আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

বাহাদুরের পিঠে চরে স্কুলে যায় মাইদুল

মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই ২০১৮, রাত ১০:২৫

নিয়াজ আহমেদ সিপন, স্টাফ রিপোর্টার: মাইদুলের স্বপ্ন ছিল একদিন বড় হয়ে মানুষের জন্য কাজ করবে। সেকারণে তার বড় ইচ্ছে লেখাপড়া। কিন্তু তার বিদ্যালয়টি প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে। সে কারণে তার প্রয়োজন একটি বাই সাইকেল। দিনমজুরের ছেলের স্বপ্ন বাইসাইকেলে করে তার স্কুলে যাবেন না। তার ইচ্ছে ঘোড়ায় করে তার স্কুলে যাবেন। অবশেষে তার স্বপ্ন পূরুন হয়েছে। এখন সে ঘোড়ায় করে বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে যায়। সীমান্তের এসব এলাকায় বেশির ভাগ পরিবারের সন্তানরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায় রিকশা, বাইসাইকেল অথবা অভিভাবকের মোটরসাইকেলের পেছনে চড়ে। তিস্তা চরঅঞ্চলে নদীপাড়ের শিশুরা নৌকা বা ভেলায় চড়ে স্কুলে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে সীমান্তবর্তী লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের দিনমজুরের ছেলে মাইদুল ইসলাম ব্যতিক্রম। সে ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে যায়। চন্দ্রপুর আদর্শ বিদ্যা নিকেতনের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মাইদুল। প্রতিদিন ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে যায় সে। স্থানীয় সূত্র জানায়, কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের খামারভাতি গ্রামের দিনমজুর লিয়াকত আলীর ছেলে মাইদুল। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মাইদুল মেজো। পড়াশুনা করে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে মাইদুল। মাইদুলের পরিবার জানায়, মাইদুলের দাদার একটি ঘোড়া ছিল। দাদা তাকে ঘোড়ার পিঠে চড়িয়ে ঘুরাতেন।  ৫ম শ্রেণিতে পড়া সময় মাইদুলের ঘোড়ার প্রতি মাইদুলের ভালোবাসা জন্মায়। পরবর্তীতে অভাবের তারনায় ঘোড়াটি বিক্রী করে দেন। ঘেড়া বিক্রী করার পর থেকে মাইদুল ইসলাম আর স্কুলে ঠিক ভাবে যান না। এমনকি খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ করে দেয়। প্রায় সময় কাঁদতে শুরু করে করে মাইদুল। সেই সঙ্গে ঘোড়াটি ফিরিয়ে আনার জন্য বাবার কাছে কাকুতি-মিনতি করে। প্রতিদিন সন্তানের কান্না দেখে দিনমজুর বাবা লিয়াকত আলী অনেক কষ্টে ৬ হাজার টাকা জমিয়ে স্থানীয় বালাপাড়া হাট থেকে একটি ঘোড়া বাচ্চা কিনে আনেন। বাচ্চাটি দেখে খুশিতে মেতে ওঠে মাইদুল। সেই সঙ্গে ঘোড়ার বাচ্চাটি লালনপালন করতে থাকে সে। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে ঘোড়ার বাচ্চাটি। ঘোড়ার নাম রাখে বাহাদুর। মাইদুলের স্বপ্ন ছিল, একদিন বাহাদুরের পিঠে চড়ে স্কুলে যাবে। অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। মাইদুল ইসলাম জানায়, ঘোড়া পিঠে প্রথম যেদিন স্কুলে যাই সেদিন থেকে স্কুলের সব ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা আমাকে এক নামে চেনেন। আমি প্রতিদিন ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে যাই। স্কুলে বাহাদুরকে দেখে সবাই আনন্দ পায়। আমার বন্ধুরা ঘোড়ার পিঠে উঠতে চাইলে তাদের উঠাই। এখন আমার ইচ্ছা পড়াশোনা করে ডাক্তার হওয়ার। মাইদুল ইসলামের বাবা লিয়াকত আলী বলেন, দাদার ঘোড়াটি বিক্রির পর অনেক কেঁদেছে মাইদুল। পরে দিনমজুরির টাকা জমিয়ে অনেক কষ্ট করে তাকে একটি ঘোড়া কিনে দিই। ওইদিন ঘোড়া দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায় মাইদুল। সে ঘোড়াটি লালনপালন করে বড় করেছে। এখন ঘোড়ায় চড়ে প্রতিদিন স্কুলে যায় মাইদুল। আমি যতদূর পারি দিনমজুরি করে ছেলেকে পড়াশোনা করাব। চন্দ্রপুর আদর্শ বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, মাইদুল ইসলাম দিনমজুরের ছেলে হলেও খুব মেধাবী। সে ঘোড়া নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসে। সবাই দেখে আনন্দ পায়। অনেকেই তার ঘোড়ার পিঠে চড়ে। দেখতেই ভালো লাগে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied