আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

কুড়িগ্রামে চলছে নির্বিচারে ডলফিন শিকার

বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, সকাল ০৮:৫৪

 ডেস্ক: কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে বছরের বিভিন্ন সময় নির্বিচারে শিকার করা হচ্ছে বিরল প্রজাতির ডলফিন। যথাযথ নজরদারির অভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব ডলফিন হত্যা করা হচ্ছে। ব্যথানাশক ওষুধ তৈরি ও মাছ ধরার টোপ হিসেবে ডলফিনের তেলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই বাড়তি উপার্জনের উদ্দেশ্যে ডলফিন হত্যা ও এর তেল বিক্রি করছেন শিকারিরা। এতে বিরুপ প্রভাব পড়ছে ওই এলাকার জীববৈচিত্র্যে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীতে মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহকারী কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ধরলা ও ধরলা-ব্রহ্মপুত্র-দুধকুমারের মোহনায় ছয়টি ডলফিন ধরা পড়ে। এর মধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদী এলাকায় ধরা পড়া ডলফিনটি ছাড়া অন্য পাঁচটি ডলফিনকেই হত্যা করা হয়। বিরল প্রজাতির এসব ডলফিন নদ-নদীতে খুব বেশি দেখা যায় না। তবে বছরের বিভিন্ন সময় কখনো কখনো জেলেদের জালে ধরা পড়ে। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে ধরলা-ব্রহ্মপুত্র-দুধকুমার নদের মোহনায় নিয়মিত মাছ শিকার করেন এমন একজন জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই এলাকায় প্রায় সারা বছরই ডলফিন ধরা পড়ে। গত আগস্টে ওই মোহনায় জেলেদের জালে তিনটি ডলফিন ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটি ডলফিনের ওজন ছিল প্রায় পাঁচ মণ। বাকি দুটির প্রত্যেকটির ওজন এক মণ করে। ডলফিনের চামড়া থেকে তেল উৎপাদন করা হয়। ডলফিন ধরা পড়লে জেলেরা এর চামড়া কেটে বিভিন্ন পাত্রে রাখেন। কয়েকদিন পর সেই চামড়া পঁচে তেল তৈরি হয়। পরে জেলেরা ওই তেল জ্বালানি কাঠের কয়লার সঙ্গে মিশিয়ে নদীতে ছিটিয়ে দেয়। এতে করে জেলেদের জালে প্রচুর ঘারুয়া মাছ ধরা পড়ে।’ ডলফিন শিকারে স্থানীয় প্রশাসন থেকে কোনও বাধা দেওয়া হয় কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে এই জেলে বলেন, ‘জেলেরা সারা রাত ধরে মাছ শিকার করে ভোরে সেগুলো বাজারজাত করেন। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের খবর পাওয়ার খুব একটা সুযোগ থাকে না।’ আরও কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডলফিন থেকে তৈরি তেল মানব দেহের কোমর ও পায়ের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা উপশমে কার্যকর। এ জন্য অনেক গ্রাম্য কবিরাজও এসব ডলফিন উচ্চ মূল্যে ক্রয় করেন। পরে তারা তেল তৈরি করে সেই তেল বাজারে বিক্রি করেন, যা প্রতি কেজি ৪০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। স্থানীয়রা জানান, এ বছরের জুন মাসের শেষের দিকে ধরলা নদীতে দুটি বিরল প্রজাতির ডলফিন ধরা পড়ে। পরে ডলফিন দুটি চিলমারীর এক ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন ওই জেলে। এদিকে গত ৪ সেপ্টেম্বর ফুলবাড়ী উপজেলার নব নির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর খানিকটা পশ্চিমে ধরলা নদীতে প্রায় একশ কেজি ওজনের একটি ডলফিন ধরা পড়লেও সেটি উদ্ধারে উপজেলা মৎস্য বিভাগের কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি। পরে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কিছু যুবক ডলফিনটি ক্রয় করে বাজারে নিয়ে এলে খবর পেয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল হক প্রধান ডলফিনটি উদ্ধার করে রংপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহমুদুন্নবী মিঠু জানান, মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন-১৯৫০ অনুযায়ী, যেসব মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে সেখানে ডলফিন বা শুশুক সংরক্ষণের ব্যাপারে কোনও নির্দেশনা নেই। তাই জেলেদের জালে ডলফিন ধরা পড়লেও তা উদ্ধারে আমরা উদ্যোগ নিতে পারি না। ডলফিন একটি মৎস্য জাতীয় প্রাণী হলেও তা শিকারে মৎস্য বিভাগ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান- ‘মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন-১৯৫০’ উল্লেখ করে জানান, ‘আইনের সীমাবদ্ধতা ছাড়াও জনবল সংকট থাকার কারণে আমরা তাৎক্ষণিক কোনও ব্যবস্থা নিতে পারি না।’ রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল হক প্রধান জানান, ‘জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিলুপ্তপ্রায় কোনও প্রাণীকে উদ্ধার ও পুনর্বাসনের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনও আইনের প্রয়োজন নেই। ডলফিন শিকার বন্ধে মৎস্য আইনে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা না থাকলেও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ আইনের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রায় এই জলজ প্রাণী শিকার ও হত্যা বন্ধ করা সম্ভব। এজন্য আমাদের সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।’

মন্তব্য করুন


 

Link copied