স্টাফ রিপোর্টার: রংপুরের ঐতিহ্যবাহী কেডি ক্যানেলের নাম বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে। একটি মহল এই ক্যানেলকে ‘আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানেল’ হিসেবে পরিচিত করতে তৎপরতা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে মাহিগঞ্জ-জাহাজ কোম্পানি সড়কের খাসবাগ এলাকার দোকানপাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডেও আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানেল লেখা দেখাগেছে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, রংপুর শহরের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য ১৮৭১ সালে বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ ও বারিন ঘোষের পিতা রংপুর ডিসট্রিক্ট সিভিল সার্জন কৃষ্ণ ধন ঘোষ (কেডি ঘোষ) এর প্রচেষ্টায় নগরীর উত্তর দিয়ে খাল খনন করা হয়। যেটির নাম করণ করা হয়েছিল কেডি ক্যানেল। ১৯৪০ সালে তাজহাট রাজা গোপাল লাল রায় এলাকাবাসীর চলাচলের জন্য কেডি ক্যানেলের উপর ইট আর চুন-সুঁড়কি দিয়ে একটি সেতু নির্মাণ করেন। নির্মিত সেতুটি রংপুর পৌরসভার তৎকালীন কাউন্সিলর আঙ্গুর মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন হওয়ায় সেটি ‘আঙ্গর মিয়া সেতু’ নামে পরিচিতি লাভ করে। সেতুটি আঙ্গুর মিয়ার নামে হলেও কেডি ক্যানেলের নাম কখনও পরিবর্তন করা হয়নি কিন্তু একটি মহল এই ক্যানেলটিকেই আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানেল হিসেবে পরিচিত করতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয়গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখে রংপুর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক ব্রীজ উদ্বোধনের নামফলকে ‘আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানেল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এই ক্যানেলের উপর জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি এবং বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে নির্মিতব্য ২৫ মিটার ব্রীজ নির্মাণ কাজের সাইনবোর্ডেও লেখা হয় ‘আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানেল’।
কোন প্রেক্ষাপটে ঐতিহাসিক কেডি ক্যানেলের নাম সিটি কর্পোরেশন বিকৃত করলো তা নিয়ে জনমনে নানা ধরণের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু এ প্রসঙ্গে বলেন, “ঐতিহ্যবাহী কেডি ক্যানেলের নাম বিকৃত করায় আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে যেসব স্থানে ‘আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানেল’ লেখা হচ্ছে সেগুলো অবিলম্বে অপসারণের জোড় দাবী জানাচ্ছি। ”
সংশ্লিষ্ট এলাকার (৩০ নং ওয়ার্ড) কাউন্সিলর মোঃ মালেক নিয়াজ (আরজু) উত্তরবাংলাকে বলেন,“ ‘আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানেল’ নামে কোন ক্যানেল নেই। তবে যে ব্রিজটি নির্মিত হচ্ছে সেটার নাম ‘আঙ্গর মিয়া সেতু’।”
এ বিষয়ে জানতে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার মোবাইলে কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।