আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

 width=
 
শিরোনাম: রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর       কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি      

 width=
 

দূর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি নীলফামারীর কালবৈশাখির ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজার পরিবার

শনিবার, ১২ মে ২০১৮, বিকাল ০৭:৫৯

নীলফামারীর ডোমার, ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলায় গত বৃহস্পতিবার (১০ মে) রাতের কালবৈশাখীর ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০ হাজার পরিবার। ঝড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্তসহ এসব পরিবারের ১৭ হাজার পাঁচশ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। ওই ঝড়ের কবলে পড়ে ৯৬ হাজার পরিবার বিদ্যুৎ বিহীন রয়েছে। এমন ক্ষয়ক্ষতিতে ডোমার ও ডিমলা উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার। আজ শনিবার দুপুরে জেলার ডোমার উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে দূর্যোগ পরবর্তী মত বিনিময় সভা ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই দাবি জানান। তিনি দাবি করে বলেন, ‘ওই ঝড়ে ডোমার উপজেলার নয়টি এবং ডিমলা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কৃষক ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিভাবে ওই ক্ষতির মোকাবেলা করবেন সে পথ খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। বিষয়টি সরকারের উচ্চ মহলে তুলে ধরা জরুরী। এক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সংবাদ মাধ্যমের ভুমিকা অপরিসিম।’ তিনি বলেন,‘গরিব-ধনী, ছোট-বড় কৃষক সকলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ব্যাংক ঋণ, এনজিও ঋণ ও বাকিতে সার বীজ, কীটনাশক কিনে সেচ নির্ভর বোরো ধান আবাদ করেছেন কৃষক। ধান হারিয়ে ঋণ ও সেচকাজে ব্যবহার করা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার সামর্থ হারিয়ে ফেলেছেন তারা। এনজিও, ব্যাংক এবং বিদ্যুৎ বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের যাতে পরবর্তি ফসল না উঠা পর্যন্ত কিস্তি স্থগিত রাখেন এবং বিদ্যুৎ বিভাগ বিলের জন্য তাদের চাপ সৃষ্টি না করেন সে বিষয়টি এখন নিশ্চিত করা জরুরী। পাশাপাশি আগামী ফসল ফলানোর জন্য তাদের সহজ সর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা এবং বিনামুল্যে সার বীজ কীটনাশক সরবরাহ করার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।’ দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও আহবান জানান তিনি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডোমার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বসুনিয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা, ডোমার উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যম কর্মীরা। সভায় জানানো হয়, বৃহস্পতিবারের ঝড়ে ডোমার ও ডিমলা উপজেলায় ১১ কেভির একশত কিলোমিটার লাইনে ২২টি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিহীন আছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরো দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে। অপরদিকে ডোমার পল্লী বিদ্যুতের ডোমার, ডিমলায় এক হাজার ৩৫২ কিলোমিটার লাইনে নয়টি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৫৩ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এর মধ্যে ৫০০ কিলোমিটার মেরামত করে প্রায় পাঁচ হাজার গ্রাহকের সংযোগ চালু করা সম্ভব হয়েছে। এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, ওই ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে জেলার ডোমার, ডিমলা এবং জলঢাকা উপজেলার ২২টি ইউনিয়নে ১৭ হাজার পাঁচ শত হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজার ৩৬ হেক্টর। এর মধ্যে বোরো ক্ষেত নয় হাজার ২৯৮ হেক্টর, আউশ ৫১ হেক্টর, পাট এক হাজার ৮৩৬ হেক্টর,বাদাম ১২০ হেক্টর,ভুট্টা ৪৮৮ হেক্টর, মরিচ ২৩ হেক্টর, সব্জি ২১৭ হেক্টর এবং মুগডাল তিন হেক্টর। অপরদিকে নীলফামারী-৩ (জলঢাকা-কিশোরীগঞ্জ আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা দাবি করে বলেন, ‘গত দুইদিন ধরে আমার নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শণ করে যা দেখেছি, যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব না। মানুষ দাদন করে, এনজিও ঋণ করে সার বীজ কীটনাশক বাকিতে নিয়ে ফসল ফলিয়েছিল। দুই একদিনের মধ্যে তাদের ফসল ঘরে ওঠার কথা ছিল। আমার জানা মতে ৪/৫ জন কৃষক তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মাঠ দেখে জ্ঞান হারিয়েছেন। তাদের বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। অনেকে ঘরবাড়ি হাড়িয়ে এখনও খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টাঙ্গিয়ে আছেন। এমন ঝড় এ অঞ্চলের মানুষ এর আগে দেখেনি।’ তিনি জানান, জলঢাকা উপজেলার সাত হাজার পরিবারের আট হাজার হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের ২৫ হাজার এবং পিডিবির এক হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিহীন আছে বলে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত সারে আটটা থেকে নয়টার মধ্যে শুরু হওয়া ওই কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে গাছ ও ঘর ভেঙ্গে পড়ে ডোমার ও জলঢাকা উপজেলায় মা-মেয়েসহ সাত জন নিহত হন, তিন উপজেলায় আহত হয় কমপক্ষে ৫০ ব্যক্তি। এসময় শিলাবৃষ্টিতে ঝড়ে পড়ে ক্ষেতে থাকা পাকা ধান। সরবরাহ তার ছিড়ে ও খুটি ভেঙ্গে পড়ে সরবরাহ বন্ধ থাকে বিদ্যুৎ।

মন্তব্য করুন


 

Link copied