রনজিৎ দাস: রংপুরে সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনের বিধান না রেখে মনোনয়নের মাধ্যমে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন আরও ২৫ বছর বহাল রাখার প্রতিবাদে মঙ্গলবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রংপুর জেলা শাখার আয়োজনে গতকাল বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি হাসনা চৌধুরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালে এক সমাবেশে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাধারন সম্পাদক রুম্মানা জামান, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাহবুবা আরা লিনা, সহ-সাধারন সম্পাদক মাহমুদা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন আক্তার, আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ফারিয়া রহমান, লিগ্যাল এইড সম্পাদক ফারজানা সরকার, সদস্য রিতা সরকার, মোমেনা বেগম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের নারী আন্দোলন এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ একটি যুক্তিবাদী, অসা¤প্রদায়িক, নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সমাজের প্রগতিশীল, রাজনৈতিক দল, নারীর মানবাধিকার সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি সকলকে নিয়ে নারীর পথচলা মসৃণ করার জন্যই বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে তার জন্মলগ্ন থেকে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা জাতীয়ভাবে এবং ধারাবাহিকভাবে জাতীয় সংসদে নারীর আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আন্দোলন করেছি এবং এই আন্দোলনের ফসল হিসেবে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা ১০-১৫, ১৫-৫০ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আশ্বাস পেয়েছি, প্রতিশ্রæতি পেয়েছি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে। মহাজোটের লিখিত ইশতেহারে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি এবং সরাসরি নির্বাচনের প্রতিশ্রæতি ছিল, কিন্তু তার কোন বাস্তব প্রয়োগ আমরা দেখি নাই। তাদের ঘোষিত লিখিত বিষয়ের সাথে তারা একটি সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত নিলেন। নারীর রাজনৈতিক আন্দোলন একদিনের কাজ নয়। একদিনে নারীর ভোটের অধিকার, নারীর শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেই দিক থেকে নারীর রাজনৈতিক অধিকার যতক্ষণ প্রতিষ্ঠিত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত নারী আন্দোলন তার আন্দোলন চালিয়ে যাবে। বক্তারা আরো বলেন নারীর এই রাজনৈতিক ক্ষতায়নের জন্য শুধুমাত্র সরকারি দল নয় অন্যসব রাজনৈতিক দলকেও সক্রিয় থাকতে হবে। বাংলাদেশে যে নারী ক্ষমতায়ন হয়েছে তা শুধু সরকারের একক প্রচেষ্টায় হয়নি। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের এই পথ যতদিন পর্যন্ত মসৃণ না হবে ততদিন পর্যন্ত নারী আন্দোলন এই দুইটি দাবি পূরণের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবে।