ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী পেয়ারী খাতুন এর কপালে। পেয়ারী আসন্ন জে,ডি,সি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলেও সে পরীক্ষা দিতে পারবে না শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউপির গোপালরায় পাঁচমাথা গ্রামের আজহার আলীর মেয়ে পেয়ারী মেধাবী ছাত্রী হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। তার অনিচ্ছা সত্বেও জোর করে পেয়ারীর সম্মতি নিয়ে তার পরিবার এই বাল্য বিয়ের আয়োজন করছে বলে জানাগেছে। পাত্র একই উপজেলার কাকিনা জেলে পাড়া গ্রামের ছামছুল হকের ছেলে আনারুল ইসলাম। পেশায় ঢাকা টোবাকোতে চাকুরী করেন।
এ ব্যাপারে কাকিনা ইউপির ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য বদিয়ার রহমান জানান, তিনি শুনেছেন এ ধরনের একটি বিয়ে হচ্ছে। তিনি আরও জানান,মেয়েটির বয়স কম হলে ভুয়া জন্ম সনদে তার বয়স ১৮ দেখানো হয়েছে। এটি অন্য কোন সদস্য দ্বারা স্বাক্ষর করানো হয়েছে। তিনি এ বাল্য বিয়ে বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।
খোজ নিয়ে দেখা গেছে, পেয়ারীর মাদ্রাসায় ভর্তি রেজিঃ ও নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী তার বয়স ১২ বৎসর ৯ মাস। শোনা যাচ্ছে নতুন ভাবে কাকীনা ইউপি থেকে নিবন্ধন করিয়ে বয়স বাড়িয়ে ১৮ বৎসর পুর্ন করে নেওয়া হয়েছে।
পেয়ারীর বিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। আজ বুধবার তার গায়ে হলুদ। পেয়ারীর বাবা আজহার আলী এ বিয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন,আমি মেয়েকে দেরিতে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ছেলে পক্ষ পছন্দ করে এ বিয়ের আয়োজন করে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ গোলাম রাব্বি জানান, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাল্য বিয়ের দাড়প্রান্তে দাঁড়িয়ে মাদ্রাসা ছাত্রী পেয়ারী মুঠো ফোনে এ সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিয়েতে রাজি ছিলাম না। আমি তো লেখাপড়া করতে চেয়েছিলাম। সবার চাপে বিয়েতে মত দিতে বাধ্য হয়েছি। আপনারা আমাকে বাচান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেয়ারির এক আত্বীয় বুধবার দুপুরে বলেন, বিয়ের আয়োজন সম্পুর্ন করা হয়েছে। ছেলে পক্ষকে যৌতুকের ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে ৬০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। আজ বিয়ের আসরে বাকী টাকা দিয়ে পেয়ারীকে শ্বশুর বাড়ীতে পাঠানো হবে। এখন বিয়ে বন্ধ করার কোন সুযোগ নেই।
তেতুলিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারের দায়িত্বে থাকা আব্দুল হামিদ বলেন,মাদ্রাসা বন্ধ তাই বিষয়টি তার জানা নেই।