রনজিৎ দাস: মিথ্যা মামলা দিয়ে একটি পরিবারকে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে শেফালী বেগম নামের এক মহিলা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এর প্রতিকার চেয়ে সোমবার বিকালে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মাহফুজার রহমান বিপ্লব নামে এক ব্যক্তি।
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লব বলেন, আমার ছোট ভাই মো: খালিদ বিন ওয়ালিদ পাভেল (২৯) সে ইংরেজি বিষয়ে মাস্টার্স পাশ করার পর রংপুর মেডিকো কোচিং সেন্টারে চাকুরি করে আসছে। আমাদের প্রতিবেশী মৃত জয়নাল আবেদীনের মেয়ে মোছা: শেফালী বেগম (৪২) (৪ বছর বছর আগে অন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাকপাপ্ত) গত বছরের ১৬ নভেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ড এর ওই সময়ের বহিস্কৃত কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান তরু তার বোনের বাচ্ছাকে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে পাভেলকে দুপুরে মোহাম্মদিয়া ডায়াগনোস্টিক সেন্টাারে ডেকে নেয়। সেখান থেকে তাকে তুলে নিয়ে খটখটিয়া এলাকায় তরু কাউন্সিলর এর বাড়ির একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রেখে শেফালীকে বিয়ে করতে বলে। রাজি না হওয়ায় তারা পাভেলকে মারপিট ও জখম করে ৩ লাখ ১ হাজার ১০১ টাকা দেনমোহর ধার্য করে রেজিষ্ট্রি কাবিন নামায় স্বাক্ষর নেয়। এবং একই সাথে দুটি নন জুডিশিয়াল ফাাঁকা স্টাম্প এবং অন্যান্য কাগজপত্রে একাধিক স্বাক্ষর নেয়। এরপরে সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে আমার ছোট ভাইকে ছাড়িয়ে দেয়। সে বাসায় এসে ঘটনার বিবরণ দিলে ওই দিনই এভিডেভিট মুলে শেফালিকে তালাক দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মাধ্যমে মোছা: শেফালী বেগম, মেয়র সিটি করপোরেশনকে প্রেরণ করেন। প্রার্থী প্রাপ্তি স্বিকার করেন। এতে শেফালী বেগম এবং তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং আমার ভাইসহ আমাদের পরিবারের লোকজনের ক্ষতি করার চেষ্টা কর। ১৭ আগষ্ট দুপুর আনুমানিক ১:০০ টায় নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে কেরামতিয়া মসজিদে নামাজ আদায় করার জন্য বের হলে পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওৎ পেতে থাকা শেফালী বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস দুলালী বেগম, মো: জাহিদ হাসান, মো: সাগর মিয়া, মো: লিমন মিয়া, মো: সোহেল মিয়া ও আরো ৬/৭ জন অজ্ঞাত নামা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসি আমার ভাই খালিদ বিন ওয়ালিদকে আটক কওে চোখে গামছা বেধে মাইক্রোবাসে তুলে বর্তমান ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: মোখলেছুর রহমান তরু’র খটখটিয়ার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আবারও বিবাহ দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমার ভাই পাভেল কোথাও সাক্ষর না করায় সাগর, লিমন সোহেলসহ অন্যান্য ভারাটিয়া সন্ত্রাসিরা তাকে প্রচন্ড মারধর করে। আশপাশের লোকজন তা শুনতে পেয়ে আমার মা মনোয়ারা বগম কোতয়ালী থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করে অফিসার ইনচার্জকে জানায়। তিনি তৎক্ষনাত এস আই সুদীপ্ত শাহিনকে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যার নির্দেশ দেন।
এরপর এসআই শাহিন ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই পাভেল মারা যেতে পারে এ জন্য তাকে ধাপ স্টাফ কোয়াটার মাঠে ফেলে রেখে চলে যায় । পরে পুলিশের সহযোগিতায় রংপুর িেমডকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসা করা হয়। এরপর ২১-৮-১৮ ইং তারিখ একটি এজাহর দিলেও পুলিশ অজ্ঞাত কারণে মামলা গ্রহন করেনি। উল্টো ৩-৯-১৮ ইং তারিখে পুলিশ শেফালীর পক্ষে যৌতুক নির্যাতনের মামলা গ্রহন করে। যা মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৯-১০-১৮ ইং তারিখে শেফালী একটি সংবাদ সম্মেলন করে। তাতে তারা ‘আমার ভাই পাভেল, আমি এবং আমার মাকে গ্রেফতার এবং নির্যাতন কারি’ হিসেবে উল্লেখ করে। যেখানে বিবাহই হয়নি সেখানে সংসার বা নির্যাতন করার প্রশ্ন আসে কী করে। কারণ যেদিনই তারা জোরপুর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেয় সেই দিনই এফিডেফিট করে তালাক প্রদান করা হয়। সুতরাং সংসার করা এবং নির্যাতন করার প্রশ্নই ওঠে না। আমি এবং আমরা ওই সংবাদের তীব্র নিন্দা জানাই। এই জন্য যে, সংবাদ সম্মেলনে তারা উল্লেখ করেছে, আমার ভাই পাভেল শেফালি বেগমের কাছে ৭৫,০০০ হাজার টাকা বিভিন্ন ভাবে নিয়েছে। অথচ শেফালীর পক্ষের আইনজীবে পাভেলকে দেয়া লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করেছে যে পাভেল শেফালীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে। এতেই বোঝা যায় তারা মিথ্যা চক্রান্ত করে যখন যেভাবে পাচ্ছে আমাদের পরিবারকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন এবং ধবংস করার চেষ্টা করছে। আমরা শেফালি ও তাদের চক্রের মিথ্যা অভিযোগ থেকে পরিত্রাণ চাই। সমাজে ভালোভাবে বাঁচতে চাই। আমার পিতা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে অবসর প্রাপ্ত এস.ও। বর্তমানে তিনি প্যারালাইসিস অবস্থায় পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছেন। বিছানায় শয্যাশায়ি হয়ে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমার মায়ের বয়স প্রায় ৬০ বছর। কিন্তু হাইপারটেনশন ও কোমরের স্পাইনাল কর্ড ছিন্ন ও হাড় ক্ষয়ের রোগ এবং ডায়াবেটিস রোগী। আমার এই বৃদ্ধ মা-বাবা যারা আমাদের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারে এবং বাথরুম পর্যন্ত যাইতে পারে না। আমার সেই অসুস্থ্য মাকেও তারা এই মিথ্যা মামলার আসামী করে। আমার বৃদ্ধ অসুস্থ মাকেও পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। আমরা অসহায় মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে মাহফুজার রহমান বিপ্লবসহ তার পরিবারের সদস্যরা।