বিশেষ প্রতিনিধি ৩১ মে॥ নীলফামারী-১ (ডিমলা-ডোমার) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও তার পরিবারের লোকজন টাকার পাহাড় গড়েছে। যে আকাক্সা ও স্বপ্ন নিয়ে এলাকাবাসী আমাদের গত নির্বাচনে ভোট দিয়েছিল তা আমাদের নির্বাচিত এমপি ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন। তিনি ও তার চ্যালা-চামুন্ডাদের জন্য দলের সিংহভাগ নেতাকর্মী আজ বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এমপির বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এমন অভিযোগ তুলে কথা গুলো বলেছেন সরকার ফারহানা আক্তার সুমী। তিনি বলেন, ডোমার-ডিমলার এমপির ব্যর্থতার কারণেই আগামী জাতীয় সংসদ নিবর্চিনে নির্বাচন করতে চাই আমি।
নিজের রাজনৈতিক জীবন, নিজ নির্বাচনী এলাকার জনগণের কথা, দলের কথা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি। রাজধানীর ধানমন্ডির ৩/এ দলীয় কার্যালয়ে বসে গত মঙ্গলবার (২৯মে) তিনি এসব কথা তুলে ধরেন।
ফারহানা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আজ সবচেয়ে বড় পুঁজি দেশব্যাপী উন্নয়ন কর্মকান্ড। সারাদেশে উন্নয়ন হলেও আমাদের নির্বাচনী এলাকায় তেমন কোনও উন্নয়ন হয়নি। এলাকার উন্নয়নের দিকে নজর না দিয়ে বর্তমান এমপি তার নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত রয়েছেন। ডিমলা এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বানিজ্য করেছেন সব থেকে বেশী। তার পরিবারের ভাই ভাতিজারা সাধারন মানুষজনের কাছে ত্রাস। তাদের মাদক ব্যবসা আর টর্সাল সেলের কবলে অনেক মানুষ আজ দিশেহারা। বাড়ি গাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান –আজ প্রমান। তাদের ভাঙ্গাবাড়ি গুলো এখন বহুতল ভবনে পরিনত হয়েছে এবং হচ্ছে। শুন্যহাতে তারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনেছে।
ফারহানা বলেন, নীলফামারী-১ আসন আমার শেকড়, আমার অস্তিত্ব, আমৃত্যু এই এলাকার জনগণের সেবা করতে চাই, এজন্য দলের সমর্থন, প্রিয় নেত্রীর নির্দেশ চাই। আমার এলাকা আজও অনুন্নত, এলাকাবাসী সহজ-সরল। তাদের এই সরলতাকে পুঁজি করে বর্তমান এমপি ও তার সঙ্গী-সাথীরা টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে। এলাকার সাধারন মানুষজনের ভাগ্য নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলেছে। দলের বৃহৎ অংশ ও দল সরকারে থাকা সত্ত্বেও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত, উপরন্তু আমাদের ওপর সব সময়েই হামলা-নির্যাতন করছে তারা। তারই প্রতিবাদে আমি নির্বাচন করব, নির্বাচন করতে চাই। এলাকার লাখো অসহায়, নির্যাতিত, নি®েপষিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির কেন্দ্রীয় উপ-সাহিত্য স¤পাদক ফারহানা সরকার। তবে বর্তমানে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স¤পাদক মর্যাদায় রয়েছেন তিনি।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে ফারহানা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন থেকেই নিজ জন্মভূমির লাখো মানুষের সেবায় রাজনীতিতে নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন, যা আজও অব্যাহত আছে। ফারহানা একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় সাধারণ স¤পাদক। অনলাইন পোর্টাল প্রথম সময়ের সঙ্গে আলাপকালে ফারহানা জানান, দেশের শেষ সীমান্তে ডিমলা ও ডোমার থানা এলাকা মিলে তার নির্বাচনী এলাকা। ভোটারের সংখ্যা সোয়া ৩ লাখের মতো। ২ থানা মিলে ২০টি ইউনিয়ন রয়েছে। পৌরসভা রয়েছে একটি।
তিনি বলেন, এলাকার পরিবর্তন না হলেও এমপি, তার আত্মীয় স্বজন, নিজস্ব লোকজনের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। ফারহানা বলেন, আজ এলাকার জনগণ প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। তারা এ অবস্থার পরিবর্তন চায়।
ফারহানা বলেন, তিনি তৃনমূলের নেতাকর্মীদের সমর্থন, ভালোবাসা নিয়েই কাজ করছেন। তিনি দাবি করেন, দলের সিংহভাগ নেতাকর্মী তার সঙ্গে রয়েছেন। দলের বাইরেও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, শিক্ষক, আলেমসমাজ, ছাত্র-যুবক, কৃষক-শ্রমিক, নারিসমাজ, মুক্তিযোদ্ধারা তার সঙ্গে রয়েছেন। তবে ফারহানা বলেন, নমিনেশনের ক্ষেত্রে দলের নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।