শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৩, রাত ০৮:৩৪
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : বারো বছরের শিশু ফরিদ (ছদ্মনাম)। পরনে নোংরা শার্ট ও ছেড়া প্যান্ট। খসখসে ধুলোমাখা শরীর। হাত-পায়ের বিভিন্ন জায়গায় দগদগে ঘা। বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার এ বয়সেই শিশু ফরিদ আসক্ত হয়েছে ভয়াবহ এক নেশায়। জুতা-স্যান্ডেলের সোল জোড়া লাগানোর জন্য ব্যবহৃত গাম বা আঠা দিয়ে বিশেষ উপয়ে নেশা করে ফরিদ। শুধু ফরিদ নয় তার বন্ধু সবুজ, মানিক, রাজ্জাক, রাসেল, নয়ন, মেহেদি আর তাদের মতো অসংখ্য ছিন্নমূল শিশু এখন প্রতিদিন জুতার গাম দিয়ে নেশা করছে। জুতা বা স্যান্ডেলের সোল জোড়া লাগানোর জন্য ব্যবহৃত গাম বা আঠা একটি পলিথিনের ব্যাগে ভরে বাতাস দিয়ে ফুলালে সৃষ্টি হয় তীব্র গন্ধযুক্ত গ্যাস। আর সে গ্যাস মুখ দিয়ে টেনে ফুসফুসে নেয়ার সাথে সাথেই হয় ভয়াবহ নেশা। নেশা করা অবস্থায় কথা হয় ফরিদের সাথে। সে জানায়, তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের খালপাড়ায় বস্তিতে থাকে সে। সারাদিন ময়লা আবর্জনার স্তুপ ঘেটে প্লাস্টিকের বোতল, ভাঙা কাঁচ, লোহা বা টিনের টুকরো যা পায় তা বিক্রি করে কোন রকমে দিন কাটে তার। নেশার জন্য ব্যবহৃত প্রতি কৌটা গামের দাম ৪৫ থেকে ৭০ টাকা। তাই নেশার টাকা যোগাড় করতে প্রায়ই চুরি করতে হয় তাকে। নেশা না করলে কষ্ট হয় ফরিদের। আর নেশা করলে ভালো লাগে তার। ফরিদ জানায় এ নেশায় খরচ কম। সহজে পাওয়া যায়। কিনতে গেলে কেউ সন্দেহও করে না। তাই তার মত অসংখ্য ছিন্নমূল পথশিশু এখন আসক্ত হয়ে পড়েছে এ গামের নেশায়। কেউ কেউ আবার গাঁজা, হেরোইনেও আসক্ত হয় বলে জানায় ফরিদ। আর নেশার টাকা জোগাড় করতে জড়িয়ে পড়ে তারা ছোট-খাট চুরি ও নানা রকম অপরাধের সাথে। এখনই এদের প্রতিরোধ করা না গেলে বড় হয়ে এসব শিশুদের বড় ধরনের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব অসহায় শিশুকে বাঁচাতে সরকারি-বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগিয়ে আসবে এমনটাই আশা সকলের।
মন্তব্য করুন
টপ নিউজ’র আরো খবর
সংশ্লিষ্ট
ভারত থেকে ৩ দিনের মধ্যে পেঁয়াজ আসবে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
পেঁয়াজ রপ্তানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করল ভারত
মালিকপক্ষকে জলদস্যুদের ফোন, যে কথা হলো
কমলো সোনার দাম