মহানগর প্রতিনিধি।। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) সাংবাদিক প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেট দিয়ে সাংবাদিক প্রবেশ করতে গেলে অলিখিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উঠে আসে। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরের এক কর্মকর্তার নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত আরোপ করা হয়েছে বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৮ এপ্রিল) একুশে টেলিভিশনের রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি ও দৈনিক সংবাদ পত্রিকার রংপুরের স্টাফ রিপোর্টার লিয়াকত আলী বাদল, দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি তপন কুমার রায় এবং একুশে টিভির ক্যামেরাপার্সন আলী হায়দার রনি মটরসাইকেল যোগে ক্যাম্পাসের ২ নং গেট দিয়ে প্রবেশের সময় বাধা দেয় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা। প্রবেশে বাধা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে উপরের নিষেধ আছে বলে জানায় তারা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল বলেন, আজ ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার নির্মাণ কাজ চলমান শেখ হাসিনা হলের কাজ বন্ধ থাকার সংবাদ সংগ্রহ করতে প্রকৌশলী দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ হোসাইন পাটোয়ারীকে এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে কল করলে আজ বুধবার ক্যম্পাসে আসতে বলেন। সে অনুযায়ী, তার বক্তব্য নিতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে আমাকে আটকিয়ে দিয়ে নিরাপত্তা প্রহরীরা বলে ক্যাম্পাসে সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সাংবাদিক প্রবেশে করতে না দেওয়ার জন্য আমাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরে আমি শরীফ পাটোয়ারীকে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। রংপুরের সিনিয়র সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল পরে বিবৃতি না নিয়েই বিব্রত হয়ে ক্যম্পাস ছেড়ে চলে যান।
এ ঘটনা শুনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি ( বেরোবিসাস) এর সভাপতি এইচ. এম নুর আলম নিজের পরিচয় দিয়ে ঢুকতে চাইলেও তাকেও নিষেধ করা হয়। তবে শিক্ষার্থী হিসেবে পরে সে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে।
এ বিষয়ে আনসারদের প্লাটুন কমান্ডার জিয়াউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল রাতে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ হোসাইন পাটোয়ারী আমাকে কল দিয়ে বলেন, কেউ ক্যামেরা নিয়ে (সাংবাদিক) প্রবেশ করতে চাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে বলবেন।
বিষয়টি নিয়ে প্রক্টর ড. ফরিদ উল ইসলামকে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শরীফ হোসাইন পাটোয়ারীকে বারবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। কল কেটে দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুহিব্বুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। অবশ্যই সাংবাদিক ঢুকতে পারবে।
এদিকে একজন কর্মকর্তা কিভাবে এমন সিদ্ধান্ত দিতে পারে তা নিয়ে সমালোচনর মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে রংপুরের বিভিন্ন সাংবাদিক মহল।