মঙ্গলবার জাতীয় অথনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়।
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য উজ্বল বিকাশ দত্তের মতে, এ সেতুটি নির্মিত হলে প্রকল্প এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজারজাতকরণ, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, কৃষি ও অকৃষি খাতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং দারিদ্র বিমোচনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে তাই এ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পটির বিষয়ে সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এর সাথে ঋণ চুক্তি এখনো স্বাক্ষরিত হয়নি। একনেকে অনুমোদনের পরই চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তাছাড়া প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির সুবিধার্তে প্রদর্শিত প্রকল্পের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত রয়েছে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রীষ্মকালে খরা, বর্ষাকালে ঘন ঘন বন্যা ও নদী ভাঙ্গনসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলা দেশের সবচেয়ে দারিদ্র পীড়িত ও মঙ্গা প্রবণ এলাকা। যোগাযোগ ব্যাবস্থার অপ্রতুলতা দারিদ্রের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কলকারখানা না থাকায় বেকারত্বের হারও প্রকট। এ জেলা দুটি তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী দ্বারা প্রভাবিত এবং তিস্তা নদীর মাধ্যমে এ দুটি জেলা বিচ্ছিন্ন। এ দুটি জেলার জনগণকে প্রতিনিয়ত নানা কাজে নদী পারাপার করতে হচ্ছে। সেতুটি নির্মিত হলে আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে সুন্দগঞ্জ কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে ওঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রস্তাবিত সেতুর হাইড্রোলজিক্যাল এবং মরফোলজিক্যাল সমীক্ষার আলোকে এক হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের জন্য সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট এর অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সেতুটি নির্মিত হলে গাইবান্দা জেলার সুন্দগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হবে। এতে করে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, উলিপুর, রাজারহাট ও সদর উপজেলার প্রায় দশ লাখ মানুষ রাজধানী ঢাকা শহর হতে বিভাগীয় শহর রংপুর না ঘুরে অর্থাৎ প্রায় ৮০ কিলোমিটার পথ না ঘুরে সরাসরি যাতায়াত করতে পারবে।
প্রকল্পের আওতায় মূল কার্যক্রম হচ্ছে এক হাজার ৪৯০ মিটার মূল সেতু নির্মাণ, ৮৮ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার এ্যাকসেস সড়ক নির্মাণ, ২ কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ, অ্যাপ্রোচ সড়কে ৯৫ মিটার সেতু নির্মাণ, এ্যাকসেস সড়কে ৫৪৪ দশমিক ৮৫ মিটার ব্রীজ/কার্লভার্ট নির্মাণ এবং ৬ হাজার ৩শ মিটার নদী শাসন। সেতুটি বাস্তবায়নে বছরভিত্তিক অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে চলতি অর্থবছরের এডিপিতে ১০ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৩০ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৪০ কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৫০ কোটি টাকা।