আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর      

 width=
 

তিস্তা বিপদসীমায়

বৃহস্পতিবার, ৫ জুলাই ২০১৮, বিকাল ০৭:১৫

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ৫জুলাই॥ উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার তিনটা হতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকাল ৬টায় তা আরো বৃদ্ধি পায় ৬ সেন্টিমিটার। ফলে তিস্তার পানি বিপদসীমা ছাপিয়ে ৫২ দশমিক ৭১ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ মিটার। পূর্বে এই পয়েন্টে বিপদসীমা ছিল ৫২ দশমিক ৪০ মিটার। আগের হিসাবে তিস্তার পানি আজ বৃহস্পতিবার সকাল হতে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে উজানের ঢল সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট। ফলে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার প্রায় ২০টি চর গ্রাম হাটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। এতে প্রায় ৫ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। তিস্তার হিং¯্ররূপ এলাকাবাসীকে আতংঙ্কগ্রস্থ করে তুলেছে বলে ইউপি চেয়ারম্যানগন দাবী করেছে। এদিকে তিস্তার প্রবল ¯্রােতের ভাঙ্গনে ১৩টি পরিবার বসত ভিটা বিলিন হওয়ায় পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়া তিস্তা বিপদসীমায় চলে যাওয়া নদীর বিভিন্ন স্থানের বাঁধে আঘাত করছে ¯্রােত। ফলে বাঁধগুলো হুমকীর মুখে পড়েছে। জনপ্রতিনিধিরা জানান নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্র্ণ এলাকার ২০টি চর ও গ্রামের পরিবারগুলো বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে । তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র জানিয়েছে গতকাল বুধবারের (৪ জুলাই) চেয়ে তিস্তার পানি দুই সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সকাল ৬ টা হতে দুপুর ১২ পর্যন্ত বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৬০ মিটার) দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে (৫২ দশমিক ৫৮ মিটার) প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকাল ৩টায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকাল ৬টায় তা বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহি হচ্ছিল। সরেজমিনে দেখা যায় নদীর উথাল পাতাল ঢেউ শোঁ শোঁ শব্দ করে দূর্বার গতিতে ভাটির দিকে ধাপিত হচ্ছে। ডিমলা উপজেলার পূবর্ ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক আব্দুল লতিফ খান জানান গত দুই দিনের চেয়ে উজানের ঢলের গতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এলাকার নিচু ও উঁচু স্থানে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। চরগ্রাম গুলোর ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ইতিমধ্যে তার এলাকার ১ হাজার ৪০ পরিবারের বসত বাড়ীতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এলাকার ঝাড়শিঙ্গেরশ্বর মৌজাটি তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়িতে পানি আর পানি। হুমকীর মুখে পড়েছে সেখানকার মাটির রাস্তাগুলো। রাস্তার উপর দিয়ে নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ায় এলাকাবাসী বালির বস্তা দিয়ে পানি ঠেকানোর চেস্টা করছে। এ ছাড়া ঝাড়সিংহেশ্বর মৌজার ৬টি পরিবারের বসতবাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার কারনে পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। পরিবারগুলো হলেন, বাবুল ইসলাম (৩৫), সফিকুল ইসলাম, রহিমা বেওয়া (৭০), চাঁদ মিয়া (৫৫), হাফিজার রহমান (৫০) ও ফরিদুল ইসলাম (৪০)। পরিবারগুলোকে সরকারের দেয়া ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে তিস্তার ডান তীর বাধে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ছাতুনামার চর,ফরেষ্টের চর, সোনাখুলীর চর ও ভেন্ডাবাড়ি চরে দেড় হাজার পরিবারের বসতবাড়ীতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ইতিমধ্যে ৭টি পরিবারের বসত ঘর হুমকীর মুখে পড়ায় তাদের নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। পরিবারগুলো মকবুল হোসেন (৪০),রাবেয়া বেওয়া(৭০) নুরন্নবী(৪০) নুর ইসলাম(৬০) তোফাজ্জল হোসেন (৬০) জহির উদ্দিন (৬৫) ও আশিক আলী(৬০)। তিনি জানান দক্ষিন সোনাখুলী এলাকায় তিস্তা নদীর ডান তীরের প্রধান বাঁধের অদুরে ইউনিয়ন পরিষদের তৈরী করা মাটির বাঁধ হুমকীর মুখে পড়েছে। বাঁধের উপর দিয়ে তিস্তা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় দক্ষিন সোনাখুলী কুঠিপাড়া গ্রামের বসত ঘর ও আবাদীজমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। এই বাঁধটি বিধ্বস্থ্য হলে এলাকাটি বিলিন হবার ধারনা করা হচ্ছে। ইতো মধ্যে আমনের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। খালিশা চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার বলেন, পূর্ব বাইশ পুকুর ও ছোটখাতা মৌজার ৫শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ীতে বন্যার পানি বয়ে যাচ্ছে। নদী সংলগ্ন বসবাসরত পরিবারগুলো সতর্ক অবস্থায় থাকার জন্য বলা হয়েছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন বলেন তার এলাকার দক্ষিন খড়িবাড়ি ও পূর্বখড়িবাড়ি মৌজায় তিস্তার বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ইতিমধ্যে সহস্রাধিক পরিবারের বসতবাড়ীতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। খগাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন বলেন, কিসামত ছাতনাই মৌজার ৩ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ীতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। প্রতিটি বাড়ীর উঠানে হাটু পানিতে তলিয়ে গেছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, উজানের ঢলের কারণে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা হতে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকাল ৩টায় ৭ সেন্টিমিটার ও বিকাল ৬টায় আরো ৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied