আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর      

 width=
 

বাংলাদেশের সড়ক রোধে গৃহীত পদক্ষেপ

বৃহস্পতিবার, ৯ আগস্ট ২০১৮, রাত ১০:৫৩

ডেস্ক: ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের রেষারেষিতে দুই শিক্ষার্থী নিহতের পর থেকে নিরাপদ সড়কের জোর দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এই দাবির প্রেক্ষিতে ৬ আগস্ট সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ ও ঢাকা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ও শহর। প্রায় ১৬ কোটি মানুষের বাসস্থান এই দেশে, প্রতি বর্গ কিঃমিঃ জায়গায় ১১১৮ জন বসবাস করে। রাজধানী ঢাকায় মাত্র ৩০০ বর্গ কিঃমিঃ এলাকায় প্রায় ১ কোটি মানুষের বাস যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিঃমিঃ জায়গায় ২৮৪১০ জন। তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এখানকার সড়ক ব্যবস্থায় নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। জনসংখ্যা ও যান্ত্রিক যানের আধিক্য, গণপরিবহনের অপ্রতুলতা, রাস্তার স্বল্পতা, অবকাঠামোগত ত্রুটি, যানবাহনের তুলনায় প্রশিক্ষিত চালকের অভার, সড়ক শৃঙ্খলার বিষয়ে চালক তথা সকল শ্রেণীর নাগরিকদের অজ্ঞতা ইত্যাদি বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের পরিবহন খাত পরিচালিত হচ্ছে। এত সীমাবদ্ধতা থাকা স্বত্বেও বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশ কম। World Health Organisation (WHO) ও Global Status Report on Road Safety 2015 গবেষণা অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দিক থেকে সার্কভুক্ত দেশগুলোর হার বাংলাদেশ হতে বেশী। লাখ প্রতি জনসংখ্যায় সমগ্র বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির হার যেখানে ১৭.৪ সেখানে বাংলাদেশের হার ১৩.৬। উক্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সম্মিলিত গড় ১৫.৯। ব্রাজিলের মত উন্নয়নশীল দেশের গড় ২৩.৪। ভারতের ১৬.৬, পাকিস্তানের ১৪.২, শ্রীলংকার ১৭.৪, নেপালের ১৭.০, ইন্দোনেশিয়ার ১৫.৩, মালয়েশিয়ার ২৪.০,সেীদি আরবের ২৭.৪। এটি পরিষ্কার যে, দক্ষিণ –এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তার অবস্থা বেশ ভাল। বুয়েট এর দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালে এই হার ৭.৫ এ নেমে এসেছে। নানান প্রতিকূলতা থাকা স্বত্বেও সরকার সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বদ্ধ পরিকর। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আইন প্রণয়ন এবং নানারকম নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহনের মাধ্যমেও এ ব্যাপারে সরকার তার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর খসড়ায় সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা অনুমোদনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন হয়েছে। ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনায় চালক বা সংশ্লিষ্টদের যে শাস্তির দাবি শিক্ষার্থীরা করে আসছে তার সবটাই এ আইনে রয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মৃত্যু হলে এবং তা যদি প্রমাণ হয় ৩০২ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে। সুতরাং এই আইনে তাদের ইচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন হয়েছে। ড্রাইভারকে মোট ১২ পয়েন্ট দিয়ে একাট ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে । একটা অপরাধে এক পয়েন্ট কাটা যাবে চালকের। এভাবে ১২ পয়েন্ট কাটা গেলে তাকে আর ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে না। এ অত্যাধুনিক ব্যবস্থা আগে আমাদের দেশে ছিল না। এবার এ আইনে এটা যুক্ত করা হয়েছে। এ আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার বিষয়ে এবং মটরযানের রেজিষ্ট্রেশনসহ যানবাহন নিয়নন্ত্রণের বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর শাস্তি ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। বর্তমানে এ অপরাধের শাস্তি চার মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড। নিবন্ধনহীন যান চালনার শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড। ফিটনেসবিহীন গাড়ির ক্ষেত্রে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড প্রস্তাব করা হয়েছে। চালকদের লাইসেন্স নিতে ন্যূনতম ১৮ বছর বয়স হতে হবে। আর পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে বয়স হতে হবে ২১ বছর। এছাড়া কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী পাস না হলে কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। আইনে মোটরযান নির্মাণ, যন্ত্রপাতি বিন্যাস, ওজনসীমা নির্ধারণ এবং পরিবেশ দুষণসহ বেশকিছু ইস্যুতে এখানে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও বীমা ব্যবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা রাখা হয়েছে এ আইনে। চালক সমিতি, মালিক ও সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করার নির্দেশনা রয়েছে এ আইনে। এ ট্রাস্টি বোর্ডের কাজ হবে তহবিল তৈরি করা। দুর্ঘটনা ঘটলে ইন্সুরেন্সের সমস্যা সমাধানে যে সময় লাগে সেই সময়ে উক্ত তহবিল থেকে দ্রুত সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত কল্পে সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ সড়কে প্রাণহানির পরিমাণ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied