ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগ এবং তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। আসুন, আমরা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করি। প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।'
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর: বাসস
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী, সাহসী এবং ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। বাঙালি পেয়েছে স্বাধীন রাষ্ট্র, নিজস্ব পতাকা ও জাতীয় সংগীত। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। মার্শাল ল' জারীর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে। সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে। বিদেশে দূতাবাসে চাকুরি দেয়। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দেয়। রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করে। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করে। পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকারও একই পথ অনুসরণ করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'গত সাড়ে ৯ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। সম্প্রতি বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। ২০২১ সালের আগেই আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ্।'
তিনি বলেন, 'আমরা সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার বিচার রায় কার্যকর করেছি। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আমাদের সরকার 'জিরো টলারেন্স' নীতি অনুসরণ করছে।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করেছি। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র-বিরোধীদের যেকোন অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র তাঁকে হত্যা করে। এর মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা।
তিনি বলেন, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র '৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যার বিচারের পথও বন্ধ করে দেয়। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবসে মহান আল্লাহ্তায়ালার দরবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সকল শহিদের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন।