আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্যাম্পাসে থাকেন না, ঢাকায় টকশো করেন নিয়মিত

রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, দুপুর ০৪:৫৫

সেন্ট্রাল ডেস্ক: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, অথচ বসবাস করেন রাজধানীতে। সপ্তাহে এক-আধ দিন ক্যাম্পাসে যান। যাতায়াত করেন আকাশপথে । ঢাকা থেকে সকালে বেসরকারি বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে রংপুর শহরের ৪০ কিমি দূরত্বের সৈয়দপুর বিমানবন্দরে গিয়ে নামেন। সেখানে প্রস্তুত থাকে বেরোবি থেকে বরাদ্দ করা গাড়ি। তিনি যখন ক্যাম্পাসে পৌঁছান, সূর্যটাও ততোক্ষণে পৌছে যায প্রায় মধ্যগগনে। নৈমিত্তিক কাজের জন্য যে কয়েকঘণ্টা বিশ্ববিদ্যলয়কে সময় দেন, অর্ধেক সময় চলে যায় বিশ্রাম আর খাওয়াদাওয়ায়। বিকেলেই আবার গাড়িতে চেপে বসেন, সৈয়দপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সন্ধ্যার ফ্লইটটা তিনি মিস করেন না। কারণ প্রায়ই ঢাকায় তার বিভিন্ন টিভি চ্যানেনে টক শো থাকে। সেখানে অনুপস্থিত থাকেন না কোনোদিন. সময় মতোই হাজির হন তিনি। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৯ এর ১০ (১) ধারা অনুযায়ী গত জুন মাসে ৪ বছরের জন্য তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ। এর আগের তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস্ এর প্রো-ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ)-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা-১ এর সহকারী সচিব আবদুস সাত্তার মিয়া স্বাক্ষরিত নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহউপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে নিয়োগের শুরু থেকেই তিনি ক্যাম্পাসে অবস্থানের শর্তটি উপেক্ষা ও অমান্য করে চলেছেন। নিজের খেয়াল খুশি মতোই তিনি ইচ্ছে হলে ক্যাম্পাসে আসেন, বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। কাউকে তোয়াক্কা না করে তিনি নিজের মর্জি-মাফিক চলাফেরা করতেই পছন্দ করেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে উপাচার্য মাত্র পাঁচদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। এর মধ্যে এক রাত ক্যাম্পাসে থেকেছেন। গত ১ আগস্ট উপাচার্য সকালে বিমানে করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন। মাত্র আড়াই ঘণ্টা অবস্থান করে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিমানে ঢাকায় চলে যান। এর ৯ দিন পর ১০ আগস্ট সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। বিকেল ৪টায় বিমানে করে ঢাকায় ফিরে যান। এর তিনদিন পর আবারও ঢাকা থেকে বিমানে করে ক্যাম্পাসে আসেন সকাল ১০টায়। ওইদিন ক্যাম্পাসে তার নিজস্ব বাস ভবনে রাতে থাকেন। পরের দিন ১৪ আগস্ট বিকেলে বিমানে রংপুর থেকে ঢাকায় চলে যান। পরের দিন ১৫ আগস্ট সকালে ঢাকা থেকে বিমানে করে রংপুরে আসেন। দুপুর তিনটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান করে আবারও বিমানে ঢাকায় চলে যান। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিতে তিনি ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে আসেন। এরপর উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ টানা ১৩ দিন আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আর পা রখেননি। ২৯ আগস্ট সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে বিমানে রংপুরে আসেন। ওইদিন বিকেল ৪টায় বিমানযোগে ঢাকায় চলে যান। এরপর আগস্ট মাসের বাকি দুদিন তিনি আর রংপুরে আসেননি। টানা ছয়দিন পর গত ৪ সেপ্টেম্বর সকালে বিমানে বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন। রাতে ক্যাম্পাসে থেকে আবারও ঢাকায় চলে যান। এরপর গত তিন ধরে আর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেননি উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্র জানা গেছে, উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রায় ১১ মাসে (৩৪০ দিন) তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৯০ দিন। বেশিরভাগ সময় তিনি সকালে ঢাকা থেকে বিমানে এসে বিকেলে আবার ঢাকায় ফিরে গেছেন। মেনে চলছেন না নিয়োগের শর্ত। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহীর অনুপস্থিতি আর অনিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে চরম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সর্বস্তরে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। সিদ্ধান্ত গ্রহণে তৈরি হয়েছে দীর্ঘসূত্রতা। উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ নিজের আগ্রহেই মোট ১৩টি কোর্স পড়ানোর দায়িত্ব নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ১৩টি কোর্সে সপ্তাহে ২৬টি নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার কথা। এছাড়াও মোট ৭৮টি পরীক্ষা নেওয়ার কথা। আবার এ খাতাগুলো তারই মূল্যায়ন করার কথা। কিন্তু তিনি এগুলোর কোনোটি যথাযথভাবে পালন করছেন না। লোক প্রশাসন বিভাগে তার মোট কোর্স চারটি আর সমাজবিজ্ঞান বিভাগসহ আর অন্য বিভাগ মিলে ৫টি কোর্সে পাঠ দানের কথা। কিন্তু তিনি এসব কোর্সে ক্লাস নেন সি। উপাচার্যের কারণে শুধু প্রশাসনিক নয়, একাডেমিক সেশনজটও সৃষ্টি হয়েছে। অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ক্যাম্পাসে দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই এবার নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। ঢাকায় অবস্থান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন কর্মচারীকে দিয়ে নিজের দুটো কোর্সের পরীক্ষা নিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, লিখিত পরীক্ষার পর ঢাকা থেকে মোবাইল ফোনে পরীক্ষার্থীদের ভাইভাও নিয়েছেন তিনি। একইভাবে কাকে কত নম্বর দিতে হবে তাও বলে দিয়েছেন। । বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা আইনে অনুপস্থিত থেকে নিজের কোর্সের পরীক্ষা গ্রহণের ঘটনা নজীরবিহিন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অনুপস্থিতি আর নিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গেবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, যুগটা এখন ডিজিটাল। অনলাইনেই সারাবিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিশ্বজুড়েই ভার্চুয়াল কাজ চলছে। আমরাও পিছিয়ে নেই। সবসময় ফিজিক্যালি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসে থাকার তো কোনও সুযোগ নাই, ভার্চুয়াল কাজগুলো সুন্দরভাবেই আমরা সম্পন্ন করছি। আশা করি এটি আগামী দিনের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied