ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১৬ জুলাই॥ দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ ভান্ডার খালি নেই, যখন যা চাইবেন তার চেয়ে বেশি পাবেন।
মন্ত্রী বলেন, বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন ত্রাণ চায়না। তারা চায় বাঁধ। তাই বন্যা মোকাবেলায় আমাদের বাঁধ রক্ষা করতে হবে, বাঁধ রক্ষা করা গেলে আমরা রক্ষা পাব, এ কারণে বাঁধ সুরায় আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এ সময় তিনি স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।
চলতি বছরের বন্যা মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি নিয়ে সফরে এসে আজ সোমবার দুপুর ১২টায় নীলফামারী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নীলফামারী জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী বলেন, ১০ বছর আগে যখন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রান দেয়া হতো তালিকার ১০জনকে ডাকলে ২০ জন এসে ত্রাণ চাইতো। আর এখন ১০জনকে ডাকলে ২জন আসে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রবণ দেশ। আমাদের দুর্যোগের সাথে কৌশলে লড়াই করে বাঁচতে হবে। পূর্বের মত হাজারো মৃতদেহ আর আমরা দেখতে চাই না। সরকার এজন্য দুর্যোগ মোকাবেলায় খাদ্য, বস্ত্র, গৃহনির্মাণ সামগ্রী, বিশুদ্ধ পানিসহ সব ধরণের সরঞ্জাম নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে। সেই প্রস্তুতির কথা জানাতে বন্যা প্রবণ এলাকা নীলফামারী সহ পাঁচটি জেলা পরিদর্শনে এসেছি।
এ সময় মন্ত্রী নীলফামারী জেলার জন্য বেশ কিছু বরাদ্দ দিয়ে যান। বরাদ্দের মধ্যে রয়েছে ৬টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা নির্মানের জন্য ৬ লাখ টাকা, ৬০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও ১৮ লাখ টাকা, ২০০০ (দুই হাজার) শুকনো খাবারের প্যাকেট, ২০০ মেট্রিকটন চাল ও ভিজিএফ কার্ডধারিদের জন্য ১০ কেজির পরিবর্তে ২০ কেজি করে চাল।
আগামী একাদশ নির্বাচনে সকলকে নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন মুখি সরকার। আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার হাতকে আরো বেগবান করার জন্য নৌকায় ভোট দিয়ে পুনরায় সেবা ও উন্নয়নের সুযোগ চেয়েছেন ত্রাণমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধরন বদলাচ্ছে দিন দিন। বন্যা, খড়া, ঘূর্ণিঝড় দুর্যোগ হলেও এখন নতুন করে শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। রয়েছে পাহাড়ি ঢলও।
গেল চার বছর সাত মাসে দেশের কোথাও ত্রাণ নিয়ে এদিক সেদিক হয়নি মন্তব্য করে মন্ত্রী মায়া বলেন, দলের নেতাকর্মীরা রিলিফ(ত্রাণ) নিয়ে বেহাত করেনি। ক্ষতিগ্রস্তরা পেয়েছেন। আগামীতেও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে সরকার থাকবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের সচিব শাহ কামাল।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার, নীলফামারী-৩ (জলঢাকা-কিশোরীগঞ্জ আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মহসীন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের যুগ্ন সচিব মো. খালেদ মাহমুদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজহারুল ইসলাম, জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা এটিএম আখতারুজ্জামান প্রমুখ।