আবার কোনো উপজেলায় বাই রোটেশনে চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করেন। উপজেলায় পদায়ন করা হলেও উচ্চ পর্যায়ে তদবির করে অনেকে প্রেষণে অথবা সংযুক্তি নিয়ে পছন্দমতো কর্মস্থলে চলে যান। আবার অনেকে অনুমতি ছাড়াই বছরের পর বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোও ফাঁকা পড়ে আছে।

এ পরিস্থিতিতে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্সের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপজেলায় চিকিৎসক অনুপস্থিতির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উপজেলায় থাকতে না চাইলে তিনি চিকিসকদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ারও আহ্বান জানান; কিন্তু এতেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

অনুপস্থিতির চিত্র : সমকাল সম্প্রতি ১০ জেলার সদর হাসপাতালগুলোয় এবং ৮১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখতে পেয়েছে, নির্ধারিত পদের বিপরীতে মাত্র ৩৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ চিকিৎসক কর্মস্থলে রয়েছেন। তবে সরকারি হিসাবে পদায়নকৃত চিকিৎসকদের মধ্যে ৬০ শতাংশ কর্মস্থলে উপস্থিত থাকছেন না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। গত বছরের ১ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এক মাসের হিসাব পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। আট বিভাগের আওতায় সরকারি ৪৭০টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। ওই পর্যালোচনা অনুযায়ী জুলাই মাসে তাদের উপস্থিতির হার ছিল ৪১ দশমিক ২৫ শতাংশ। সর্বোচ্চ খুলনায় ৪৭ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ময়মনসিংহে ৩১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। তবে অবাক করার মতো তথ্য হলো, ঢাকা বিভাগেও চিকিৎসকদের উপস্থিতির হার সন্তোষজনক নয়। ঢাকায় এ হার মাত্র ৪২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর পর পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রামে ৩৭ দশমিক ৪০, রংপুরে ৪০ দশমিক ৬১, রাজশাহীতে ৪০ দশমিক ৯০, বরিশালে ৪১ দশমিক ৯২ এবং সিলেটে ৪২ দশমিক ৯১ শতাংশ চিকিৎসক উপস্থিত থাকছেন।

কর্মস্থলে চিকিৎসকদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছে। উপসচিব খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে কর্মস্থলে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে অধিদপ্তরকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

মনিটর কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছরের মে ও জুনের তুলনায় জুলাই মাসে উপস্থিতি কমেছে। এ বিষয়টিকে চিঠিতে 'হতাশাজনক' বলা হয়। চিকিৎসকসহ অন্য সেবাকর্মীদের অনুপস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যসেবায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটেছে জানিয়ে চিঠিতে সব বিভাগীয় পরিচালককে সমস্যা সমাধানের উপায়সহ ব্যাখ্যা তলব করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

তবে অন্তত পাঁচজন সিভিল সার্জন সমকালকে বলেন, কর্মস্থলে চিকিৎসক অনুপস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সংকট দূর করার আবেদন জানিয়ে প্রতি মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়; কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায় না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তদারকি করা হয়। এ হিসাব ধরে উপস্থিতি পুরোপুরি নিরূপণ করা সম্ভব নয়। কারণ কাউকে বদলি করা হলে আগের ও বর্তমান কর্মস্থলের হিসাব নিরূপণ করা কিছুটা সময়সাপেক্ষ। এ কারণে অনেকে হাজিরা দিতে পারেন না। মাঠপর্যায়ে চিকিৎসক উপস্থিত রাখা সবসময়ই একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়।

আগের তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে দাবি করে মহাপরিচালক বলেন, গ্রামে চিকিৎসক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেখানকার চিকিৎসকদের প্রণোদনার পাশাপাশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। নিয়মিত বাই রোটেশনে পদায়ন করা হবে। তখন সমস্যা কেটে যাবে।

তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে কোনো হাসপাতালে সংযুক্তি পদায়ন থাকবে না। খুব শিগগির এটি বাতিল করা হবে। কর্মস্থলে অনুপস্থিত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।

খবর-দৈনিক সমকাল

মন্তব্য করুন


 

Link copied