[caption id="attachment_170591" align="alignleft" width="504"] চোখ হারানো জাহিদুল ইসলাম শিপু ও বক্স করা ছবিতে মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া[/caption]
নিয়াজ আহমেদ সিপন, লালমনিরহাট: চোখের আলো হারিয়ে দৃষ্টহীন ব্যবসায়ীকে মামলা তুলে নিতে বাড়িতে চিরকুট পাঠিয়ে হুমকী দিচ্ছে ঘাতক সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া(২২)।
মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের চাপাঁরতল গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। হাবিব মিয়াকে সবাই মাদক কারবারী বলে চিনেন । তার নামে কালীগঞ্জ ও গংঙ্গাচওড়া থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, কাকিনা চাপারতল এলাকার মৃত হাসান আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম শিপু ও মাঈদুল ইসলাম শিপন চাপারতল বাজারে বিকাশ,অনলাইন ব্যাংকিং এর ব্যবসা পরিচালনা করে সংসার পরিচালনা করতেন। ঈদের আগে মোটা টাকার লেন দেন হতো। হাবিব মিয়ার চোখ পড়ে মোবাইল অনলাইন ব্যাংকিং টাকার উপর। এমনকি এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিরোধ তৈরী হয় মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়ার।
গত ৩০ আগষ্ট দিনগত রাত ১১ টার দিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একা ছিলেন জাহেদুল ইসলাম শিপু। এ সুযোগে জাহিদুল ইসলাম শিপু ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে পুর্ব বিরোধের জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া ৩/৪ জন সন্ত্রাসীসহ শিপুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ওই সময় জাহিদুল ইসলাম শিপু টাকা আটকাতে ধরলে তার বাম চোখ ও নাকে গুরুতর জখম হয়। এতে করে জাহিদুল ইসলাম শিপুর বাম চোখটি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর হাবিবসহ সন্ত্রাসীরা দোকান অনলাইন ব্যাংকিংসহ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার ৫শত টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
শিপুর চিৎকারে স্থানীয়রা এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য শিপুকে ঢাকায় নেয়া হলেও চিকিৎসকরা তার চোখের আলো ফিরাতে পারেন নি। বর্তমানে শিপু চোখের আলো ফেরাতে ভারতে চিকিৎসা করার চেষ্টা করছে।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই আহত শিপুর ভাই মাঈদুল ইসলাম শিপন বাদি হয়ে মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়াসহ অজ্ঞতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে এলাকায় প্রক্যাশে আসামী ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ আসামী হাবিবকে গ্রেফতার করেনি বলে বাদির অভিযোগ।
ওই এলাকায় সরোজমিনে গিয়ে জানা গেছে, হাবিবের অত্যাচারে এলাকার বেশির ভাগ পরিবার অতিষ্ঠ। গ্রামের তরুণ সমাজকে মাদক বেচা-কেনা করে নষ্ঠ করছে। এমনও জানা গেছে,মাদক ব্যবসায়ী হাবিব এলাকার নারীদের উপড় আকৃষ্ট ছিল। রাতের বেলা ওই এলাকার নারীরা তার ভয়ে বাহিরে আসতেন না। সব সময় কৃ-প্রস্তাব দিতেন বলেও জানাগেছে।
আহত ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম শিপু বলেন,টাকা নিয়েছে কষ্ট নেই। সারা জিবনের জন্য বাম চোখের আলো হারালাম। তবুও ঘাতক মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী হাবিবকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। বরংচ উল্টো হাবিবের লোকজন বাড়ির গেটে চিরকুট লিখে মামলা তুলে নেয়ার হুমকী দিচ্ছে। চোখের পর এবার জীবন ও পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মামলার তদন্ত কমকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপ পরিদশক(এসআই) কামাল উদ্দিন বলেন, আসামী হাবিবের ব্যবহৃত ফোন নম্বর বাদি ম্যানেজ করে দিয়েছেন। কিন্তু সিডিআর নেয়া হচ্ছে না। তবে খুব দ্রুত তাকে গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান তিনি।
কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মকবুল হোসেন বাদির অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ঘটনাস্থল ঘুরে এসে মামলা নিয়েছেন তিনি। আসামীরা গ্রাম ছাড়া হওয়ায় তাদেরকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।